পার্বত্য চট্টগ্রামের সার্বভৌমত্ব ও দুর্গম এলাকার মানুষের অধিকার নিশ্চিতের আহ্বান
নিজস্ব প্রতিবেদক।
পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সামগ্রিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে দুর্গম এলাকার মানুষের মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নে সরকারের কাছে বিশেষ দাবি জানিয়েছে ‘সিএইচটি সম্প্রীতি জোট’। সংগঠনটি মনে করে, পাহাড়ে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সকল জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় করার পাশাপাশি দুর্গম অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়ন অত্যন্ত জরুরি।
শনিবার এক বিবৃতিতে সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পূর্বে ঘোষিত ৬ দফা দাবির পাশাপাশি পার্বত্য বান্দরবানের দুর্গম এলাকার জনগণের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, যোগাযোগ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারকে বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বান্দরবানের অনেক দুর্গম এলাকায় এখনো কোনো হাসপাতাল বা পর্যাপ্ত চিকিৎসা সুবিধা নেই। এসব এলাকায় কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন ও মোবাইল মেডিকেল টিমের মাধ্যমে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি পাহাড়ি মা ও শিশুদের জন্য উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।
শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে দুর্গম পাড়াগুলোতে প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন এবং স্থানীয় ভাষায় পাঠদানের ব্যবস্থা চালুর দাবি জানায় সংগঠনটি। এছাড়া মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য উপজেলা সদরে আবাসিক হোস্টেলের সুবিধা বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়া হয়।
পাহাড়ি অঞ্চলে তীব্র পানির সংকট নিরসনে রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং পদ্ধতি চালু এবং গভীর নলকূপ স্থাপনের মাধ্যমে সুপেয় পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরা হয়।
যোগাযোগ ও অবকাঠামো উন্নয়নের দাবিতে বিবৃতিতে বলা হয়, দুর্গম এলাকার উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাত করার জন্য উপজেলা ও জেলা সদরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ উন্নত করতে হবে। পাশাপাশি বিচ্ছিন্ন এলাকাগুলোতে সৌরবিদ্যুৎ স্থাপন এবং নিরবচ্ছিন্ন মোবাইল নেটওয়ার্ক নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়।
ভূমি ও কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে সংগঠনটি জুম চাষিদের অধিকার রক্ষা এবং ভূমি সমস্যার ন্যায়সঙ্গত সমাধানের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণের স্থায়ী কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার দাবি জানায়।
এছাড়া পার্বত্য অঞ্চলের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষায় সেনাবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সন্ত্রাসী তৎপরতা দমনে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণার দাবি জানানো হয়।
‘সিএইচটি সম্প্রীতি জোট’ মনে করে, সংবিধানে সকল জাতিগোষ্ঠীর সঠিক স্বীকৃতি, রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি করে পার্বত্য অঞ্চলের সংসদীয় আসন সংখ্যা ৩ থেকে ৯-এ উন্নীত করা এবং দুর্গম এলাকার মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে পারলেই পাহাড়ে টেকসই শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে।











