বাংলার মাটিতে আর কোনো ফ্যাসিবাদ বরদাশত করা হবে না-জামায়াত আমির
নিজস্ব প্রতিবেদক।
চট্টগ্রামের লালদিঘীতে ৮ দলীয় জোটের বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ফ্যাসিবাদীরা বিদায় নিয়েছে, ফ্যাসিবাদ এখনো বিদায় নেয়নি। ফ্যাসিবাদ কালো হোক বা লাল বাংলার জমিনে আর কোনো ফ্যাসিবাদ বরদাশত করা হবে না, ইনশাআল্লাহ।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলের এ সমাবেশে তিনি বলেন, কেউ যদি আবার ফ্যাসিবাদের ভাষায় কথা বলেন বা আচরণ করেন, তারা কোনো পথ খুঁজে পাবেন না। দেশের তরুণ, ছাত্র-জনতা ও মেহনতি মানুষ ফ্যাসিবাদকে আর সহ্য করবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, অতীতেও ফ্যাসিবাদ প্রতিহত করা হয়েছিল আল্লাহর ওপর ভরসা করে, ভবিষ্যতেও কেউ মাথা তুললে তা রুখে দেওয়া হবে, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আমরা কোনো বিশেষ দলের বিজয় চাই না, ৮ দলেরও বিজয় চাই না। আমরা চাই বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের আকাঙ্ক্ষার বিজয়—যা হবে কোরআনের আইনের মাধ্যমে। বাংলাদেশের অগ্রগতির একমাত্র পথ এটাই প্রমাণিত হয়েছে।”
তিনি অভিযোগ করেন, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত দেশের মানুষ স্বস্তিতে কথা বলতে পারেনি। মানুষের জীবনের নিরাপত্তা ছিল না, বিচার মিলেনি, দেশের বিপুল অর্থ লুণ্ঠন করে বিদেশে পাচার করা হয়েছে—যার পরিমাণ ২৮ লাখ কোটি টাকা বলেও দাবি করেন তিনি।
জামায়াত আমির বলেন, “এরা রক্তাক্ত হাতে ক্ষমতায় এসেছিল, রক্তাক্ত হাতে বিদায় নিয়েছে। ক্ষমতায় আসার পর পিলখানায় ৫৭ জন মেধাবী সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করেছে। আমাদের সন্তানদের হত্যার পর তারা বলেছিল—অমুকের মেয়ে দেশ ছেড়ে পালায় না। অথচ…”
তিনি আরও বলেন, সেনাবাহিনী, পুলিশসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করার চেষ্টা করা হয়েছে। বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন ও মানবাধিকার কমিশনকে ধ্বংস করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এর আগে দুপুর পৌনে ২টার দিকে সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হয়। বেলা ১২টা থেকে সমাবেশস্থলে লোকজন জড়ো হতে থাকে এবং লালদিঘী মাঠেই জুমার নামাজ আদায় করেন উপস্থিতরা।
সমাবেশে বক্তব্য দেন নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম (শায়েখে চরমোনাই), বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হকসহ ৮ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা।
৮ দলের ঘোষিত পাঁচ দফা দাবি হলো—
১. জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজন
২. জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি চালু
৩. অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সমান সুযোগের পরিবেশ নিশ্চিত করা
৪. বিগত সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা
৫. স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে অভিযুক্ত জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা











