মিরপুর কালশীতে জনগণের চলাচলের রাস্তা বন্ধ: এলাকাবাসীর মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক।। রাজধানীর মিরপুর কালশীর বাউনিয়া মৌজার ছায়ানীড় আবাসিক এলাকার প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের একমাত্র চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে ন্যাশনাল হাউজিং অথরিটি। এ ঘটনায় গত শনিবার এলাকাবাসী মানববন্ধন করে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
ভুক্তভোগীরা জানান, ক্ষুদ্র সঞ্চয়ে যৌথভাবে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে তারা প্রায় ১০ বছর ধরে এ রাস্তা ব্যবহার করছেন। কিন্তু ন্যাশনাল হাউজিং কর্তৃপক্ষ গত ৩১ আগস্ট (২০২৫) সিএস ৩১২৮ দাগ পরিমাপ করে ৪০ ফিট রাস্তার তিন-চতুর্থাংশ নিজেদের দাবি করে চিহ্নিত করে। পরে ৮ সেপ্টেম্বর ভেকু দিয়ে রাস্তা কেটে ফেলে এবং ইটের প্রাচীর তুলে জনগণের চলাচল বন্ধের চেষ্টা চালানো হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, “আমরা কোনো ভূমিদস্যু নই, সরকারি জায়গা দখল করিনি। শুধু চলাচলের জন্য রাস্তা উন্মুক্ত চাই। যখন জমি কিনেছিলাম, বিক্রেতারা এই ৪০ ফিট রাস্তার কথা দেখিয়েছিল। এখন হঠাৎ তা বন্ধ করে দিলে আমরা ঘরে ফিরব কিভাবে?”
এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে মো. কামরুজ্জামান বলেন, “EASEMENT ACT-১৮৮২ অনুযায়ী জনগণের অত্যাবশ্যক পথাধিকার রয়েছে। সরকারি জায়গা জনগণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে।”
ভুক্তভোগীরা আরও জানান, গত ৯ সেপ্টেম্বর তারা ন্যাশনাল হাউজিং অথরিটি, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক, জেলা প্রশাসক (ঢাকা) এবং পল্লবী থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। তবে চার-পাঁচ দিন পেরিয়ে গেলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাষ্ট্রীয় Easement Act অনুযায়ী দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত রাস্তা বন্ধ করা যায় না। জনগণের চলাচলের স্বার্থ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবে।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, “আমরা সাধারণ প্রান্তিক মানুষ। রাস্তা বন্ধ হয়ে গেলে আমাদের জীবন অচল হয়ে পড়বে। তাই মানবিক কারণে পথটি উন্মুক্ত রাখা জরুরি।”
আমাদের অনুসন্ধানে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত এই রাস্তা হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়ার পেছনে প্রশাসনিক জটিলতা ও পরিকল্পনার সমন্বয়হীনতা থাকতে পারে। পাশাপাশি ভূমি বাণিজ্যের প্রভাব থাকার আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।