ঢাকা | ফেব্রুয়ারী ২২, ২০২৫ - ৯:৫৪ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

বকেয়া বেতন চাওয়ায় শ্রমিক নেতাদের উপর হামলা, আটক ৩

  • আপডেট: Wednesday, February 19, 2025 - 1:33 pm

ইউসুফ আলী খান।। ঢাকার শিল্পাঞ্চল সাভারের আশুলিয়ায় শ্রমিকদের বকেয়া বেতন চাওয়ায় কারাখানায় ডেকে নিয়ে ৩ জন  শ্রমিক নেতাকে কারখানায় ডেকে নিয়ে আটক করে মারধর করার অভিযোগ উঠে কারখানার তিন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে ৩ জনকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে সেনাবাহিনী।  আহত ৩ শ্রমিক নেতাকে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়।

 

আহত শ্রমিকনেতারা হলেন, মাদারল্যান্ড গার্মেন্টস ওয়ার্কার ফেডারেশনের সাভার ও আশুলিয়া কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাধারণ সম্পাদক মো: নাইম শিকদার ও জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশ আশুলিয়া কমিটির সভাপতি কামরুল ইসলাম মৃধা।

আটককৃতরা হলো, কারখানাটির ডাইরেক্টর আরাফাত জান, পিএম মাসুদ রানা ও এ্যাডমিন ম্যানেজার মঞ্জুরুল ইসলাম।

ভুক্তভোগী শ্রমিকরা জানায়, প্লাটিনাম ক্রিয়েশন এন্ড ডিজাইন লিমিটেড কারখানা থেকে ২ মাসের বেতন সহ পাওনাদি না দিয়েই ৪৫ জন শ্রমিক ছাটাই করে কর্তৃপক্ষ। তারা ফেডারেশনে অভিযোগ করলে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ কারখানায় কথা বলে। এরপরে কারখানার কর্তৃপক্ষ তাদেরকে বেতন দিবে বলে ডেকে নেয়। সেখানে তারা যাওয়ার পরে গেট লাগিয়ে দেয়। এরপরে মালিকপক্ষের লোকজন ও তাদের ভাড়াকৃত বহিরাগত সন্ত্রাসীরা লোহার রড, লাঠিসোঁটা নিয়ে শ্রমিকদের উপর হামলা চালায়। অন্যদিকে ফেডারেশনের নেতাদেরকেও বেধড়ক মারপিট করে। এঘটনায় শ্রমিক নেতাসহ তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়। পরে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী এসে তাদেরকে উদ্ধার করেন এবং মালিক পক্ষের ৩ জনকে আটক করে পুলিশে দেয়। তাদের পাওনাদি পরিশোধ সহ এই হামলায় যারা জড়িত রয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান ভুক্তভোগী শ্রমিকরা।

ভুক্তভোগী শ্রমিক নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন অভিযোগ করে বলেন, প্লাটিনাম কারাখানার ৪৫ জন ছাটাইকৃত শ্রমিকের বেতন ও পাওনাদি পরিশোধ করতে কর্তৃপক্ষ তালবাহানা করে আসছিলো। পরে শ্রমিকরা ফেডারেশনে অভিযোগ দিলে, আমরা তাদের সাথে যোগাযোগ করি। এরপরে কারখানা কর্তৃপক্ষ এবিষয় সমাধান করার কথা বলে আমাদেরকে ডেকে নেয়। শ্রমিক সহ আমরা সেখানে যাই। কারখানার মুল ফটক দিয়ে ঢোকার পরে সেখানকার লোকজন গেট লাগিয়ে দেয়। প্রায় ৩ ঘন্টা বসিয়ে রাখে। তারা বললো মালিক পথে, তিনি আসলে সমাধান করা হবে। এসময়ে আমাদেরকে রুমে ডেকে নেয় এবং আটকে রাখে। পরে কারখানার ডাইরেক্টর, পিএম ও এ্যাডমিন ম্যানেজার সহ তাদের ভাড়াকৃত সন্ত্রাসী বাহিনী এসে শ্রমিক নেতা নাইম, কামরুল ও আমার উপর লোহার রড, লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করে। পরে আমি শ্রমিক নেতা আশিককে এবিষয়ে ম্যাসেজ দেই। সে সঙ্গে সঙ্গে সেনাবাহিনীকে খবর দেন। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী এসে আমাদেরকে উদ্ধার করেন। এসময় সেনাবাহিনী কারখানা কর্তৃপক্ষের ৩ জনকে আটক করে পুলিশে দেন। এছাড়াও মালিক পক্ষের ভাড়াকৃত গুন্ডাবাহিনী  শ্রমিকদেরকেও বেধড়ক মারপিট করে। এতে ৯-১০ জন শ্রমিক আহত হয়। ঘটনাস্থলে যদি সেনাবাহিনী না আসতো, তাহলে তারা আমাদেরকে প্রাণে মেরে ফেলতো। এই ঘটনায় যারা-যারা জড়িত রয়েছে, আমি তাদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাই।

এবিষয়ে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো: সাইফুল্লাহ আকন্দ বলেন, ৩ জনকে সেনাবাহিনী থানায় হস্তান্তর  করেছে । অভিযোগকারী থানায় অভিযোগ করার পরে মামলা এফআইআর হয়েছে এবং তাদেরকে কোর্টে চালান করা হয়েছে।