ঢাকা | সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪ - ১:০৫ অপরাহ্ন

শিরোনাম

আশুলিয়ায় ডিবি পুলিশের পরিচয়ে ছিনতাইকারী চক্রের চারজন আটক

  • আপডেট: Friday, September 15, 2023 - 5:35 pm

ইউসুফ আলী খান।।

ঢাকার শিল্পাঞ্চল সাভারের আশুলিয়ায় গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ পরিচয়ে সংঘবদ্ধ একটি ছিনতাইকারী চক্রকে আটক করে আশুলিয়া থানা পুলিশ।

শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় আশুলিয়া থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস ও ট্রাফিক উত্তর বিভাগ) আবদুল্লাহিল কাফী। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহিদুল ইসলাম, আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম কামরুজ্জামান, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোমিনুল হক, পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) জামাল শিকদার প্রমুখ।

এসময় তিনি ছিনতাইয়ের সময় তাঁদের পরনে থাকত ডিবির পোশাকের আদলে পোশাক, ওয়াকিটকি, সিগন্যাল লাইট, বিদেশি পিস্তল। ব্যবহার করতেন প্রাইভেট কার। চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনকারীদের লক্ষ্য করে পিছু নিতেন। পরে সুযোগ বুঝে নিজেদের ডিবি পরিচয় দিয়ে ছিনিয়ে নিতেন ভুক্তভোগীর টাকা।

এমন একটি চক্রের চার সদস্যকে গতকাল ১৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার করেছে আশুলিয়া থানার পুলিশ। এ সময় একজন পালিয়ে যান। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ছিনতাইকৃত ২ লাখ ৬৪ হাজার টাকা, ম্যাগাজিন, একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি চাপাতি, একটি চাকু, একটি ওয়াকিটকি, একটি সিগন্যাল লাইট, দুটি ডিবি পুলিশের কোটির আদলে কোটি। আটক করা হয় ছিনতাইয়ে কাজে ব্যবহিত প্রাইভেট কারটিও।

গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা হলেন সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থানার বর্ধনগাছা দক্ষিণ পাড়া এলাকার রবিউল করিম ওরফে সুলভ (৩০), দহাকালা এলাকার মাসুদ করিম (৫০), রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি থানার সোনাপুর এলাকার নাসির উদ্দিন ওরফে মাসুদ মিয়া (২৯) ও পাবনা জেলার চাটমোহর থানার কাজীপাড়া এলাকার আবদুল খালেক (৩৪)।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে আশুলিয়ায় ডিইপিজেড সংলগ্ন উত্তরা ব্যাংক শাখা মেসার্স সানি এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক ইউসুফ আকন ৪ লাখ ১৫ হাজার টাকা তোলেন। ব্যাংক থেকে বের হয়ে হেঁটে কিছু দূর যাওয়ার পর একটি প্রাইভেট কার থেকে ডিবির পোশাকের আদলে পোশাক পরা পাঁচজন নেমে ইউসুফের গতি রোধ করেন। তাঁরা নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ইউসুফের কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে প্রাইভেট কার নিয়ে সটকে পড়েন। এ সময় তিনি চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসেন। খরব পেয়ে আশুলিয়া থানা-পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।

পরে ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে পুলিশের একাধিক দল অভিযান শুরু করে।পরে বিকেল চারটার দিকে বাইপাইল – আবদুল্লাহপুর সড়কের আশুলিয়া বাজার ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে প্রাইভেট কারটি পুলিশ আটক করে। গাড়ি থেকে মাসুদ করিম, মো. নাসির উদ্দিন, রবিউল, , আবদুল খালেককে আটক করা হয়। এ সময় কৌশলে মো. রুবেল পালিয়ে যান। আটক ব্যক্তিদের থানায় এনে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তাঁরা ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। তাদের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী ইউসুফ ও পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘বিভিন্ন জেলায় এ চক্রের বিরুদ্ধে একাধিক ঘটনার খবর আমরা পেয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে গাজীপুর সহ বিভিন্ন জেলায় একাধিক মামলারও রয়েছে বলে জানতে পেরেছি। চক্রটি ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নিত। এ চক্রটি সাভার-আশুলিয়াতে সক্রিয় ছিল। আমরা এ চক্রের চারজনকে গ্রেপ্তার করেছি। এ ছাড়া এ চক্রের অন্যদের চিহ্নিত করতে কাজ শুরু হয়েছে। মূলত গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের পেছনে একটি সংঘবদ্ধ চক্র কাজ করছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। তাদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।’

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে ছিনতাই প্রসঙ্গে আবদুল্লাহিল কাফী বলেন, জনগণের জানমাল রক্ষা করা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজ। কাউকে মারধর বা টাকা ছিনিয়ে নেওয়া এ বাহিনীর কাজ নয়। কেউ যদি এমনটি করে, তাহলে দ্রুত সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করতে হবে। এধরনের ঘটনায় সবাইকে সচেতন থাকতে আহ্বান জানান তিনি।