রাজধানীতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমাবেশ আজ, সতর্ক পুলিশ
জাগো জনতা ডেস্ক: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠানের দাবিতে সরকার পতনের এক দফা দাবি ও নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করতে বুধবার (১২ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর নয়া পল্টনে সমাবেশ ডেকেছে বিএনপি।
একই দিন বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেটে শান্তি সমাবেশ করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তবে সময় আলাদা। ২৩ শর্তে রাজধানীতে সমাবেশ করতে উভয় দলকেই অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
আওয়ামী লীগকে দুপুর তিনটা থেকে বিকেল পাঁচটা এবং বিএনপিকে দুপুর দুইটা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত ওই দুই নির্ধারিত স্থানে সমাবেশ করার পৃথক অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
সময় আলাদা হলেও একই দিনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মসূচি থাকায় রাজপথ উত্তপ্ত হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করছে রাজনৈতিক দলগুলো।
এই সমাবেশকে উপলক্ষ্য করে রাজধানীতে বড় ধরনের শো-ডাউন করে নিজেদের শক্তির জানান দিতে চায় বিএনপি। এজন্য গত কয়েকদিন দফায়-দফায় মিটিং করেছেন বিএনপির ঢাকা মহানগরীর নেতারা। সমাবেশে রাজধানীবাসীকে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে টানা কয়েকদিন পাড়া-মহল্লায় মাইকিংও করা হয়েছে।
তবে রাজপথে বিরোধী দলগুলোকে একপাক্ষিক সুযোগ দিচ্ছে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। নেতাকর্মীদের কঠোর অবস্থানে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
যে ২৩ শর্তে আওয়ামী লীগ-বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে
১. এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়, স্থান ব্যবহারের জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে।
২. স্থান ব্যবহারের অনুমতিপত্রে উল্লেখিত শর্তাবলি যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
৩. অনুমোদিত স্থানেই সমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
৪. নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক (দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ) নিয়োগ করতে হবে।
৫. স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলের চারদিকে উন্নত রেজ্যুলেশনযুক্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে।
৬. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশে আগতদের হ্যান্ড হেল্ড মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে (ভদ্রোচিতভাবে) চেকিং করতে হবে।
৭. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৮. শব্দ দূষণ প্রতিরোধে সীমিত আকারে মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করতে হবে, কোনোক্রমেই অনুমোদিত স্থানের বাইরে মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।
৯. অনুমোদিত স্থানের বাইরে প্রজেক্টর স্থাপন করা যাবে না।
১০. অনুমোদিত স্থানের বাইরে, রাস্তায় বা ফুটপাতে কোথাও লোক সমবেত হওয়া যাবে না।
১১. আজান, নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীল সময় মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।
১২. ধর্মীয় অনুভূতির ওপর আঘাত আসতে পারে এমন কোনো বিষয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন, বক্তব্য প্রদান বা প্রচার করা যাবে না।
১৩. সমাবেশের কার্যক্রম ব্যতীত মঞ্চকে অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না।
১৪. সমাবেশ শুরুর দুই ঘণ্টা পূর্বে লোকজন সমবেত হওয়ার জন্য আসতে পারবে।
১৫. অনুমোদিত সময়ের মধ্যে দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫ টার মধ্যে সমাবেশের সার্বিক কার্যক্রম শেষ করতে হবে।
১৬. কোনো অবস্থাতেই মূল সড়কে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না।
১৭. আইন-শৃঙ্খলা পরিপন্থি ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন কার্যকলাপ করা যাবে না।
১৮. রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কার্যকলাপ ও বক্তব্য প্রদান করা যাবে না।
১৯. উসকানিমূলক কোনো বক্তব্য প্রদান বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না।
২০. কোনো ধরনের লাঠি-সোটা /ব্যানার, ফেস্টুন বহনের আড়ালে লাঠি, রড ব্যবহার করা যাবে না।
২১. আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ও কোনো বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবেন।
২২. উল্লেখিত শর্তাবলি যথাযথভাবে পালন না করলে তাৎক্ষণিকভাবে এই অনুমতির আদেশ বাতিল বলে গণ্য হবে।
২৩. জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে এই অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করে।