ঢাকা | অক্টোবর ১৩, ২০২৫ - ৫:৩৫ অপরাহ্ন

শিরোনাম

পানছড়ির শান্তিপুর অরণ্য কুটিরে দানোত্তম কঠিন চীবর দান উৎসব উদযাপন

  • আপডেট: Saturday, October 11, 2025 - 7:33 pm

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি।

ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও নানা আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার শান্তিপুর অরণ্য কুটিরে অনুষ্ঠিত হয়েছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব দানোত্তম কঠিন চীবর দান।

বিশ্ব শান্তি ও মঙ্গল কামনায় আয়োজিত এ উৎসব শুরু হয় শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিকাল থেকে। মনোঘর জুম থেকে তুলা সংগ্রহের মাধ্যমে শুরু হয় ঐতিহ্যবাহী চীবর তৈরির প্রক্রিয়া। এরপর পর্যায়ক্রমে তুলা থেকে বীজ পৃথক করা, চরকার মাধ্যমে সুতা তৈরি, সুতা সিদ্ধ ও রঙ করা, শুকানো এবং রাতভর কাপড় বুননের পর শনিবার ভোরে সম্পন্ন হয় চীবর সেলাই।

শনিবার (১১ অক্টোবর) সকালে পূজনীয় ভিক্ষুসংঘ, শ্রামণসংঘ ও অষ্টশীল পালনকারীদের প্রাতঃ পিণ্ডদান, বৌদ্ধ পতাকা উত্তোলন, বুদ্ধ পূজা ও সীবলী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয় দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রম। পরে কল্পতরু দান ও ধর্মদেশনা শোনেন বৌদ্ধ নর-নারীরা।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজবন বিহার, রাঙ্গামাটির আবাসিক প্রধান প্রজ্ঞা লংকার মহাস্থবির।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন—
শাসনরক্ষিত মহাস্থবির, অধ্যক্ষ, শান্তিপুর অরণ্য কুটির;
মহামিত্র মহাস্থবির, অধ্যক্ষ, ধর্মচক্র অরণ্য কুটির, রামগড়;
বিমলান্দ মহাস্থবির, মৈত্রীপুর বন ভাবনা কেন্দ্র, ইটছড়ি, খাগড়াছড়ি;
দেবমিত্র মহাস্থবির, রাজবন বিহার, রাঙ্গামাটি।
এছাড়াও খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি জেলার বিভিন্ন অরণ্য কুটিরের মহাস্থবিরগণ উপস্থিত ছিলেন।

দিনব্যাপী আয়োজনে মূল আকর্ষণ ছিল কঠিন চীবর দান—যেখানে মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা, সুতা থেকে কাপড় বুনে তৈরি করা হয় চীবর, যা পরে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধেয় বস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

বৌদ্ধ শাস্ত্র মতে, গৌতম বুদ্ধের অনুগামী মহা উপাসিকা বিশাখা কর্তৃক প্রবর্তিত এই কঠিন চীবর দান রীতি সবচেয়ে পবিত্র ও পুণ্যময় দান হিসেবে বিবেচিত।

উৎসব উপলক্ষে শান্তিপুর অরণ্য কুটিরে সমবেত হন হাজারো নারী-পুরুষ, ভিক্ষু ও উপাসক-উপাসিকারা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শান্তিপুর অরণ্য কুটিরের প্রধান উপদেষ্টা সমীর দত্ত চাকমা, সহ-সভাপতি অসেতু বিকাশ চাকমা, সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চাকমাসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

উৎসব শেষে অংশগ্রহণকারীরা বিশ্ব শান্তি, মানবকল্যাণ ও সহমর্মিতার বার্তা ছড়িয়ে দিতে একযোগে প্রার্থনায় অংশ নেন।