ঢাকা | নভেম্বর ১৪, ২০২৪ - ১:০০ অপরাহ্ন

প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন তিনজন

  • আপডেট: Sunday, November 10, 2024 - 8:12 pm

জাগো জনতা অনলাইন।। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস তিনজনকে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় তার বিশেষ সহকারীর দায়িত্ব দিয়েছেন।

তাদের মধ্যে বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) খোদা বকশ চৌধুরী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেখভাল করবেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমানকে দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব।

আর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম আমিনুল ইসলাম শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী দায়িত্ব পালন করবেন।

রোববার সন্ধ্যায় উপদেষ্টা পরিষদের নতুন তিন সদস্যের শপথ অনুষ্ঠানের পর রাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে প্রধান উপদেষ্টার তিনজন বিশেষ সহকারী নিয়োগের কথা জানানো হয়।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহাকারী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তারা প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা, বেতন-ভাতা এবং আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন। রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, উপদেষ্টাদের সহায়তা করার জন্য তাদের নিয়োগ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে।

গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের তিনদিন পর নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যাত্রা শুরু হয়। রোববার শপথ নেওয়া তিন উপদেষ্টাকে নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সংখ্যা দাঁড়াল ২৩ জনে।

এতদিন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আব্দুল হাফিজ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মো. মাহফুজ আলম। মাহফুজকে এবার উপদেষ্টার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

তার সঙ্গে উপদেষ্টা হয়েছেন ব্যবসায়ী শেখ বশির উদ্দিন এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

উপদেষ্টা পরিষদের কলেবর বাড়ানোর পাশাপাশি দপ্তর পুনর্বণ্টন করে দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

কী তাদের পরিচয়

নতুন তিন বিশেষ সহকারীর মধ্যে ডা. সায়েদুর রহমান সরকার পরিবর্তনের পর গত ২৭ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পান।

তার আগে তিনি বিএসএমএমইউর ইনফরমেশন টেকনোলজি বিভাগের পরিচালক এবং রেজিস্ট্রার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে যোগ দেওয়ার আগে তিনি স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে শিক্ষকতা করেছেন।

১৯৭৮ সালে ঢাকার নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করা সায়েদুর রহমান এমবিবিএস করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইনস্টিটিউট পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিসিন অ্যান্ড রিসার্চ থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নেন।

প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়া খোদা বকশ চৌধুরী বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শেষ দিকে (২০০৬ সালের ২ নভেম্বর থেকে ২০০৭ সালের ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত) পুলিশ মহাপরিদর্শকের চলতি দায়িত্ব পান। তার এ নিয়োগ নিয়ে বিরোধী দলের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হলেও তৎকালীন সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

জোট সরকার দায়িত্ব হস্তান্তরের পর রাষ্ট্রপতি ইয়াজ উদ্দিন আহম্মেদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ও আইজিপির দায়িত্বে ছিলেন খোদা বকশ। পরে ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নিলে তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়।

২০০৬ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করা এম আমিনুল ইসলাম তার আগে চার বছর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি ছিলেন। পদার্থবিজ্ঞানের এই শিক্ষক দীর্ঘদিন অধ্যাপনা করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করা আমিনুল ইসলাম কানাডার ম্যাকমাস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে নিউক্লিয়ার ফিজিক্সে এমএস ও পিএইচডি করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি এবং বাংলাদেশ মেডিকেল ফিজিক্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন বিভিন্ন সময়ে।