ঢাকা | আগস্ট ২৩, ২০২৫ - ৫:২২ অপরাহ্ন

শিরোনাম

কাজীপুর তেকানী ইউনিয়ন সচিবের ‎বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

  • আপডেট: Sunday, August 17, 2025 - 12:12 pm

মো. কামরুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ।। সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার তেকানী ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (সচিব) আব্দুল হালিমের বিরুদ্ধে ঠিকভাবে অফিস না করা ও জন্মনিবন্ধনসহ বিভিন্ন সেবার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।

সেবাগ্রহীতারা জানান, রোববার সকালে থেকে অফিসে এসে বসে আছি। কিন্তু তিনি আসেননি। এর আগে দেখেছি সচিব নিয়মিত অফিসে উপস্থিত থাকেন না। সপ্তাহে মাত্র দুই-তিন দিন আসেন, বাকী দিনগুলো ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত থাকেন। এ কারণে ইউনিয়ন পরিষদের সেবা কার্যক্রম ঠিক ভাবে না চললেও সংশ্লিষ্টদের তৎপরতা নেই। ফলে অনেকেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে নির্দিষ্ট সময়ে সেবা না পেয়ে ক্ষোভ নিয়ে ফিরে যান।

তথ্যমতে, ২০১৫ সালের ১৮ মে তিনি তেকানী ইউনিয়ন পরিষদে যোগদান করেন। তিনি প্রায় ১০ বছর ধরে একই কর্মস্থলে দায়িত্ব পালন করছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, জন্মনিবন্ধনের ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত ফি’র বাইরে সচিব অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী শিশুর জন্ম থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে জন্মনিবন্ধন ফ্রি ৫ বছর পর্যন্ত ২৫ টাকা, ৫ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য ৫০ টাকা, সংশোধনের ক্ষেত্রে ১০০ টাকা কিন্তু সচিব আব্দুল হালিম প্রতিটি জন্মনিবন্ধনের জন্য ১৫০ টাকা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া নাগরিকত্ব সনদ, ওয়ারিশ সনদ, চেয়ারম্যান প্রত্যয়নপত্র ও ট্রেড লাইসেন্সের ক্ষেত্রেও নির্ধারিত ফি’র বাইরে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ করেছেন সেবাগ্রহীতারা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সেবাগ্রহীতা বলেন, আমি দুই ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছি, কিন্তু সচিবের দেখা পাইনি। এর আগেও একবার এসে একই অভিজ্ঞতা হয়েছে। তিনি নিয়ম-কানুন মানেন না।

এ বিষয়ে তেকানী ইউনিয়ন পরিষদের একজন ইউপি সদস্য জানান, সচিব মাঝে মধ্যে অফিসে আসেন, আর যেদিন আসেন সেদিনও দেরি করে প্রবেশ করেন।

গ্রাম পুলিশ বলেন, গত সপ্তাহে সচিব কেবল রবিবার ও বৃহস্পতিবার অফিস করেছেন। কাজ থাকলে আসেন, না হলে আসেন না।

অভিযোগ বিষয়ে সচিব আব্দুল হালিমের কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনার কাছে যদি তথ্য থাকে, তাহলে নিউজ করেন। ইতিপূর্বে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েও কেউ কিছু করতে পারেনি। শুধু আমাকে ভয় দেখায়। এ জায়গায় আপনি থাকলেও একই কাজ করতেন।

এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক ফয়সাল আহমেদ বলেন, সচিবের বিরুদ্ধে অনুপস্থিতি ও অতিরিক্ত ফি’র বিষয়ে এর আগে কেউ অভিযোগ করেনি। ফলে কোন ব্যবস্থা নেইনি। আমি প্রশাসক হিসেবে নতুন যোগদান করেছি তদন্তে প্রমাণ হলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অ. দা.) মো. হুমায়ুন কবিরের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আপনার কাছ থেকেই প্রথম শুনলাম। দ্রুতই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

সিরাজগঞ্জের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম  বলেন, কর্মে ফাকি ও সরকারি ফি ব্যতিত অতিরিক্ত অর্থ নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। বিষয়টি  উপজেলা ইউএনওকে অবহিত করা হয়েছে।