ঢাকা | সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪ - ৩:৫২ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

জামায়াত নেতার বাড়িতে ডেপুটি স্পিকারসহ ১৩ এমপির মধ্যাহ্নভোজ, চলছে আলোচনা-সমালোচনা

  • আপডেট: Friday, July 28, 2023 - 4:54 am

পাবনা প্রতিনিধি: জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়া) আসনের সংসদ সদস্য শামসুল হক ১৪ জন সংসদ সদস্যকে নিয়ে পাবনার ঈশ্বরদীতে জামায়াত নেতার বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ করার খবরে জেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল রহিম, সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুকসহ অন্তত পাঁচজন ঊর্ধ্বতন নেতার কাছে মন্তব্য জানতে চাইলে সবাই বলেছেন, ‘নো কমেন্ট’।

জামায়াত নেতার প্রতিষ্ঠানের আঙিনায় গাছের চারা রোপণ করেন ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক ও তাঁর সঙ্গে থাকা সংসদ সদস্যরা
তবে বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে দেখছে জেলা জামায়াত। জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ইকবাল হোসাইন বলেন, ‘আমরা সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতে অংশগ্রহণ করি, সেখানে রাষ্ট্রের এমপি, মন্ত্রী পর্যায়ের লোকজন আসতেই পারেন। এতে দোষের কিছু আছে বলে মনে করি না।’

গতকাল বুধবার দুপুরে ঈশ্বরদী পৌরসভা জামায়াতের আমির ও আরআরপি গ্রুপের মালিক গোলাম আজমের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়। ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক সকালে ঈশ্বরদীর রূপপুরে নির্মাণাধীন পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প পরিদর্শনে যান। তাঁর সঙ্গে যোগ দেন পাবনা-৪ (আটঘরিয়া-ঈশ্বরদী) আসনের সংসদ সদস্য নূরুজ্জামান বিশ্বাস, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য শাহিন আক্তার, খালেদা খানম, শিরীন আহমেদ, জিন্নাতুল বাকিয়া, বাসন্তী চাকমা, শামসুন নাহার, নার্গিস রহমান, মনিরা সুলতানা, নাদিরা ইয়াসমিন, রত্না আহমেদ, সালমা চৌধুরী, সেলিনা ইসলাম ও ডরথী রহমান।

পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে ডেপুটি স্পিকার শামসুল হকের নেতৃত্বে সংসদ সদস্যরা জামায়াত নেতা গোলাম আজমের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ ও বিশ্রাম করেন। পরে তাঁরা আরআরপি ফিড মিলের আঙিনায় একটি চারা রোপণ করেন।
এদিকে সংসদ সদস্যদের নিয়ে জামায়াত নেতার বাড়িতে ডেপুটি স্পিকারের মধ্যাহ্নভোজের খবর ছড়িয়ে পড়লে জেলাজুড়ে আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়। আওয়ামী লীগের মতো দলের সংসদ সদস্যদের জামায়াত নেতার বাড়িতে দাওয়াত খাওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেন অনেকে। অনেকে আবার বিষয়টিকে ‘লজ্জাজনক’ বলে মন্তব্য করেন।

নাট্য সংগঠন পাবনা ড্রামা সার্কেলের সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর চক্রবর্তী বলেন, আওয়ামী লীগ প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল। তাদের নেতৃত্বেই তাঁরা যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে আন্দোলন করেছেন। আওয়ামী লীগের এতজন সংসদ সদস্য জামায়াত নেতার বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ করতে পারেন, ভাবতেও কষ্ট লাগে। বিষয়টি লজ্জাজনক।

ঈশ্বরদী নাগরিক মঞ্চের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে গড়া দল আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ সরকারের দায়িত্বশীল পদে থেকে জামায়াতে ইসলামীর আমিরের বাড়িতে ১৪ জন এমপিকে সঙ্গে নিয়ে দাওয়াতে যোগ দিয়ে ডেপুটি স্পিকার ঠিক করেননি। এটা একটা ন্যক্কারজনক ঘটনা।’

ডেপুটি স্পিকার শামসুল হকের বাড়ি পাবনার বেড়া উপজেলা সদরে। জানতে চাইলে বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবদুর রশিদ বলেন, ‘আমরা যারা আওয়ামী লীগ করি তাদের কাছে বিষয়টি নীতিতে বাধে। আদর্শগতভাবেই আমরা মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাবিরোধী কোনো সংগঠনের নেতার বাড়িতে দাওয়াত খেতে পারি না।’