ঢাকা | নভেম্বর ২২, ২০২৪ - ৯:২৭ পূর্বাহ্ন

এতোদিন স্বাধীন দেশে থাকলেও বাস্তবে স্বাধীন ছিলাম না: চরমোনাই পীর

  • আপডেট: Friday, August 30, 2024 - 4:04 pm

জাগো জনতা অনলাইন।। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর চরমোনাই বলেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার বয়স ৫৩ বছর চলছে। এতোদিনে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। এরা দেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছে। ১৫ বছরে রাস্তায় নামলে খুনের ঘটনা ছিলো ঘরে থাকলে ঘুম হতে হতো। এতদিনে আমরা স্বাধীন দেশে বসবাস করেছি কিন্তু বাস্তবিক অর্থে স্বাধীন ছিলাম না।

আজ শুক্রবার (৩০ আগস্ট) শাহবাগে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র সমাবেশ এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, আগামী দিনে এই স্বাধীন বাংলাদেশকে যাতে আমরা পরাধীন না করি। ৫ আগষ্টের পরে একটি মহল পতিত স্বৈরাচারের মতো চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব শুরু করেছে। ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ৫ আগষ্ট থেকে সংখ্যালঘুদের মন্দির, গির্জা, প্যাগডা পাহারা দেয়া এবং রাস্তায় ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করার জন্য আমি ধন্যবাদ জানাই।

চরমোনাই পীর বলেন, বন্যা দুর্গতদের সহায়তায় যে ভুৃমিকা পালন করেছে সে জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানাচ্ছি। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রত্যেকে মাঠে দায়িত্ব পালন করেছে। অন্তবর্তী সরকার যদি ইসলাম ও স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্ব বিরোধী কোন পদক্ষেপ নেয় তবে জনগণ তা সহ্য করবে না। আপনারা ইসলামকে গুরুত্ব দিবেন না, তা হবে না।

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় সভাপতি নূরুল বশর আজিজী’র সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল মুনতাসীর আহমাদ এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত ছাত্র সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ,যুগ্ম মহাসচিব মুহাম্মাদ আমিনুল ইসলাম, ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক মুফতী সৈয়দ এছহাক মুহাম্মদ আবুল খায়ের, কেন্দ্রীয় প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ুম, বরকতুল্লাহ লতিফ, ইসলামী যুব আন্দোলনের সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ নেছার উদ্দীন, জাতীয় শিক্ষক ফোরাম সভাপতি অধ্যাপক নাছির উদ্দীন।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই বলেন, দীর্ঘ ৮০০ বছর পর্যন্ত ভারত উপমহাদেশ শাসন করেছে মুসলমান। কিছু মুনাফেকের কারনে ২০০ বছর শাসন করেছে বৃটিশ। এরপরে আমরা স্বাধীন হয়েছিলাম কিন্তু ভারত ভালো ব্যাবহার না করার কারণে পাকিস্তান হয়েছিল। পাকিস্তান হওয়ার পরেও আশা আকাঙ্খা পূরণ না হওয়ায় ৭১ এ স্বাধীন স্বার্বভৌম বাংলাদেশ হয়েছিল। কিন্তু স্বাধীন দেশে ভারতকে বন্ধু ভেবে লেন্দুক দর্জির মতো শেখ হাসিনাকে মুখ্যমন্ত্রী বানাতে চেয়েছিল কিন্তু পারে নি। ভারত ফারাক্কা বাঁধ দিয়েছে। তিস্তার সমস্যা সমাধান করেনি। ভারত প্রত্যেক বছর বাংলাদেশের মানুষকে পানি দিয়ে ডুবিয়ে দেয়। বাংলাদেশের ৯২% মানুষকে নাস্তিক বানানোর ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। বর্তমান সরকার আলেম ওলামা ও জ্ঞানীদের দিয়ে নতুন শিক্ষা কমিশন করতে হবে। ৯২% মানুষের চিন্তা চেতনা বাদ দিয়ে কোন সিলেবাস হতে পারে না। মুসলিমদের চিন্তাচেতনা বিরোধী কোন সিলেবাস চলবেননা। ইসলামী মৌলবাদ জিন্দাবাদ, জিন্দাবাদ। আমি ইসলামী মূল্যবোধকে বাদ দিয়ে কোন রাজনীতি করবো না। ইসলামী মৌলবাদকে বাদ দিয়ে কোন রাজনীতি হবে না। আগামীর বাংলাদেশ হবে বৈষম্য বিরোধী বাংলাদেশ। এখানে সকলের অধিকার থাকবে।এবাংলাদেশ সকলের বাংলাদেশ। শেখ হাসিনার পুত্র পদ্মাসেতু দেখতে গিয়ে দেড় ঘন্টা সড়ক বন্ধ থাকবে তা আমরা চাইনা। ভেদাভেদ সৃষ্টির বাংলাদেশ আমরা চাইনা। কেউ থাকবে ১০তলায়, কেউ খাবে কেউ খাবে সে বাংলাদেশ দেখতে চাইনা। আমরা চাই বাংলাদেশের প্রত্যেকটি নাগরিক সমান সুযোগ থাকতে হবে। জামায়াতে ইসলামীর সাথে ওলামায়ে কেরামের সাথে যে দ্বন্দ্ব আছে তা দূর করুন। জামায়াতে ইসলামীর সাথে হক্কানী ওলামায়ে কেরামের সাথে যে মতানৈক্য আছে তা দূর করে টেকসই ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, ছাত্রদের বুকের তাজা রক্তের উপর দাঁড়িয়ে কেউ কেউ পকেট ভারী করতে উঠে পড়ে লেগেছে। বিদেশী কোন অপশক্তি এ ভুখন্ডের দিকে নজর দিতে চাইলে তাদের ষড়যন্ত্র নস্যাত করে দিতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যতদিন মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে ততদিন আমরা তাদের পাশে থাকবো। খুন ঘুমের বিচার চাই। পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনতে হবে। ইসলাম বিরোধী শিক্ষা কমিশন বাতিল করতে হবে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক মুফতী সৈয়দ এছহাক মুহাম্মদ আবুল খায়ের বলেন, আমরা বাংলাদেশ ভারতের পেটের মধ্যে না বরং ভারত আমাদের পেটের মধ্যে। ভারতের চারপাশে যারা আছে তারা কেউ ভারতের বন্ধু নয়। পৃথিবীর ইতিহাসে নিকৃষ্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে যায়গা দিয়ে ভারত প্রমান করেছে তারা আমাদের বন্ধু না। অথচ বিশ্বের অন্যকোন দেশ এই খুনি স্বৈরাচারীকে স্থান দেয়নি। এই স্বৈরাচার ও খুনিকে জায়গা দিয়ে বন্ধুত্ব করা সম্ভব নয়।