ঢাকা | অক্টোবর ৬, ২০২৫ - ৯:০৬ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ, অবস্থান জানালো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ

  • আপডেট: Wednesday, September 24, 2025 - 9:31 am

ঢাবি সংবাদদাতা।। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন-২০২৫ নিয়ে দাখিল হওয়া আবেদনপত্র ও অভিযোগ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের অবস্থান জানিয়েছে।

গত সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) একটি ছাত্রসংগঠন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিভিন্ন অভিযোগ উত্থাপন করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিস্তারিত বক্তব্য তুলে ধরা হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি পাঠিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের উপ-পরিচালক ফররুখ মাহমুদ। এতে বলা হয়েছে, নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জমা পড়া আবেদনপত্র ও দরখাস্তগুলো সতর্কতার সঙ্গে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে।

প্রয়োজনে আইনগত মতামতও নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি আবেদনপত্র আলাদাভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করে সংশ্লিষ্ট সবাইকে উত্তর দেওয়া হবে। তবে সংবাদ সম্মেলনে যে অভিযোগগুলো তোলা হয়েছে, সেগুলো সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট করা প্রয়োজন বলে কর্তৃপক্ষ মনে করছে।

সিসিটিভি ফুটেজ প্রসঙ্গে
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, কয়েকজন আবেদনকারী নির্বাচনের দিন ধারণকৃত সিসিটিভি ফুটেজ সম্পূর্ণভাবে দেখতে চেয়েছেন।

কিন্তু সিসিটিভি ফুটেজ কোনো পাবলিক ডকুমেন্ট নয়, এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংরক্ষিত একটি আমানত। প্রয়োজন হলে নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে এটি সাক্ষ্য বা প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। তবে অনেক দরখাস্ত অস্পষ্ট (vague) এবং সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই সাধারণ প্রশ্নমালা বা অত্যন্ত ব্যাপক বিষয়ে ফুটেজ চাওয়ার কথা বলা হয়েছে। এই অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবেদন মঞ্জুর করতে পারছে না।

তবে বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করা হয়েছে, কোনো প্রার্থী যদি নির্দিষ্ট সময় ও প্রাসঙ্গিক ঘটনা উল্লেখ করে যথাযথ প্রক্রিয়ায় আবেদন করেন, তাহলে কর্তৃপক্ষ মনোনীত বিশেষজ্ঞ বা ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে নির্ধারিত স্থানে ফুটেজ দেখার সুযোগ পাবেন।

ভোটার তালিকা প্রসঙ্গে
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভোটারদের স্বাক্ষরিত তালিকা অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও গোপনীয় (private document)। ডাকসু নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী এই তালিকা সরবরাহের কোনো নিয়ম নেই। শিক্ষার্থীরা ভোটগ্রহণের সময় প্রাথমিক তথ্য দিয়ে যে তালিকায় স্বাক্ষর করেছেন, সেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে সংরক্ষিত থাকবে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থে এই তালিকা প্রকাশ করা সম্ভব নয়।

বিজ্ঞপ্তির ব্যাখ্যা অনুযায়ী, আবেদনকারীরা তালিকার প্রয়োজনীয়তা ও উদ্দেশ্য স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেননি। ফলে অস্পষ্ট ও সারবত্তাহীন আবেদনের ভিত্তিতে এ তালিকার কপি দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।

ব্যালট পেপার মুদ্রণ প্রসঙ্গে
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ব্যালট পেপার ছাপানোর দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের পরিচয় সচেতনভাবে গোপন রাখা হয়েছে, যা একটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রক্রিয়া। প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রের মাধ্যমে দীর্ঘ অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে ব্যালট মুদ্রণের কাজ দেওয়া হয়।

দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ব্যালট পেপার মুদ্রণের পর ওএমআর মেশিনে প্রি-স্ক্যানিং করে পাঠযোগ্যতা (machine readability) নিশ্চিত করে সিলগালা করা অবস্থায় সরবরাহ করেছে। নির্বাচনের প্রতিটি ধাপ কঠোর তদারকির আওতায় ছিল। ভোট গ্রহণের আগে খালি ব্যালট বাক্স পরীক্ষা করা হয় এবং পরে সিলগালা করা হয়। নির্বাচনী পর্যবেক্ষক, প্রার্থীদের এজেন্ট, সাংবাদিক কেউই ব্যালট পেপার নিয়ে কোনো অভিযোগ তুলেননি।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বণ্টিত ব্যালট পেপার ও প্রদত্ত ভোটের সংখ্যার কোনো গরমিল পাওয়া যায়নি। ভোট গ্রহণ বা গণনার সময় কোনো অসামঞ্জস্য ঘটলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতাম। কিন্তু এরকম কিছু ঘটেনি। সুতরাং নির্বাচনের দুই সপ্তাহ পর ব্যালট পেপার অরক্ষিত থাকার অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই।’

আবেদনপত্রের নিষ্পত্তি প্রসঙ্গে
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, সব আবেদন ও অভিযোগ ইতোমধ্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে প্রতিটি আবেদনকারীকে জবাব ও সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।