ঢাকা | জুন ২৬, ২০২৫ - ১০:৪৯ অপরাহ্ন

শিরোনাম

প্রেমিকের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা, স্বামী তালাক দেয়ার ২ ঘণ্টা পর বিয়ে

  • আপডেট: Thursday, June 26, 2025 - 5:55 am

জাগো জনতা অনলাইন।। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় স্বামী তালাক দেওয়ার ২ ঘণ্টা পর প্রেমিকের সঙ্গে ওই নারীর বিয়ে হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২৫ জুন) উপজেলার দক্ষিণ হিরন গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, গত তিন বছর আগে হিরন গ্রামের সিদ্দিক মোল্লার ছেলে খায়রুল মোল্লার সঙ্গে পার্শবর্তী চিতশী গ্রামের কেরামত আলী শেখের মেয়ে জেসমিন বেগমের (২৫) বিয়ে হয়। বিয়ের দেড় বছর পর জেসমিন বেগম একটি পুত্র সন্তানের মা হন।

বিয়ের পর থেকেই জেসমিন বেগমের স্বামী খায়রুল মোল্লা জীবিকার প্রয়োজনে মাঝে মাঝেই বাড়ির বাহিরে থাকত। এ সুযোগে জেসমিন বেগমের সঙ্গে একই গ্রামের আক্তার শেখের ছেলে হাসিব শেখের (২৫) পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে উঠে।

এই পরকীয়ার সূত্র ধরে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে হাসিব শেখ গোপনে জেসমিন বেগমের ঘরে এসে অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়।

এ সময় জেসমিন বেগমের বাড়ির লোক টের পেয়ে আপত্তিকর অবস্থায় দুজনকে আটক করে ঘরে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখেন। এ ঘটনা নিয়ে বুধবার বিকালে খায়রুলের বাড়িতে এক সালিশ বৈঠক হয়।

সালিশে এলাকার জন প্রতিনিধি, রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিবর্গের চাপের মুখে খায়রুল তার স্ত্রী জেসমিন বেগমকে তালাক দিতে বাধ্য হন। এই তালাকের ২ ঘণ্টা পর ঘাঘর বাজারে বসে ৪ লাখ টাকা দেনমোহর নির্ধারণ করে হাসিব শেখ ও জেসমিন বেগমের বিয়ে হয়।

এই বিয়েতে খুশি হয়েছেন বলে জানিয়েছেন হাসিব শেখ ও জেসমিন বেগম। তারা দুজনে বিয়ের সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য সকলের কাছে দোয়া চান।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খান চমন-ই-এলাহী বলেন, এভাবে তালাক দেওয়ার ২ ঘণ্টা পর বিয়ে দেওয়া আমার জানা মতে এটি শরিয়ত ও আইন সম্মত হয়নি। এ ধরনের সালিশ দরবার যারা করেন তাদেরকে আইনের আওতায় আনা উচিত।

উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কোটালীপাড়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক রতন সেন কংকন বলেন, নারী শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ, খুনসহ বিভিন্ন ধরনের সালিশ অযোগ্য অপরাধও এখন কোটালীপাড়ায় সালিশ দরবারের মধ্যে ফয়সালা হচ্ছে। এ সব ঘটনায় ভুক্তভোগী সঠিক বিচার পায় না বলে আমি মনে করি। তাই এ ধরনের সালিশ অযোগ্য অপরাধ যে সকল জনপ্রতিনিধি বা রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ফয়সালা করে থাকেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

কোটালীপাড়া থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ থেকে অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।