নিম্ন আয়ের মানুষের ঈদ যাত্রার বাহন ট্রাক- পিকআপ

ইউসুফ আলী খান।। আর মাত্র একদিন পর ঈদুল আজহা। ঈদুল আজহা উপলক্ষে গতকাল থেকেই ছুটি ঘোষণা করেছে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার অধিকাংশ পোশাক কারখানা। ঈদের আনন্দ পরিবারের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে ছুটি পেয়েই ঝুঁকি নিয়ে ট্রাক-পিকআপে করে বাড়ি ফিরছেন শ্রমিকসহ সাধারণ মানুষ।
এমন যাত্রায় ট্রাক- পিকাআপে মানুষ পরিবহনের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও মানবিক কারণে তাদের যেতে দিচ্ছে পুলিশ—এমনটাই দাবি চালকদের।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) বেলা দুইটার দিকে আশুলিয়ার নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাইপাইল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দেখা যায়, সড়কের পাশে সারি করে দাঁড়ানো বাসের সাথে ট্রাক-পিকআপে যাত্রী তুলছেন চালকরা।
কম ভাড়ার কারণে ঝুঁকি উপেক্ষা করে অনেকেই নির্দ্বিধায় এসব ট্রাক পিকআপে উঠছেন যাত্রীরা।পিকআপে করে সিরাজগঞ্জ যাচ্ছিলেন পোশাক শ্রমিক সাদিয়া আক্তার রত্না।
তিনি বলেন, বাসস্ট্যান্ডে গাড়ীর জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও বাস পাইনি। দু-একটি বাস পেলেও তাতে সিট ছিল নাই তাছাড়া ভাড়া বেশি। তাই বাধ্য হয়েই ঝুঁকি নিয়ে পিকআপে উঠেছি। কারণ বাড়িতেও তো যেতে হবে। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে না পারলে ঈদের আনন্দই বৃথা।
অপর দিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যাত্রী বলেন, আমরা নিম্নআয়ের মানুষ। বর্তমানে নিত্য প্রয়োজনী পণ্য সামগ্রীর যে দাম তাতে করে হাজার টাকা খরচ করে বাড়ী গেলে ছেলেমেয়েদের জামাকাপড় কিনে দেব কীভাবে? ঈদে ভালোমন্দ খাওয়াবো কেমন করে? তাই যতটা সম্ভব খরচ বাঁচিয়ে বাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করছি। ছেলে মেয়েসহ পরিবারের সবার জন্য কিছু কিনতো হবে। তাই বর্ষার দিন হলেও টাকা বাঁচিয়ে বাধ্য হয়েই ট্রাক-পিকআপে যাচ্ছি। জানি এতে ঝুঁকি আছে, কিন্তু কিছু করার নেই। দুই টাকা বাঁচলে পরিবারকে ভালো কিছু খাওয়াতে পারব।
এদিকে ট্রাক-পিকআপ চালকরা বলছেন, আমরা বাইপাইল থেকে যাত্রী তুলে সিরাজগঞ্জ, সর্বোচ্চ বগুড়া পর্যন্ত যাই। জনপ্রতি মাত্র ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা ভাড়া নেই। বাসে গেলে তাদের দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে। তাই যাত্রীরা বুঝেশুনে কম টাকায় ট্রাক পিকআপে উঠছে। আমরাও চেষ্টা করছি কম টাকায় নিরাপদে তাদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে। আমরা না থাকলে এই লোকেরা বাড়ি ফিরবে কীভাবে? পুলিশ কিছু বলেনা জানতে চাইলে তারা বলেন, পুলিশ তো তাদের দায়িত্ব পালন করবেই। কিন্তু রাস্তায় যাত্রীর তুলনায় গাড়ী কম থাকায় যাত্রীরা ট্রাক পিক-আপে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
এ বিষয়ে সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালেহ আহমেদ বলেন, মহাসড়কে যানযট যাতে না হয় সেজন্য ট্রাফিক পুলিশ সহ ঢাকা জেলা পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। সড়কে যেন যানজট না হয় সে বিষয়েই আমরা বেশি সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে কাজ করে যাচ্ছি। তবে ট্রাক-পিকআপে যাত্রী পরিবহনের বিষয়টি চোখে পড়লে অবশ্যই আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিবো।