সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক মতাদর্শসহ হালনাগাদ তথ্য চেয়ে চিঠি
জাগোজনতা ডেস্ক : সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক মতাদর্শসহ হালনাগাদ তথ্য সংরক্ষণ করে ডেটাবেজ তৈরি করতে চায় পুলিশ। সেই ডেটাবেজের জন্য তথ্য সংগ্রহ করতে সারাদেশের পুলিশ সুপারদের চিঠি দিয়েছে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) ইন্টারনাল অ্যাফেয়ার্স বিভাগ। তবে এ চিঠি নিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
পঞ্চম গ্রেড থেকে তদূর্ধ্ব সরকারি কর্মকর্তাদের হালনাগাদ তথ্য পাঠানোর বিষয়ে জেলার পুলিশ সুপারদের বরাবর স্পেশাল ব্রাঞ্চের দেওয়া চিঠিতে বলা হয়, স্পেশাল ব্রাঞ্চ বাংলাদেশ পুলিশের অন্যতম প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা। যা দেশব্যাপী বিস্তৃত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সর্বাধিক নির্ভরযোগ্য তথ্য সংগ্রহ করে থাকে। তবে সংগৃহীত তথ্যগুলো সুবিন্যস্তভাবে রক্ষণাবেক্ষণের যথাযথ পদক্ষেপের অভাবে তাৎক্ষণিকভাবে গোয়েন্দা প্রতিবেদন তৈরি ও পাঠানোর কাজে দীর্ঘসূত্রতা সৃষ্টি হচ্ছে। বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক পরিস্থিতিতে দেশের সব গোয়েন্দা সংস্থা সময়োপযোগী কৌশলগত ইন্টেলিজেন্স ম্যানেজমেন্টের ওপর গুরুত্ব আরোপ করছে। স্পেশাল ব্রাঞ্চও কাজে গতিশীলতা আনতে মাঠ পর্যায়ের সব ইউনিটের মধ্যে সমন্বয় করে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসমৃদ্ধ একটি পূর্ণাঙ্গ ডেটাবেজ তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এ অবস্থায় আপনার অধিক্ষেত্রের অধীন এলাকায় স্থায়ী ঠিকানা রয়েছে-এমন সরকারি কর্মকর্তাদের (পঞ্চম গ্রেড থেকে তদূর্ধ্ব) তথ্যগুলো স্পেশাল ব্রাঞ্চের সেন্ট্রাল ডেটাবেজে সন্নিবেশিত করার লক্ষ্যে নির্ধারিত ছক অনুযায়ী জরুরি ভিত্তিতে পাঠানোর জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
নির্ধারিত ছকে ১২টি বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছে। সেগুলো হলো, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার পুরো নাম, পিতা, মাতা এবং স্ত্রী বা স্বামীর নাম। বিসিএস ব্যাচ নম্বর। কোন মন্ত্রণালয়, সংস্থা বা দফতরের কর্মকর্তা। তার পদ-পদবি। বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা। জন্ম তারিখ, মোবাইল নম্বর ও এনআইডি নম্বর। কোন রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী। ইতিবাচক ও নেতিবাচক তথ্য থাকলে দিতে হবে। মামলা, জিডি সংক্রান্ত কোনও তথ্য থাকলে সেটিও দিতে হবে। এরপর মন্তব্যের জন্য একটি ঘর রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের তদারক মন্ত্রণালয় হচ্ছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। শুধু তারাই এসব তথ্য চাইতে পারে, আর কেউ নয়। এ মন্ত্রণালয় থেকে যদি পুলিশের কাছে সুনির্দিষ্টভাবে কারও তথ্য সংগ্রহ করতে বলা হয়, কেবল তখনই এভাবে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
এ বিষয়ে পুলিশের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশ সদর দপ্তরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, ‘এটা জটিল কোনও বিষয় নয়। পুলিশের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কাজই হচ্ছে তথ্য সংগ্রহ করা।’ কাজে গতি আনতেই কেবল এটি চাওয়া হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
সাধারণত সরকারি কর্মকর্তাদের সব তথ্যই থাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে। যা তাদের তদারক মন্ত্রণালয় হিসেবে পরিচিত। এ মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মাহবুব-উল-আলমের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এভাবে সরকারি কর্মকর্তাদের কোনও তথ্য সংগ্রহ করার কথা নয়। শুধু কোনও কর্মকর্তার প্রমোশনের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট তথ্য চাওয়া হয়। ঢালাওভাবে চাওয়ার কথা নয়।