ঢাকা | নভেম্বর ২৩, ২০২৪ - ৫:১৫ অপরাহ্ন

আন্তঃনগর ট্রেন থেকে আরএনবিকে প্রত্যাহার, আতঙ্কে যাত্রীরা

  • আপডেট: Sunday, September 17, 2023 - 6:17 pm

এম আর আমিন, চট্টগ্রাম ।।

অনিরাপদ হয়ে উঠছে রেলভ্রমণ, আন্তঃনগর ও এক্সপ্রেস ট্রেনগুলোর দায়িত্ব থেকে নিজেদের নিরাপত্তা বাহিনী- আরএনবিকে সরিয়ে দিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে এসব ট্রেনে আর দায়িত্ব পালন করছেন না আরএনবির সদস্যরা। দূরপাল্লার ট্রেনগুলো থেকে আরএনবি সদস্যদের প্রত্যাহার করে নেয়ায় যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক বেড়েছে। ট্রেনগুলোতে অবৈধ, নিষিদ্ধ বা চোরাচালানের মালামাল পরিবহন বৃদ্ধির শঙ্কা তৈরি হয়েছে।অনিরাপদ হয়ে উঠছে রেলভ্রমণ যাত্রাপথে চুরি, ছিনতাই কিংবা ডাকাতি হয়ে দাঁড়িয়েছে নিত্য ঘটনা। ছিনতাই-ডাকাতিতে বাধা দেওয়ায় খুনের ঘটনাও ঘটছে।রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট কার্যালয়ের চাহিদার প্রেক্ষিতে ২০০৬ সালের ২২ ডিসেম্বর থেকে আন্তঃনগর ও এক্সপ্রেস ট্রেনগুলোতে আরএনবি সদস্য মোতায়েন করা হয়। ভ্রমণকালে অবৈধ চোরাচালানের মালামাল যাতে ট্রেনে পরিবহন করা না হয় এবং এলার্ম চেইন পুলিং করে যাতে কোনো দুষ্কৃতিকারী ট্রেনে উঠতে না পারে সেজন্য আরএনবি সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে নির্দেশনা দেয়া হয়।তবে ১৭ বছর পর গত ৩১ আগস্ট নতুন নির্দেশনায় ১ সেপ্টেম্বর থেকে আন্তঃনগর ও এক্সপ্রেস ট্রেনগুলোতে আরএনবি সদস্য মোতায়েন পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়।আরএনবির চিফ কমান্ড্যান্ট (পূর্ব) কার্যালয়ের সহকারী কমান্ড্যান্ট রোকনুজ্জামান খান স্বাক্ষরিত ওই নির্দেশনায় বলা হয়- রেলভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত মাসিক পরিচালন ও পর্যালোচনা সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।জিআরপি (রেলওয়ে পুলিশ) সদস্যদের সঙ্গে একটি আন্তঃনগর বা এক্সপ্রেস ট্রেনে আরএনবির ২-৩ জন সিপাহী বা হাবিলদার এবং ১ জন ইনচার্জ দায়িত্ব পালন করতেন।রেলযাত্রীরা বলছেন,একেকটি আন্তঃনগর  এক্সপ্রেস ট্রেনে যাত্রী  নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন অল্প সংখ্যক জিআরপি পুলিশ ও আরএনবি সদস্য। জনবলের অভাবে দিন দিন ট্রেনে ছিনতাই, চুরি, মাদক চোরাচালানের ঘটনা বাড়ছে। এই অবস্থায় ট্রেনের নিরাপত্তার দায়িত্ব থেকে আরএনবি সদস্যদের প্রত্যাহার করে নেয়ায় অপরাধ আরো বাড়বে।যেখানে প্রতিটি ট্রেনে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য বাড়ানো প্রয়োজন ছিল। এখন বাড়ানোর পরিবর্তে উল্টো প্রত্যাহারে কারা লাভবান হবেন জানি না।আরএনবি সদস্যদেরকে আন্তঃনগর বা এক্সপ্রেস ট্রেনগুলোর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়ায় যাত্রীদের নিরাপত্তা বিঘিন্ত হবে।যদি পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকে ট্রেনে দিন দিন চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা বাড়বে। যাত্রী নিরাপত্তায় যেখানে বাড়তি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন দরকার- সেখানে উল্টো প্রত্যাহার দুঃখজনক।রেলওয়ে সৃত্রে জানা যায়, দেশের বিভিন্ন রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করে প্রায় ৫০০ এইসব ট্রেনে প্রতিদিন যাতায়াত করে সোয়া ৩ লাখ যাত্রী। বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী ১০০টির মতো আন্তনগর ট্রেনে দুই থেকে তিনজন করে রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি) ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকেন। বাকি চার শর মতো মেইল, লোকাল, কমিউটার ট্রেন চলছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ছাড়া।  যাত্রাপথে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা না থাকায় যাত্রীরা প্রতিনিয়তই পড়েন অজ্ঞানপার্টি, মলমপার্টি, ছিনতাইকারী, ডাকাতির কবলে।রেলের যাত্রাপথে নিরাপত্তা সদস্য বৃদ্ধি এখন সময়ের দাবি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে রেলে নিরাপত্তাব্যবস্থা বৃদ্ধি করা না হলে আতঙ্কের রেল পরিবহনে হবে।এ বিষয় জানতে চাইলে অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী বলেন, ‘বিভিন্ন সময় আরএনবি সদস্য বিষয়ে কথা উঠেছে। তারা কিছু অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটিয়েছে। তাই এই বাহিনীর সদস্যদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।তবে ঠিক কী কারণে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, তা বোধগম্য নয় বলে দাবি করেছেন আরএনবির পূর্বাঞ্চলীয় চিফ কমান্ডেন্ট মো. জহিরুল ইসলাম।