কমেছে সবজির দাম, স্বস্তি নেই পেঁয়াজে
জাগো জনতা অনলাইন।। বাজারে সরবরাহ ভালো থাকায় গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে কমছে সবজির দাম। হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়া পেঁয়াজের দামও আমদানির খবরে কমতে শুরু করেছে। বিক্রেতারা বলছে নদীর মাছের সরবরাহ কম থাকায় গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে বেড়েছে মাছের দাম।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর কারওয়ানবাজার ও নিউমার্কেটসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলোতে ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ সপ্তাহে সবজি বাজারে সরবরাহ ভালো থাকায় দাম কমেছে।
এদিকে বাজারে অস্থিরতা কমাতে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। ভারত থেকে দেশে আসছে পেঁয়াজও। এছাড়া নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ উঠতে শুরু করায় বাজারে বাড়ছে সরবরাহ। আমদানির খবরে মাঝে কয়েকদিন দাম কমলেও ফের চড়া হয়েছে পেঁয়াজের বাজার।
বর্তমানে খুচরা পর্যায়ে প্রতিকেজি পুরান দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। ভারতীয় পেঁয়াজ ১৪০ টাকা ও নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজের জন্য গুনতে হচ্ছে ১০০ টাকার ওপরে। ক্রেতারা বলছেন, আমদানির পরেও বাজারে কমেনি পেঁয়াজের দাম। অসাধু ব্যবসায়ীরা বাজার থেকে অতিরিক্ত মুনাফা লুটে নিচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি করার পরও চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। তাই পেঁয়াজের দাম কমছে না। পাইকারিতে বর্তমানে প্রতিকেজি পুরান দেশি পেঁয়াজ ১৪০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ১২০ টাকা ও নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়।
এখন বাজারে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫০ থাকে ৭০ টাকা, সিম ৫০ টাকা, মূলা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, দেশি শশা ৬০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, গাজর (দেশি) ৬০ থেকে ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৩০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, টমেটো ৮০ থেকে ১০০ টাকা, শালগম ৪০ টাকা, কাঁচমরিচ ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপির পিস ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, প্রতি পিস জালি কুমড়া ও লাউ ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং জলপাই ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজের সরবরাহ বৃদ্ধি এবং আমদানির খবরে দাম কমেছে পুরাতন পেঁয়াজের। এ সপ্তাহে দেশি পুরাতন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়, গত সপ্তাহে ছিল ১৫০ টাকা। নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। গত সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। রসুন (দেশি) ১০০ টাকা ও আদা ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বেড়েছে মাছের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে বেড়েছে চাষের মাছের দাম। নদীর মাছের দাম ও বাড়তি রয়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে প্রায় চাষের মাছে কেজি প্রতি গড়ে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
এ সপ্তাহে বাজারে মাঝারি আকারের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। চাষের পাঙ্গাস আকার অনুযায়ী কেজি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা, মাঝারি আকারের কৈ মাছ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, দেশি শিং ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, বড় সাইজের পাবদা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, ৪০০ গ্রাম ওজনের পদ্মার ইলিশ ১২০০ টাকা এবং চট্টগ্রামের ইলিশ ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
স্বাভাবিক হয়েছে মুরগির দাম গত সপ্তাহের মতো এ সপ্তাহে ও বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। সোনালি জাতের মুরগির বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩২০ টাকায়। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকায়। প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়।
বনশ্রী বাজারের নাইম শেখ নামের এক ক্রেতা বলেন , “শীতকালীন সবজির দাম ঠিক আছে। কিন্তু অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়তি। আমাদের মত যারা নির্ধারিত বেতনে চাকরি করি তাদের জন্য চাহিদা মতো মাছ মাংস খাওয়া কষ্টকর। মুদ্রাস্ফীতির যাঁকাতলে পড়ে জীবন শেষ। বাসা ভাড়া দেওয়ার পর বাকি মাস চলার মতো অবস্থা থাকে না। সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা সমন্বয় করেছে সরকার। কিন্তু বেসরকারি খাতে কোনো সমন্বয় নেই।”
কারওয়ান বাজারের মাছ ব্যবসায়ী টিপু মিয়া বলেন, “গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে চাষের মাছের দাম বেড়েছে। মাছের জাত ও আকার অনুসারে দাম বেড়েছে। গড়ে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এ সপ্তাহে নদীর মাছের দাম বাড়তি।”










