জামায়াতের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের আবেদনে পক্ষ হয়ে যুক্ত হতে চান ৪২ বিশিষ্টজন
জাগো জনতা অনলাইনঃ হাইকোর্ট বিভাগের রায়ে নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণার বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, রাজনৈতিক সভা, জনসভা বা মিছিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে করা আবেদনে পক্ষভুক্ত হতে চেয়েছেন ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিক। এরা শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা, লেখক, শিক্ষাবিদ ও বিশিষ্টজন।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মামলার আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর।
জামায়াতের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিটকারী মাওলানা সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ তিন জন হাইকোর্ট বিভাগের রায়ে নিবন্ধন অবৈধ করার বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, রাজনৈতিক সভা, জনসভা বা মিছিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং ১০ বছর পর রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করে নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করায় আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে জুন মাসে পৃথক আবেদন করেন।
এমন আবেদন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ৩১ জুলাই দিন রেখেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। গত ২৬ জুন আপিল বিভাগের অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি মো.আবু জাফর সিদ্দিকী এ আদেশ দেন।
৩১ জুলাই ওই আবেদনের শুনানির দিন সামনে রেখে নতুন করে আরও ৪২ জন পক্ষভুক্ত হতে আবেদন করেছেন।
এই ৪২ জন হলেন— শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আলীম চৌধুরীর স্ত্রী শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী, ক্যাপ্টেন (অবসরপ্রাপ্ত) শাহাব উদ্দিন আহমেদ বীর উত্তম, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আজহারুল হকের স্ত্রী সৈয়দা সালমা হক, শাহরিয়ার কবির, হোসেনের নেতৃত্বাধীন দ্বৈত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠানো হয়। ১০ মার্চ সাংবিধানিক ও আইনের প্রশ্ন জড়িত থাকায় বৃহত্তর বেঞ্চে শুনানির প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে আবেদনটি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানোর আদেশ দেন দ্বৈত বেঞ্চ। ওইদিন প্রধান বিচারপতি তিন বিচারপতির সমন্বয়ে বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করে দেন।
২০১৩ সালের ১২ জুন ওই রুলের শুনানি শেষ হলে যেকোনও দিন রায় দেবেন বলে জানিয়ে অপেক্ষমান (সিএভি) রাখেন হাইকোর্টের বৃহত্তর (লার্জার) বেঞ্চ। পরে জামায়াতকে দেওয়া নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন ২০১৩ সালের ১ আগস্ট সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে অবৈধ বলে রায় দেন বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল-হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তর (লার্জার) বেঞ্চ।
সে সময় সংক্ষিপ্ত রায়ে আদালত বলেন, এ নিবন্ধন দেওয়া আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত। একইসঙ্গে আদালত জামায়াতকে আপিল করারও অনুমোদন দিয়ে দেন। তবে এ রায়ের স্থগিতাদেশ চেয়ে জামায়াতের করা আবেদন একই বছরের ৫ আগস্ট খারিজ করে দেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী। পরে একই বছরের ২ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে জামায়াতে ইসলামী আপিল করে। ওই আপিল শুনানিতে উদ্যোগ নেন রিটকারী পক্ষ। সে অনুসারে আপিলটি চলতি বছরের (২০২৩) ৩১ জানুয়ারি মঙ্গলবার কার্যতালিকায় ওঠে।
এরপর ৩১ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে দেওয়া নিবন্ধন অবৈধ বলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের সার সংক্ষেপ প্রস্তুত করতে চূড়ান্তভাবে দুই মাস সময় দেন।