ঢাকা | ডিসেম্বর ৯, ২০২৫ - ৯:৪৩ অপরাহ্ন

শিরোনাম

টাকার বিনিময়ে কারাগারে যুবক, বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রকৃত আসামি

  • আপডেট: Tuesday, December 9, 2025 - 7:49 pm

গাজীপুর প্রতিনিধি।। ‘আয়নাবাজি’ চলচ্চিত্রের মূল চরিত্র শরাফত করিম আয়না (চঞ্চল চৌধুরী) টাকার বিনিময়ে অন্যের হয়ে জেল খাটেন। এমন ঘটনা শুধু সিনেমায় নয়, বাস্তবে ঘটেছে গাজীপুরেও। সেখানে মাত্র ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে ঘটেছে এমন ঘটনা। বন বিভাগের করা এক মামলার আসামি সাত্তার মিয়া বাইরে অবাধে ঘুরে বেড়ালেও তাঁর পরিবর্তে কারাগারে গেছেন সাইফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি।

প্রকৃত আসামি সাত্তার মিয়ার (৪৫) বাড়ি কালিয়াকৈর উপজেলার মোথাজুরী তালচালা গ্রামে। তাঁর পরিবর্তে কারাগারে যাওয়া সাইফুল ইসলামও (৩০) একই গ্রামের বাসিন্দা।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার ফুলবাড়িয়া রেঞ্জ এলাকার বন থেকে চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর সরকারি গাছ কাটার সময় হাতেনাতে কয়েকজনকে আটক করেন বন কর্মকর্তারা। এ সময় বেশ কয়েকজন পালিয়ে যায়। ওই ঘটনায় পর জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করে বন বিভাগ। এ ঘটনার তিন মাস পর গত ৭ ডিসেম্বর আদালতে হাজিরা দেন প্রধান আসামি সাত্তার মিয়া। অভিযোগ আমলে নিয়ে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, যে সাত্তারের কারাগারে থাকার কথা তিনি নিজ এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাঁর পরিবর্ততে জেল খাটছেন আরেকজন।

কালিয়াকৈর উপজেলার ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের তালচালা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে নেই সাত্তার। মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ব্যক্তিগত কাজে মাওনায় অবস্থান করছেন। যদিও আদালতের নথি বলছে, এই মুহূর্তে তাঁর কারাগারে থাকার কথা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গাজীপুর জেলা কারাগারে আসামি হিসেবে যিনি বন্দী আছেন, কারাগারের নথিতেও তাঁর নাম সাত্তার লেখা আছে। কিন্তু ছবি মেলাতে গেলেই ধরা পড়ে যায় ‘আয়নাবাজি’। জেলে থাকা ব্যক্তির প্রকৃত পরিচয় সাইফুল ইসলাম। তিনি সাত্তারের হয়ে ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে কারাগারে যান।

সাত্তারের পরিচয়ে কারাগারে থাকা সাইফুলের বাবা রহিম বাদশা বলেন, ‘জামিন পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাসে ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে সাত্তারের পরিবর্তে হাজিরা দিতে গেছিল সাইফুল।’

গাজীপুর জেলা কারাগারের জেল সুপার মোহাম্মদ রফিকুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ‘আসামি এন্ট্রি করার সময় সে তাঁর নাম সাত্তার বলেছে তাই সন্দেহ করিনি। পরে জানার পর বায়োমেট্রিক পরীক্ষা করে জানতে পারি, সে আসলে সাত্তার নয়; সাইফুল ইসলাম। বিষয়টি আমরা আদালতে চিঠি দিয়ে অবগত করেছি।’