চট্রগ্রামে ৮০০ শয্যার হাসপাতালের অনুমোদন
এম আর আমিন, চট্টগ্রাম।। চট্টগ্রামে ৮০০ শয্যার হাসপাতালসহ চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো স্থাপনে চূড়ান্ত অগ্রগতি হয়েছে। খুব দ্রুতই এর সুফল চট্টগ্রামবাসী গ্রহণ করতে পারবে।সরকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য এক হাজার ৮৫১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বরাদ্দ অনুমোদন করেছে।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) এক সভায় চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো নির্মাণে এক হাজার ৮৫১ কোটি ৫৯ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন। এই প্রথম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নেয়া একটি প্রকল্প একনেক সভায় পাস হয়েছে। এখন পর্যায়ক্রমে অবকাঠামো নির্মাণের জন্য টাকা ছাড় হবে। চার বছর অর্থাৎ ২০২৭ সালের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। এর মধ্যে দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ণাঙ্গ রূপ পাবে।
প্রকল্প বিবরণ,বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন ৮০০ শয্যার ১৫ তলা হাসপাতাল হবে। এতে চিকিৎসকদের পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট কোর্স চালুর জন্য ১০ ফ্যাকাল্টিসহ ৬৯টি চিকিৎসা বিভাগ থাকবে।আলাদাভাবে প্রশাসনিক ভবন, একাডেমিক ভবন এবং ডিনস অফিস, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি, ক্যাফটেরিয়া, টিএসসি, প্রার্থনা কক্ষ, কনভেনশন হল এবং টিচার্স ক্লাব নির্মাণ করা হবে। এছাড়া সংলগ্ন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেজ (বিআইটিআইডি) হাসপাতাল ভবন বিদ্যমানের চেয়ে আরও পাঁচতলা বাড়িয়ে মোট দশতলা করা হবে।উপাচার্যের দ্বিতল বাংলো, প্রোভিসি, ট্রেজারার, ডক্টরস এবং অফিসার্স কোয়ার্টার হিসেবে একটি ১৫ তলা ভবন, একটি ছাত্রাবাস ও একটি ছাত্রীনিবাস, নার্সেস ডরমিটরি নির্মাণ করা হবে।চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র ডাক্তার বিদ্যুৎ বড়ুয়া বলেন, আমরা এতদিন স্বল্প পরিসরে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে নিচ্ছিলাম।তিনি আরও বলেন,দ্রুততম সময়ের মধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অবকাঠামো নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এরপর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আমরা কাজ শেষ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডাক্তার মো. ইসমাইল খান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রকল্প অনুমোদন দেয়ায় প্রধামন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতায় দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন আজ বাস্তবের দিকে এগিয়ে গেল।চট্টগ্রাম ফৌজদারহাট বক্ষব্যাধি হাসপাতাল সংলগ্ন ২৩ দশমিক ৯২ একর জমি হাসপাতালসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো নির্মাণের জন্য বরাদ্দ আছে। ২০১৭ সালের ১৭ মে বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ডাক্তার মো. ইসমাইল খানের যোগদানের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস এবং বিএসসি অনার্স ইন নার্সিং ও বিইউএমএস (ব্যাচেলর অব ইউনানি মেডিসিন অ্যান্ড সার্জারী) কোর্সের শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি হয়। এসব শিক্ষার্থীরা আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি হত।উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পে এর আগে (২০১৯ সালে) একটি ডিপিপি প্রস্তুত করে বেসরকারি একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। প্রস্তুত করা ডিপিপিতে নানা অসংগতি ধরা পড়ে। এর প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ওই ডিপিপি বাতিল করা হয়। পরবর্তীতে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা যাচাই ও নতুন করে ডিপিপি তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। এখন নতুন ভাবে ডিপিপি ও মাস্টারপ্ল্যান প্রস্তুতের কাজ শেষ হয়েছে। যা অনেকটা চূড়ান্ত পর্যায়ে। আগামী ২০ মার্চ প্রস্তুতকৃত ডিপিপি ও মাস্টারপ্ল্যান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়ার কথা রয়েছে।