জানা গেছে, এসব অবৈধ দখলদারদের বারবার নোটিশ করে জমি থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার কথা থাকলেও উৎকোচ নিয়ে চুপ হয়ে যায় রেল কতৃপক্ষ।
অপরদিকে স্থানীয় প্রভাবশালীদের কাছে অসহায় বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। রেলওয়ের জমি দখলের এ উৎসবে মেতেছেন নগরীর ষোল শহর রেলওয়ে স্টেশন হতে অক্সিজেনের প্রভাবশালীরা।
সরেজমিনের ঘুরে দেখা গেছে, নগরীর ষোল শহর হতে বিবিরহাট, হামজারবাগ, আতুরার ডিপু, আমিন কলোনি হয়ে অক্সিজেনের রেল সড়ক অংশে স্থাপনা নির্মাণ করে দোকান বরাদ্দ, বাসা ভাড়া, গাড়ির গ্যারেজসহ নানান ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দখলে নিয়েছে রেলওয়ের জায়গা।
অবৈধভাবে দখল করা রেলওয়ের এসব পরিত্যক্ত জমিগুলো মনগড়া চুক্তি করে বদলানো হচ্ছে মালিকানা। জমিগুলোতে স্থায়ী পাকা স্থাপনা নির্মাণ করে আগাম দখলে নেয়ার উৎসবে মেতেছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা।
রেল কর্তৃপক্ষকে অবগত করেই নাকি এসব জমিগুলো দখল করা হচ্ছে। আবার লিজ নিয়ে স্থাপনা তৈরি করা হচ্ছে বলেও বড় গলায় দাবি করছেন অনেকে।
ইতোমধ্যে অনেক স্থায়ী স্থাপনা দৃশ্যমান হয়েছে সাবেক এই রেল লাইনের পাশে। এর মধ্যে নগরীর ষোল শহর হতে বিবিরহাট, হামজারবাগ, আতুরার ডিপু, আমিন কলোনি হয়ে অক্সিজেনের রেল সড়কের দুই পাশে রেলের জমিতে আধাপাকা থেকে শুরু করে দুই চার তলা বিশিষ্ট ঘর নির্মাণের নামে কৌশলে স্থায়ীভাবে মার্কেটও নির্মাণ করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলের জমিতে গড়ে ওঠা মার্কেটের এক ভাড়াটিয়া জানান, তিনি দুই শাটার-সম্বলিত একটি দোকান দুই বছরের কিস্তিতে ৩ লাখ টাকা অগ্রিম দিয়ে ৬ হাজার টাকা মাসিক ভাড়া নিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, যে কোন সময় রেলের জমিতে নির্মাণ করা আধাপাকা দোকানগুলো ভাঙ্গা পড়তে পারে। তাই সবসময় আতঙ্কে থাকতে হয় আমার।
রেলের জমি ভোগদখলে থাকা সূত্রে স্থাপনা দখলদাররা মালিক দাবি করে জানান, সরকারের কাছ থেকে লিজ নিয়ে স্থাপনা তৈরি করেছেন তারা। এ ছাড়া এই রেল সড়কের পাশে সরকারি জমিগুলো ক্রয় সূত্রেও মালিক দাবি করেন একাধিক ব্যক্তি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ রেলওয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মচারী বলেন, রেলের জমিগুলো মূলত জোর করে দখল করে রেখেছে প্রভাবশালীরা। রেলের জমিতে কেউ লিজ নিলেও স্থায়ী পাকা ভবন করতে পারবেন না। অস্থায়ী স্থাপনা করতে পারবেন। যেমন কৃষি জমিকে চাষ করতে পারবে, নালা-ডোবায় মৎস চাষ করতে পারবেন। তবে কোনো ব্যক্তি বসবাস ও বাণিজ্যিক কাজ করার জন্য স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করতে পারবেন না।
তবে লিজ দেয়া জমি থেকে রেল কর্তৃপক্ষ প্রয়োজন মনে করলে যে কোনো সময় তাকে সরিয়ে দিতে পারবেন বলে জানান এ কর্মচারী।
এদিকে চট্টগ্রাম নগরীতে দফায় দফায় রেলওয়ের জমি বেদখলমুক্ত ও স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান করার পরও বন্ধ হয়নি রেলওয়ের জমি দখল। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের ব্যবস্থা নেয়া অতি জরুরি বলে মনে করেন স্থানীয় সুশীল সমাজ।