ঢাকা | সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫ - ৫:৩০ অপরাহ্ন

শিরোনাম

ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বন্যহাতির তাণ্ডব ; অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন বোট চালক সানাউল্লাহর পরিবার

  • আপডেট: Tuesday, September 16, 2025 - 9:53 am

কাপ্তাই (রাঙামাটি) প্রতিনিধি।। রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলি নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে গত এক মাস ধরে অবস্থান করছে একদল বন্যহাতি। ১৭ সদস্যের ওই হাতির দলের তাণ্ডবে ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, বহু গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরের কাঁচা সড়ক। বিশেষ করে বাগানের ২ নম্বর সেকশনের চা শ্রমিকরা বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। ইতোমধ্যে বেশ কিছু ঘরবাড়ি হাতির আক্রমণে ভেঙে গেছে।

ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী জানান, মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে হাতির তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এ সময় তিনি স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে দ্রুত ঘর থেকে বের হয়ে কর্ণফুলি নদী পাড়ি দিয়ে ইঞ্জিনচালিত বোটে অপর পাড়ে আশ্রয় নেন এবং অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান।

বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে হাতির গর্জন শুনতে পাই। মুহূর্তেই দেখি একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা করছে। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সঙ্গে সঙ্গে স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে ঘরের পেছন দিক দিয়ে কোনোরকমে পালিয়ে এসে বোটে উঠে অপর পারে চলে যাই।”

চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা জানান, “বিগত এক মাস ধরে ১৭ সদস্যের হাতির দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে তারা সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ আবার বাগানে নেমে এসে গাছপালা ও ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। ফলে চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”

ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “গত এক মাস ধরে হাতিদের এই দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে ১৭ সদস্য থাকলেও সম্প্রতি দুটি শাবকের জন্ম হয়েছে। শাবক জন্মের পর আশীর্বাদ জানাতে সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরও একটি হাতির দল যোগ দিয়েছে। জানা যায়, হাতি শান্তিপ্রিয় প্রাণী এবং নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে। বাদ্যযন্ত্র, বাঁশি, ড্রাম কিংবা গোলাবারুদের শব্দ হাতিরা পছন্দ করে না। গত সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) শ্রমিকরা পাহাড়ের উপর বাঁশি বাজালে হাতির দলটি চা বাগান ছেড়ে গভীর বাঁশবনে চলে যায়। তবে আবারও ফিরে আসতে পারে।”

কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ কর্মকর্তা ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। ফলে খাবারের সন্ধানে হাতিরা প্রায়ই লোকালয়ে প্রবেশ করছে। আমাদের উচিত তাদের আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”