চট্টগ্রামে বিক্রয় হচ্ছে না নির্ধারিত দামে চাউল ব্যবসায়ীদের ইচ্ছেমতো দামেই বিক্রয় হচ্ছে সব রকমের চাউল।সরকারের পক্ষ থেকে বগুড়া জেলা প্রশাসনের নির্ধারিত দামে হচ্ছে না বিক্রি।যা ভোক্তা সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। এ নিয়ে কোন আপত্তি করলে উল্টো শুনিয়ে দিচ্ছে চালের দাম নিয়ে আরও অস্থিরতার সতর্কতা।সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম মহানগরীর সবকটি বাজারে চালের ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সাথে আলাপ করে এসব তথ্য জানা গেছে। চট্টগ্রাম বহদ্দারহাট চালের দোকানে চাল কিনতে আসা আবু জাফর (৫৪) বলেন, বাজারে সরকার নির্ধারিত দামে কোন চাল বিক্রয় হচ্ছে না।দোকানদার ইচ্ছেমতো দামে বিক্রয় করছে।
তিনি আরও জানান, চট্টগ্রামের খুচরা পর্যায়ে কাটারি ও মিনিকেট প্রতিকেজি চাল বিক্রয় হচ্ছে ৬৮ থেকে ৮২ টাকা পর্যন্ত। যা সরকারি নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ৩ থেকে ১৭ টাকা বেশি। ফলে চালের দাম এখন সাধারণ ভোক্তার ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। চাউল কেনা নিয়ে প্রতিনিয়ত হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ ভোক্তারা।বর্দ্দারহাট চালের দাম চড়া নিয়ে জানতে চাইলে মক্কা রাইচের মালিক ইমরান হোসেন বলেন, চাল নিয়ে সরকার যাই বলুক, সেগুলো শুনছে না কেউ। আড়ত থেকে চড়া দামে কিনে আনি, সে হিসেবে প্রতিবস্তায় ১০০ টাকা লাভে বিক্রয় করি। চাউলের বাজারের পরিস্থিতি ভাল নয়। সামনে আরও বাড়তে পারে।চট্টগ্রামের বৃহৎ চালের বাজার পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাবেক সাধারণ সস্পাদক মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন বলেন, চালের দাম নির্ধারণ করে দিয়ে তো কোন লাভ হয়নি। আমরা এর সুফল পাচ্ছি না। মিলাররা আমাদের কাছে বাড়তি দরেই চাল বিক্রি করছে। ফলে বাড়তি দরে আমরাও বিক্রয় করছি।তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রামে চাউলের অধিকাংশ চাহিদা পূরণ হয় বগুড়ার মিলারদের চাউলে। মিলাররই নিয়ন্ত্রণ করে চাউলের বাজার। সামনে রোজা। কাজেই বাজারদর আরও বাড়তে পারে।বাজার স্থিতিশীল রাখতে হলে সরকারের কর্মকর্তারা যেভাবে তদারকি করছেন সেটা অব্যাহত রাখতে হবে।অসাধু ব্যবসায়ীদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। প্রকৃত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।গত ২৪ জানুয়ারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে চাউলের দাম নির্ধারণ করে দেন বগুড়ার জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম। সেদিন কাটারি ও মিনিকেট চাউল মিলার পর্যায়ে ৬২ টাকা, পাইকারি পর্যায়ে ৬৩ টাকা ও ভোক্তা পর্যায়ে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।
ওই সময় বগুড়ার জেলা প্রশাসক চাউলের দাম বেশি নিলে ব্যবসায়ী ও চাউল নিয়ে গুজবকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।চট্টগ্রামের চাউলের আড়তদাররা বলছেন, মিলাররা চাউলের দাম ধরে রেখেছেন। কম দামে চাল পাওয়া যাচ্ছে না। ৬২ টাকা করে বিক্রি করার জন্য বললেও তারা সেটা মানছেন না। মিলাররাই বিক্রি করছেন ৫০ কেজির প্রতিবস্থা ৩ হাজার ২০০ টাকায়। প্রতি বস্তায় ৭০ থেকে ৭৫ টাকা গাড়ি ভাড়া আছে। কাজেই পাইকারি পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৩০০ টাকা। আর খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৪০০ টাকায়।চাক্তাই চাউল ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাধারণ সস্পাদক ওমর আজম বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বাড়তি দরে চাউল বিক্রি করছেন। একজন আড়তদারকে বাড়তি দরে চাউল কিনতে হচ্ছে। তাহলে ভোক্তার হাতে যেতেই দাম বেড়ে যাবে। এটাই স্বাভাবিক।আমরা মনে করি, তদারকিটা সব জায়গায় সমানভাবে হওয়া দরকার।কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, অসাধু ব্যবসায়ীরা এক রাতেই মুনাফা করে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যেতে চায়। এই প্রবণতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। নিয়ম মেনে সরকার, জনগণ সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে। কাজেই প্রশাসনের উচিত আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া।