ঢাকা | ডিসেম্বর ২২, ২০২৪ - ১০:৪৯ অপরাহ্ন

শিরোনাম

এবার প্রকাশ্যে এলো ইরানের নতুন ড্রোনবাহী রণতরি ‘শহীদ বাঘেরি’

  • আপডেট: Tuesday, December 17, 2024 - 11:56 am

জাগোজনতা অনলাইন : ইরানের নতুন ড্রোনবাহী রণতরি বা ড্রোন ক্যারিয়ার ‘শহীদ বাঘেরি’ সম্প্রতি পারস্য উপসাগরে দেখা গেছে। ম্যাক্সার স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবিতে এটি দেখা গেছে। ছবিটি তোলার সময় ইরানের নৌবাহিনীর ঘাঁটি বন্দর আব্বাসের নৌবন্দরের কাছে দেখা যায় এটিকে। এই জাহাজটি আগে কনটেইনার জাহাজ থাকলেও সেটিকে পরিবর্তন করে এমনভাবে নির্মাণ করা হয়ে যা দেখতে বিমানবাহী রণতরির মতো লাগে। তবে এটি আসলে ড্রোন বহনের জন্য নির্মিত।

ম্যাক্সারের তোলা ছবিতে দেখা গেছে, ‘শহীদ বাঘেরি’ বন্দর আব্বাসের উপকূলে অবস্থান করছে। এর উপরিভাগে একটি স্কি-জাম্প (রণতরির যে অংশটুকু ক্রমেই ওপরে উঠে যায় বিমান বা ড্রোনকে উড্ডয়নে সহায়তা দেওয়ার জন্য) রয়েছে। এই স্কি-জাম্প ‘শর্ট টেকঅফ ব্যারিয়ার অ্যাসিস্টেড রিকভারি’ প্রযুক্তির বিমানবাহী রণতরির মতো দেখতে হলেও সংক্ষিপ্ত রানওয়ে নির্দেশ করে যে, এটি শুধু ড্রোনের জন্য এবং হেলিকপ্টার পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হতে পারে।

ধারণা করা হচ্ছে, এই সামরিক ড্রোন ক্যারিয়ারটি গত নভেম্বরের শেষ দিকে বন্দ আব্বাসের নিকটবর্তী ইরান শিপইয়ার্ড অ্যান্ড অফশোর ইন্ডাস্ট্রিজের ডকইয়ার্ড থেকে বেরিয়ে প্রথম পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। ইরানের কোনো বিমানবাহী রণতরি নেই এবং দেশটি ১৯৭০ ও ১৯৮০-র দশক থেকে স্থলভিত্তিক যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার পরিচালনা করে আসছে।
তবে ‘শহীদ বাঘেরিই’ ইরানের একমাত্র ড্রোন ক্যারিয়ার নয়। এ ছাড়া আরও দুটি—‘শহীদ রৌদাকি’ ও ‘শহীদ মাহদাভি’ ড্রোন ক্যারিয়ারও ইরান তৈরি করেছে। স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, পারস্য উপসাগরে এই তিনটি জাহাজ অবস্থান করছে।

এই ড্রোন ক্যারিয়ারগুলোর মাধ্যমে ইরানি নৌবাহিনী মনুষ্যবিহীন আকাশযানগুলো যুদ্ধক্ষেত্রের আরও কাছে নিয়ে যেতে পারবে। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার বহু বছর পরও ইরান নিজস্ব সশস্ত্র ড্রোন বহর তৈরি করেছে। এই ড্রোন অঞ্চলটির বিভিন্ন যুদ্ধক্ষেত্র এবং ইউরোপেও ছড়িয়ে পড়েছে। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ানরা ব্যাপকভাবে ইরানের শাহেদ ড্রোন ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ আছে।

ইরানের শাহেদ-১২৯ ড্রোন ইসরায়েলি একটি ড্রোনের ওপর ভিত্তি করে তৈরি এবং ব্যাপকভাবে উৎপাদিত হয়। ২০১৮ সাল থেকে মোহাজের-৬ ড্রোন ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীকে (আইআরজিসি) সরবরাহ করা হচ্ছে। এই ড্রোনগুলো হিজবুল্লাহ, হুতি এবং হামাসের মতো সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছে।
স্যাটেলাইট চিত্রে আরও ধরা পড়েছে যে, ইরানের দুটি নৌযান, ‘শহীদ মাহদাভি’ এবং ‘শহীদ রৌদাকি’—যেগুলোও আগে বাণিজ্যিক জাহাজ ছিল—একইভাবে সামরিক কাজে ব্যবহারযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছে এবং কাছাকাছি নোঙর করা রয়েছে। এই দুটি জাহাজে স্কি-জাম্প র‍্যাম্প নেই, যা নির্দেশ করে যে—এগুলো কেবল এমন ড্রোন পরিচালনার জন্য ব্যবহারযোগ্য যেগুলো উল্লম্ব টেকঅফ ও ল্যান্ডিং করতে সক্ষম, শাহেদ এবং মোহাজের ড্রোনের মতো রানওয়ে প্রয়োজন হয় না।

‘শহীদ রৌদাকি’ একটি যুদ্ধজাহাজ, যা ড্রোন, হেলিকপ্টার এবং ক্ষেপণাস্ত্র বহনের ক্ষমতা রাখে। এটি আগে একটি বাণিজ্যিক জাহাজ ছিল এবং সামরিক ব্যবহারের জন্য পরিবর্তিত হয়েছে। এর ডেকে থাকা ‘এক্স’ চিহ্নটি একটি হেলিকপ্টারের অবতরণস্থল এবং এটি দ্রুত আক্রমণকারী জলযান বহন করতে পারে।
অন্যদিকে, ইরানের গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘শহীদ মাহদাভিকে’ ২০২৩ সালের মার্চ মাসে ইরানের নৌবাহিনীতে কমিশন করা হয়। এটিকে দূরপাল্লার অভিযানের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে এবং এতে ক্ষেপণাস্ত্র, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং উন্নত রাডার প্রযুক্তি রয়েছে। এটি বিভিন্ন ধরনের আক্রমণকারী হেলিকপ্টার, অ্যাটাক ড্রোন এবং দ্রুত আক্রমণকারী জলযান বহন করতে পারে।