চট্টগ্রাম বন্দরের বর্ধিত শুল্ক এক মাসের জন্য স্থগিত

নিজস্ব প্রতিবেদক।। চট্টগ্রাম বন্দরের শুল্ক ও সেবা খাতে ঘোষিত বর্ধিত চার্জ এক মাসের জন্য স্থগিত করেছে সরকার। ব্যবসায়ীদের জোরালো দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম বন্দর অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘কাস্টমস ও বন্দর ব্যবস্থাপনা: সমস্যা, সম্ভাবনা ও অগ্রগতির পথ’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌ পরিবহন বিষয়ক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন এ ঘোষণা দেন।
উপদেষ্টা জানান, ব্যবসায়ীদের স্বার্থ বিবেচনায় সাময়িকভাবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও এক মাস পর নতুন ট্যারিফ কার্যকর করা হবে। তিনি বলেন, পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধি এবং বে-টার্মিনালসহ চলমান প্রকল্প বাস্তবায়নের কারণে চার্জ বাড়ানো ছাড়া উপায় ছিল না। তবে সাময়িক স্থগিতাদেশ রপ্তানিকারকদের কিছুটা স্বস্তি দেবে।
কর্মশালায় ব্যবসায়ী নেতারা অন্তত ছয় মাসের জন্য শুল্ক স্থগিত রাখার দাবি জানান। তারা বলেন, বৈশ্বিক বাণিজ্যে নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় রপ্তানিকারকদের প্রতিযোগিতা ধরে রাখতে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন। একই সঙ্গে তারা সেবার মান উন্নয়ন, যৌথ টাস্কফোর্স গঠন, আইন সংস্কার ও কনটেইনার নিলাম দ্রুত সম্পন্ন করার প্রস্তাব দেন।
নতুন শুল্ক কাঠামো অনুযায়ী, বন্দর ও বেসরকারি কনটেইনার ডিপো (আইসিডি) সেবার চার্জ গড়ে ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে রপ্তানিকারকরা অভিযোগ করেন, আইসিডিগুলো সেবার মান বা সক্ষমতা না বাড়িয়েই চার্জ বৃদ্ধি করেছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এসএম মনিরুজ্জামান বলেন, বন্দরটি এখনও ধারণক্ষমতার বাইরে পরিচালিত হচ্ছে। সীমিত গভীরতা ও জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভরশীলতার কারণে এটি বৈশ্বিক মানে পিছিয়ে রয়েছে। তিনি কাস্টমস স্বয়ংক্রিয়করণ, আইন সংস্কার এবং দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা কনটেইনার দ্রুত খালাসের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অন্যদিকে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান জানান, চলতি মাসেই সব নিলামযোগ্য কনটেইনার তালিকাভুক্ত করে নিলামের ব্যবস্থা করা হবে। তিনি আরও জানান, সাবেক সংসদ সদস্যদের ফেলে রাখা ৩০টি গাড়ি সরকারি পরিবহন পুলে যুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ মো. আরিফ, মেট্রোপলিটন চেম্বারের সহ-সভাপতি এএম মাহবুব চৌধুরীসহ ব্যবসায়ী ও বন্দর ব্যবহারকারীরা।