বাবাকে খুন করে ‘৯৯৯’-এ কল দিয়ে মেয়ের আত্মসমর্পণ

ইউসুফ আলী খান।। ঢাকার অদুরে সাভারে বাবাকে খুন করে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ‘৯৯৯’-এ কল দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন মেয়ে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) সাভার পৌরসভার মজিদপুর কাঠালবাগান এলাকায় আব্দুল কাদের এর বাড়ির ৫ম তলায় ভোর ৪ টায় এ ঘটনা ঘটে।
জাতীয় জরুরি সেবা নাম্বার ৯৯৯ কল করে নিহতের মেয়ে জানান, আমি আমার বাবাকে হত্যা করেছি, আপনারা আমাকে ধরে নিয়ে যান।
নিহত ব্যক্তির নাম আব্দুস সাত্তার (৫৬)। তিনি নাটোরের সিংড়া থানার ভগা গ্রামের বাসিন্দা।
এসময় মেয়েটি জানান, গত ২০২২ সালে সিংড়া থানায় প্রথম আমি পিতা দ্বারা ধর্ষিত হয়ে পিতার বিরুদ্ধে সিংড়া থানায় একটি ধর্ষণের মামলা করেছিলাম। সে মামলায় আমার পিতাকে আটক করা হয় এবং তিনি জেলে যান। পরে জামিনে বের হয়ে তার ভুল বুঝতে পেরে আমার কাছে ক্ষমা চায়। আমিও আমার পিতাকে ক্ষমা করে দেই। পরবর্তীতে আমি আবার আমার পিতার সাথে থাকতে শুরু করি। কিন্তু আমার পিতার কুদৃষ্টি আবার আমার উপর পড়ে। প্রতিনিয়ত তিনি আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। তার অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে গেলে আমি আমার বাবাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করি। পরবর্তীতে আমি ভাতের সাথে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে খাইয়ে দেই এবং ভোর রাতে তাকে ছুড়ি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করি।
পুলিশ জানায় আসামি জান্নাত ২০২২ সালে তার পিতার বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলা করে। সেই মামলায় নিহত পিতা দীর্ঘদিন জেলখেটে সম্প্রতি বের হয়ে মেয়ের সঙ্গে ধর্ষণ মামলার মীমাংসা করে আবার বসবাস শুরু করে সাভারে। কিন্তু বাবা আবারও তাকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করে। একইসঙ্গে সেই ধর্ষণ মলার সূত্র ধরেই বাবার সঙ্গে মেয়ে জান্নাতের বনি-বনা হচ্ছিল না।
সাভার মডেল থানার ডিউটি অফিসার আব্দুর রশিদ জানান, ভোররাত ৪টার দিকে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ কল করে এক মেয়ে জানান, তার বাবাকে তিনি কুপিয়ে হত্যা করেছেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত আব্দুর সাত্তারের লাশ উদ্ধার করে এবং মেয়েকে আটক করে।
সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক ইমরান হোসেন বলেন, ৯৯৯ কল পেয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে এবং নিহতের মেয়ে জান্নাতকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় সাভার মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সাভার মডেল থানার ওসি জুয়েল মিয়া জানান, পিতার বিরুদ্ধে মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। আদালতে মামলাটি চলমান রয়েছে। এর জের ধরেই মেয়েটি এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে। তাকে আটক করে জিজ্ঞেসাবাদ করা হচ্ছে।