ইউসুফ আলী।। জুলাই-আগস্ট গণহত্যার সহযোগী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর এনটিভির বিশেষ প্রতিনিধি জাহিদুর রহমান এবং জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আশুলিয়ার গণহত্যায় সরাসরি অংশগ্রহনকারী এবং গণহত্যা মামলার আসামী ফ্যাসিস্ট সাংবাদিক জাহিদ হাসান শাকিলের গ্রেফতারের দাবিতে এবং আশুলিয়া প্রেসক্লাবের সদস্য সচিবসহ ছয় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ফ্যাসিস্ট দোসরদের দ্বারা দায়েরকৃত মিথ্যা ও ষডযন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সাংবাদিক ও ছাত্রজনতা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় আশুলিয়ার বাইপাইল সংলগ্ন আশুলিয়া প্রেসক্লাবের সামনে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধন থেকে এসময় বক্তারা চিহ্নিত দালাল সাংবাদিকতার আড়ালে ভয়ংকর অপরাধী অবৈধ সম্পত্তির মালিক ব্ল্যাকমেইলার জাহিদুর রহমানকে এনটিভি থেকে অপসারণ এবং প্রশাসনের আইনী পদক্ষেপের দাবি করেন। পাশাপাশি জুলাই-আগস্ট গণভ্যুত্থান চলাকালে আশুলিয়ায় গণহত্যায় সম্পৃক্ত গণহত্যা মামলার আসামী এটিএন নিউজের সাবেক প্রতিনিধি জাহিদ হাসান শাকিলকে অবিলম্বে গ্রেফতারসহ ফ্যাসিস্ট দোসরদের দায়েরকৃত আশুলিয়া প্রেসক্লাবের ছয় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহারের দাবি করা হয়।

জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষমবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আশুলিয়া শাখার সদস্য মোঃ রিফাত আহমেদ ইমন বলেন, এনটিভির সাংবাদিক জাহিদূর রহমান এবং এটিএন নিউজের জাহিদ হাসান শাকিল জুলাই আন্দোলনে সরাসরি ফ্যাসিস্টদের পক্ষে কাজ করেছে। সাভারে ইয়ামেন হত্যার সময় জাহিদুর রহমান ঘটনাস্থলে গুলিবর্ষণকারী পুলিশের সাথে ছিলেন এবং তিনি অঙ্গুলি নির্দেশ করে ইয়ামেনকে দেখিয়ে দেন পুলিশকে। অপরদিকে, সাংবাদিক জাহিদ হাসান শাকিল বাইপাইলে আন্দোলন চলাকালে ড্রোন ব্যবহার করে ছাত্রজনতার অবস্থান পুলিশকে জানিয়ে দেয়। এই ফ্যাসিস্ট দোসর হত্যা মামলার আসামী হলেও প্রশাসন তাকে আজও গ্রেফতার করতে পারেনি। আমরা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে অবিলম্বে এই দুই ফ্যাসিস্ট দোসর সাংবাদিকের গ্রেফতার দাবি করছি।

সিটি ইউনিভার্সিটি’র শিক্ষার্থী সৈয়দ ইমন ইসলাম আওয়ামী দোসর দুই সাংবাদিককে দ্রুত আইনের আওতায় আনার আহবান জানান। নাহলে সাভার-আশুলিয়ার ছাত্রজনতা এবিষয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে বলে আল্টিমেটাম দেন তিনি।

আশুলিয়া প্রেসক্লাবের আহবায়ক লোকমান হোসেন চৌধুরী খোকা জানান, গত ৫ আগস্ট দেশ বিপ্লবের মাধ্যমে দ্বিতীয় স্বাধীনতা লাভ করেছে। মাত্র ছয় মাস পার হতে পারে নাই, ইতোমধ্যে ফ্যাসিস্ট দোসর এবং চিহ্নিত দালাল সাংবাদিকেরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তাদের ষড়যন্ত্রে আশুলিয়া প্রেসক্লাবের সদস্য সচিবসহ মোট ছয় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। জুলাই আন্দোলনে নিহতদের রক্তের দাগ এখনও শুকায় নাই; এরই মধ্যে ফ্যাসিস্টদের দোসরেরা নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়ায়। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জাকর।

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন- আশুলিয়া প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব সোহেল রানা, সাংবাদিক ওবায়দুর রহমান লিটন, সাংবাদিক সাকিব আসলাম প্রমুখসহ অন্যরা।

মানববন্ধন শেষে স্থানীয় ছাত্রজনতা এবং সাভার-আশুলিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকরা বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন। বিক্ষোভ মিছিলটি চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়ক ধরে আশুলিয়া প্রেসক্লাবের নির্মীয়মান ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

পরে ফ্যাসিস্ট দোসর এনটিভির সাংবাদিক জাহিদুর রহমান এবং এটিএন নিউজের সাবেক প্রতিনিধি জাহিদ হাসান শাকিলের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন উত্তেজিত ছাত্রজনতা।