সিরিয়ায়ন বিদ্রোহীদের অগ্রগতিতে পতনের শঙ্কা আসাদের, দুশ্চিন্তায় ইসরায়েল
জাগোজনতা অনলাইন : সিরিয়ার বিদ্রোহী বাহিনী হামা শহর দখল করার পর দেশটির সরকারের পতনের আশঙ্কায় ইসরায়েল সম্ভাব্য পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাতে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই পরিস্থিতি নিয়ে নিরাপত্তা বিষয়ক বৈঠক করেন।
ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দারা মনে করছেন, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের শাসনব্যবস্থা বিদ্রোহীদের অগ্রগতির মুখে টিকতে নাও পারে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, সিরিয়ার সেনাবাহিনীর দুর্বলতা ইসরায়েলের জন্য অপ্রত্যাশিত ছিল। বিদ্রোহীদের দ্রুত অগ্রগতিতে ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার সামরিক অবস্থা সম্পর্কে সতর্কতাসূচক তথ্য আদান-প্রদান করেছে।
ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম জানিয়েছে, বিদ্রোহীদের অগ্রগতি যদি দক্ষিণে ইসরায়েল সীমান্ত পর্যন্ত পৌঁছায়, তবে এটি একটি বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে। এর আগে বিদ্রোহীদের নেতা ও তাদের সংগঠনগুলোকে সীমান্ত এলাকা থেকে দূরে থাকার বার্তা দিয়েছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এবং আইডিএফ চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল হারজি হালেভি বৃহস্পতিবার একটি সামরিক পর্যালোচনায় অংশ নেন। আইডিএফ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সীমান্তে যেকোনও হুমকি প্রতিহত করতে আমরা প্রস্তুত। ইসরায়েলি নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইসলামপন্থি বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহীরা এক সপ্তাহের মধ্যে সিরিয়ার আলেপ্পো ও হামা দখল করেছে। বৃহস্পতিবার হামা দখলের পর বিদ্রোহীরা আরও দক্ষিণে হোমস শহরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ বিদ্রোহীদের কৌশলগত সুবিধা দিয়েছে।
বিদ্রোহীদের দাবি, তারা হোমসের জনগণকে সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। বিদ্রোহী নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি বলেছেন, সিরিয়ার ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দিতে বিদ্রোহীরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে অনেকেই বিদ্রোহীদের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দিহান।
সিরিয়ার সেনাবাহিনী যদি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ে, তবে ইরান ও হিজবুল্লাহ সিরিয়ায় তাদের অবস্থান শক্তিশালী করতে পারে। এ বিষয়ে ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের উদ্বেগ জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরায়েল দুটি সম্ভাবনার বিষয়ে শঙ্কিত—একদিকে সিরিয়ার ইসলামপন্থি শাসন এবং অন্যদিকে ইরানের প্রভাব বৃদ্ধি।
ইসরায়েলের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, আমরা চাই সিরিয়ার বিদ্রোহী এবং সরকারপক্ষ পরস্পরকে দুর্বল করুক। তবে আমরা সরাসরি কোনও পক্ষের সঙ্গে জড়িত হব না।