ঢাকা | ডিসেম্বর ৮, ২০২৫ - ৯:১৬ অপরাহ্ন

মিরসরাই হানাদার মুক্ত দিবস ৮ ডিসেম্বর 

  • আপডেট: Monday, December 8, 2025 - 7:28 pm

মিরসরাই প্রতিনিধি।

মিরসরাই হানাদার মুক্ত দিবস ৮ ডিসেম্বর । ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর মিরসরাই অঞ্চল শত্রুমুক্ত হয়েছিল। ওই দিন মিরসরাইয়ের মুক্তিকামী জনতা পাকবাহিনী ও তাদের দোসরদের হটিয়ে মিরসরাইকে শত্রুমুক্ত করেছিলেন।

দীর্ঘদিন চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যের সঙ্গে পালন করা হলেও সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে গত বছর দিবসটি উদযাপনে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তারই ধারাবাহিকতায় এ বছরও দিনটি উদযাপনে নেই কোনো উদ্যোগ।

জানা গেছে, ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর সকালে মুক্তিযোদ্ধা জাফর উদ্দিন আহম্মদের বিএলএফ গ্রুপের মুক্তিযোদ্ধাসহ প্রায় দু’শ মুক্তিযোদ্ধা মিরসরাই সদরের পূর্ব দিক ছাড়া বাকি তিন দিক ঘিরে ফেলে। বেলা প্রায় ১১টার দিকে মুক্তিযোদ্ধারা তিন দিক থেকে সংগঠিত হয়ে শত্রুর বিরুদ্ধে একযোগে আক্রমণ শুরু করে। শুরু হয় পাক সেনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের গুলি বিনিময়। পাক সেনাদের অবস্থান ছিল মিরসরাই হাই স্কুল, মিরসরাই থানা, মিরসরাই সি.ও. অফিস। বৃষ্টির মতো গুলি বিনিময়ের এক পর্যায়ে পাক সেনারা পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধারা থানায় প্রবেশ করে পাক সেনাদের আটটি রাইফেল উদ্ধার করে। পাক সেনারা চট্টগ্রামের দিকে পালিয়ে গেছে বলে পরে জানা যায়। চট্টগ্রামের কোনো অঞ্চল তখনো মুক্তির স্বাদ পায়নি। ‘মিরসরাই শত্রুমুক্ত হয়েছে’—এ কথা বাতাসে দ্রুত ছড়িয়ে যায় মিরসরাইয়ের সর্বত্র। মুহূর্তেই চারদিক থেকে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে মুখরিত মিছিল আসতে থাকে। হাজারো জনতার ঢল নামে মিরসরাই হাই স্কুল মাঠে। মৌলভী শেখ আহম্মদ কবির কোরআন তেলাওয়াত করেন। পরে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা জাফর উদ্দিন আহাম্মদ চৌধুরীসহ সবাই জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। ঘোষণা করা হয় মিরসরাই ভূখণ্ড পাকবাহিনীমুক্ত একটি স্বাধীন এলাকা। সে থেকে ৮ ডিসেম্বর মিরসরাইয়ে উদ্যাপিত হয়ে আসছে হানাদারমুক্ত দিবস।

মিরসরাই উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ লিয়াকত আলী বলেন, ‘রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে গত বছর কোনো আয়োজন করা হয়নি। যেটি একসময় এই দিনটি আঞ্চলিকভাবে পালন করা হতো। তাছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের বয়স হয়ে গেছে। তাছাড়া প্রোগ্রাম করতে আর্থিক ফান্ডসহ নানারকম সংকট রয়েছে। শুধু বধ্যভূমিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে।’

মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোমাইয়া আক্তার জানান, ‘মুক্তিযোদ্ধারা বড় কোনো প্রোগ্রাম করছে না। বধ্যভূমিতে ফুল দেবে। তাছাড়া এটি কোনো জাতীয় দিবস না, স্থানীয় ইতিহাসের একটি অংশ। প্রতি বছর এখানকার মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের প্রজন্মের উদ্যোগে দিবসটি উদযাপন করা হতো। উপজেলা প্রশাসন সবসময় সহযোগিতা করতো। এবছর মুক্তিযোদ্ধা অথবা তাদের প্রজন্মের কেউ যোগাযোগ করেনি। তারা যদি করতে চায় তাহলে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো।’