সংকটে বেলকুচি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

মো. কামরুল ইসলাম,সিরাজগঞ্জ।। সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন ধরেই চিকিৎসক, নার্স ও কারিগরি কর্মীর চরম সংকট চলছে। ফলে প্রতিদিন শত শত রোগী চিকিৎসা নাপেয়ে ফিরে যাচ্ছেন, অথবা উচ্চ ব্যায়ে প্রাইভেট ক্লিনিক বা জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছেন। এই সংকট স্বাস্থ্যসেবার মানকে শুধু প্রশ্ন বিদ্ধই করছে না, বরং জনস্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
৫০ শয্যা বিশিষ্ট এই সরকারি হাসপাতালটি উপজেলার প্রায় চার লাখ মানুষের একমাত্র চিকিৎসা নির্ভরতা। ৫৪ জন কর্মীর মধ্যে ২৪ জন কর্মী আছে। কিন্তু বাস্তব চিত্র হলো, হাসপাতালে গুরুত্বপূর্ণ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ শূন্যপড়ে আছে। গাইনী, সার্জারি, মেডিসিন ও শিশু বিভাগের কোনো বিশেষজ্ঞই নেই। সাধারণ রোগীদেরও উপযুক্ত চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
এদিকে হাসপাতালের এক্স-রে ও আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন দীর্ঘদিন ধরে অচল অবস্থায় পড়ে আছে। জরুরি বিভাগের রোগীরা পরীক্ষা করাতে বাধ্য হচ্ছেন বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে, যেখানে অনেক সময় অতিরিক্ত খরচ ও ভুল রিপোর্টের ঝুঁকি থাকে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, হাসপাতালের পরিবেশও অত্যন্ত নোংরা ও দুর্গন্ধযুক্ত। বাথরুমগুলো ব্যবহারের অযোগ্য, ময়লার স্তূপ চারপাশে জমে আছে। এমনকি দেখা গেছে, অদক্ষ কর্মী যেমন পরিচ্ছন্নতা কর্মী বা মালি ইনজেকশন, ব্যান্ডেজ কিংবা সেলাইয়ের কাজ করছে। এছাড়া হাসপাতালের দুটি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে একটি বহুদিন ধরে অকেজো, আরেকটির অবস্থাও ঝুঁকিপূর্ণ। রোগী পরিবহনের জন্য কোনো বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় গুরুতর রোগীদের জীবন নিয়ে বিপদের মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
এদিকে দালালচক্রের দৌরাত্ম্যেও হাসপাতালের সেবা ব্যাহত হচ্ছে। রোগীদের বাইরে নিয়ে গিয়ে অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা করে কমিশন ভিত্তিক বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, একাধিকবার লিখিত অভিযোগ ও গণস্বাক্ষর নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন আসেনি।
বেলকুচি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ আসফিয়া সাবেরীন বলেন,
জনবল সংকট, বিশেষজ্ঞ ডাক্তার তিন জনকে দিয়ে রোগী সেবা দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দুইটা অ্যাম্বুলেন্স একটা অকেজ হয়ে পড়ে আছে। একটা দিয়ে কোন রকম ভাবে মাঝে মধ্যে সার্ভিসিং করে চালানো হচ্ছে। আমার উর্দ্ধতন কর্মকর্তার কাছে আবেদন করা আছে, যে কোন সময় নতুন একটা অ্যাম্বুলেন্স বরাদ্দ হবে।