ঢাকা | ডিসেম্বর ১, ২০২৫ - ৯:৩১ অপরাহ্ন

শিরোনাম

বান্দরবানে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার বদলি আদেশ বাতিলের দাবিতে পিসিসিপির স্মারকলিপি

  • আপডেট: Monday, December 1, 2025 - 8:14 pm

জমির উদ্দিন।

বান্দরবানে সদ্য বদলীকৃত বরগুনা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ জসীম উদ্দীনের বদলি আদেশ বাতিলের দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি), বান্দরবান পার্বত্য জেলা শাখা। অভিযুক্ত এই শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একাধিক অনৈতিক কর্মকাণ্ড, অসদাচরণ ও নারী-শিশু নির্যাতন মামলার ওয়ারেন্টসহ নানা অভিযোগ রয়েছে বলে সংগঠনটির দাবি।

রোববার (০১ ডিসেম্বর, ২০২৫) বিকাল ৩টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সংগঠনের জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মিছবাহ উদ্দীনের নেতৃত্বে স্মারকলিপি প্রদান করেন জেলা সিনিয়র সহ-সভাপতি জমির উদ্দীন, সহ-সভাপতি জানে আলমসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

স্মারকলিপি প্রদানকালে মিছবাহ উদ্দীন বলেন, বান্দরবান একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ও ভৌগোলিক এলাকা হলেও দীর্ঘদিন ধরে এ জেলাকে “শাস্তিমূলক বদলি”র গন্তব্য হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, যা জেলার প্রতি বৈষম্যমূলক ও অপমানজনক প্রশাসনিক সংস্কৃতি তৈরি করেছে। তিনি অভিযোগ করেন, বরগুনায় দায়িত্ব পালনকালে মোহাম্মদ জসীম উদ্দীনের বিরুদ্ধে পরকীয়া, প্রতারণা, অসদাচরণ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় পরোয়ানাভুক্ত থাকার মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।

বাদীপক্ষের অভিযোগ অনুযায়ী, বরগুনার ফুলঝুড়ি ইউনিয়নের এক প্রবাসী স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন জসীম উদ্দীন এবং পরবর্তীতে তাকে তালাক নিতে বাধ্য করেন। পরে দশ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে করলেও প্রথম স্ত্রী বিষয়টি জানতে পারলে পারিবারিক দ্বন্দ্ব শুরু হয়। পরবর্তীতে দ্বিতীয় স্ত্রী লাভলী আক্তার নিপা গত ৫ অক্টোবর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে ১ কোটি ২২ লাখ ৬৬৬ টাকার মামলা দায়ের করলে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

পিসিসিপি নেতারা জানান, অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিকদের ওপর ক্ষমতার অপব্যবহার করে হয়রানি ও মিথ্যা মামলা দিয়েছিলেন জসীম উদ্দীন। এ ঘটনায় বরগুনায় সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষের উদ্যোগে ০৯ নভেম্বর মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

পিসিসিপি নেতাদের দাবি, এ ধরনের বিতর্কিত ও অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে বান্দরবান জেলার শিক্ষা প্রশাসনের দায়িত্বে নিয়োগ দেওয়া জেলার শিক্ষাব্যবস্থার জন্য হুমকি এবং নৈতিকতার চরম অবক্ষয়ের কারণ হবে। তারা হুঁশিয়ারি দেন, বদলি আদেশ বাতিল না হলে ছাত্রসমাজ, শিক্ষক, অভিভাবক এবং সচেতন নাগরিকদের নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি, জেলা শিক্ষা অফিস ঘেরাওসহ শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

স্মারকলিপিতে তারা পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন—
১. জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ জসীম উদ্দীনের বান্দরবান বদলির আদেশ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
২. শাস্তিমূলক বদলির নামে পার্বত্য জেলাগুলোকে অবমাননার অপসংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে।
৩. পার্বত্য জেলায় বদলি ও নিয়োগে স্বচ্ছতা, যোগ্যতা ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. অভিযোগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অভিযোগের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকবেন—এমন নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে হবে।
৫. ভবিষ্যতে যে কোনো শাস্তিমূলক বদলির তালিকা থেকে বান্দরবান জেলার নাম বাদ দিতে হবে।