পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি ১৯০০ বাতিল করার দাবি পিসিএনপি’র
মোঃ হাবীব আজম, রাঙামাটি প্রতিনিধি:
পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি (চিটাগং হিল ট্র্যাক্ট ম্যানুয়েল-১৯০০) বাতিল, উচ্চ আদালত কর্তৃক মৃত আইন ঘোষণার রায়টি বলবত রাখার দাবি জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ (পিসিএনপি)।
আজ (১৫ মে) বুধবার সকালে এফএনএফ রেস্টুরেন্টে পিসিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি ও খাগড়াছড়ি জেলার যৌথ উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন পিসিএনপির চেয়ারম্যান কাজী মোঃ মজিবর রহমান।
এসময়ে উপস্থিত ছিলেন পিসিএনপি’র মহাসচিব মোঃ আলমগীর কবির, কেন্দ্রীয় সহ সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবদুল মজিদ, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক নিজাম উদ্দিন, খাগড়াছড়ি জেলা নবনির্বাচিত জেলা সভাপতি লোকমান হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক এস এম মাসুম রানা, সাংগঠনিক সম্পাদক মোকতাদের হোসেন, মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি সালমা আহমেদ মৌ, যুব পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি আসাদ উল্লাহ।
লিখিত বক্তব্যে কাজী মজিব বলেন, গত ৯ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের পূর্ন বেঞ্চে এই আইনকে মৃত আইন মর্মে ঘোষণা সংক্রান্ত রিভিউ শুনানি শুরু হয়েছে। পূর্ন বেঞ্চে প্রধান বিচারপতি সহ মোট আট জন বিচারপতি উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে। আগামী ১৬ মে ২০২৪ বৃহস্পতিবার মামলাটির চূড়ান্ত শুনানি হবে বলে জানানো হয়েছে। এই রায়টি চূড়ান্তভাবে বাতিল হলে পাহাড়ের জোরজুলুম ও বৈষম্যের হেডম্যান- কার্বারী ও সার্কেল চীফ প্রথার অবসান হবে। সাথে প্রথাগত অধিকারের দোহাই দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের সমগ্র ভূমির মালিকানা দাবিরও অবসান হবে। আদালতের রায়কে উপেক্ষা করে পাহাড়ে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করে জোর দেখিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি ১৯০০ সালের আইনটি বলবৎ রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছে পাহাড়ের সশস্ত্র আঞ্চলিকদল গুলো।
কাজী মজিব লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন, ব্রিটিশ কর্তৃক প্রণীত পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি বা পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন (চিটাগং হিল ট্র্যাক্ট ম্যানুয়েল ১৯০০) কে আইন হিসেবে ২০১৪ ও ২০১৬ সালে পৃথক দুই মামলার রায় দেয় সুপ্রীম কোর্টের পুর্ণ বেঞ্চ।
এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে সুপ্রীম কোর্টে রিভিউ করেছেন, খাগড়াছড়ি জেলার বাসিন্দা আব্দুল আজিজ আখন্দ ও আব্দুল মালেক। একাধিক আপিল শুনানির পর রায়টি উচ্চ আদালত বাতিল করে মৃত আইন হিসেবে রায় দেওয়া চূড়ান্ত ধাপে পৌঁছে। আগামীকাল ১৬ মে রায়টি নিয়ে বাতিলের চূড়ান্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হবে৷ তাই রায়টি বলবৎ করতে সন্ত্রাসী সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট ইউপিডিএফ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি মূলত রাষ্ট্রের আইনের বিরুদ্ধে ও সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। এক দেশে দুই ধরণের আইন থাকতে পারে না। এই তথাকথিত শাসনবিধি পার্বত্য চট্টগ্রামে রাষ্ট্রের ক্ষমতা খর্ব করেছে এবং দেশের প্রচলিত আইন অকার্যকর করেছে। তাই রাষ্ট্রের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি (চিটাগং হিল ট্র্যাক্ট ম্যানুয়েল ১৯০০) আইনটি সম্পূর্ণরূপে বাতিল করতে হবে।
এছাড়াও এসময় এসময় পার্বত্য চট্টগ্রামে কেএনএফ এর সন্ত্রাসী কর্মকান্ড নির্মূলে যৌথ বাহিনীর চলমান অভিযান দীর্ঘমেয়াদি অব্যাহত রাখার দাবিসহ চলমান উপজেলা নির্বাচনে নাগরিক পরিষদের মনোনীত সদর উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আসাদ উল্যাহ আসাদের প্রতীক- বই এর সমর্থনে সদর উপজেলার সর্বস্তরের জনগণের কাছে ভোট দেওয়ার আহবান জানানো হয়।