মানিকছড়িতে অবৈধভাবে পাহাড় কাটা ও বালু উত্তোলনের দায়ে জেল-জরিমানা

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি : রাতের আঁধারে অবৈধভাবে পাহাড় কাটা ও বালু উত্তোলনের দায়ে পৃথক অভিযানে খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে মো. আলমগীর হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে পৃথক অভিযানে ১ লাখ টাকা জরিমানা, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনে দুটি মামলা ও একটি ফেলুডার জব্দ করা হয়েছে। উক্ত অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ সাফকাত আলী।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার বড়বিল এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এর ১৫(১) ধারায় মো. খোরশেদ আলম নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে ১ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড আদায় করা হয়েছে। দুপুরে উপজেলার ডাইনছড়ি এলাকায় রাতের আঁধারে অবৈধভাবে পাহাড় কাটার অপরাধে মো. আলমগীর হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। এদিন দুপুরে উপজেলার মরাডলু স্কুল টিলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে পরিবেশ আইনে মো. রাসেল ও মো. নুর ইসলামের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়ে।
অন্যদিকে গতকাল বুধবার দুপুরে উপজেলার গাড়িটানা এলাকায় অবৈধভাবে পাহাড় কাটার দায়ে মো. আবু তাহের ও জানে আলমের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয় এবং ঘটনাস্থল থেকে একটি ফেলুডার জব্দ করা হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ সাফকাত আলী জানান, বেশ কিছুদিন ধরে প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে রাতের আধারে অবৈধভাবে পাহাড় কাটা ও বালু উত্তোলনকারী চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তাদের এসব অবৈধ কার্যক্রম বন্ধে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পৃথক পৃথক অভিযান পরিচালনা করে জড়িত এক ব্যক্তিকে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা পরিমানা, পরিবেশ আইনে দুটি মামলা ও একটি ফেলুডার জব্দ করা হয়েছে। রাতের আঁধারে অবৈধভাবে পাহাড় কাটা ও বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের নিয়মিত অভিযান অব্যহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এছাড়াও, তিনি আরও বলেন, উপজেলা প্রশাসন আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এবং এই ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখবে।
মানিকছড়িতে এ ধরনের অভিযান প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি সজাগ বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে। তাদের উদ্দেশ্য হলো, পরিবেশের ক্ষতি করা এবং সরকারি নিয়মনীতি অমান্যকারী দোষীদের শাস্তি দেয়া।
এমন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রশাসন যে পদক্ষেপ নেবে, তা স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করবে বলে আশা করা হচ্ছে। স্থানীয়রা বলেন, পাহাড় কাটা এবং প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংস করা রোধে প্রশাসনের এ ধরনের অভিযান খুবই জরুরি।
এদিকে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এই অভিযান কেবল মানিকছড়িতে সীমিত নয়, বরং পুরো খাগড়াছড়ি জেলা জুড়ে প্রয়োগ করার জন্য আরও উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এছাড়া, স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো এই অভিযানে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং ভবিষ্যতে আরও কঠোর আইন প্রয়োগের দাবি জানিয়েছেন।
প্রশাসন আশা করছে, এই ধরনের পদক্ষেপের ফলে পাহাড় কাটার মতো অপরাধগুলি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে এবং পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করা যাবে।