২ টাকার ফুলকপি ঢাকা পোঁছালে ২৫ টাকা

জাগোজনতা অনলাইন : যশোরের চৌগাছায় ফুলকপি ২ থেকে ৫টাকা প্রতি পিস দরে পাইকারি বিক্রি হলেও হাত বদলেই পাইকারি বাজারের মধ্যে অবস্থিত খুচরা বিক্রি কেন্দ্রে ২০ থেকে ২৫টাকা কেজি খুচরা বিক্রি হচ্ছে।অপরদিকে মুলার সরবরাহ কম থাকলেও পাইকারি বিক্রি হয়েছে ২ টাকা কেজি।
আজ শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চৌগাছা বড় পাইকারি কাঁচা বাজারে ঢুকতেই দেখা যায়, একজন কৃষক হাক মারছেন ফুলকপি ৩টি পাঁচ টাকা, ৩টি পাঁচ টাকা। পাশ ফিরতেই দেখা যায়, বড় সাইজের ফুলকপি আরেক কৃষক হাকছেন ১টি পাঁচ টাকা, ৩টি দশ টাকা।
পাইকারি বাজারের আড়ৎদার ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগের শুক্রবারও এসব সবজি প্রায় দ্বিগুন দামে পাইকারিতে বিক্রি হয়েছে। বাজারে নতুন ফুলকপি, বাধাকপি, সিম, মিস্টি কুমড়া, বিটকপির সরবরাহ স্বাভাবিক থাকার পরও দাম কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে আড়ৎদার ও কৃষকরা বলছেন এ অঞ্চলের সবজি যেসব অঞ্চলে বেশি বিক্রি হতো, সেসব এলাকার সবজি বাজারে এসে যাওয়ায় ব্যাপারিদের কাছে সবজির চাহিদা ও দাম কমে গেছে।
বড় কাঁচা বাজারের আড়ৎদার মুকুল হোসেন বলেন, ‘শুক্রবার পাইকারিতে মুলা বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি ১ থেকে ২ টাকা দরে, সিম ৮ থেকে ১০ টাকা, মিস্টি কুমড়া ১৮ থেকে ২৫, বেগুন ১৫ থেকে ২৫ টাকা, বাধাকপি ৫ থেকে ৭, ফুলকপি ২ থেকে ৫, বিটকপি ৫ থেকে ৬, পেয়াজের (ফুল) কালি ৮ থেকে ১০, কাঁচাকলা ৮ থেকে ১৫, পালংশাক ৪ থেকে ৫, পটল ৪০ থেকে ৪৫, মরিচ ৪০ থেকে ৪৫, দেশি নতুন পেয়াজ ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে। লাউ (প্রতিটি) বিক্রি হয়েছে ১০ থেকে ১২টাকা দরে। অন্যদিকে নতুন আলু ৪০টাকা দরে পাইকারি বিক্রি হয়েছে।’
চৌগাছা সদর ইউনিয়নের কৃষক আব্দুস সালাম বলেন, ‘শুক্রবার প্রতিটি ফুলকপি ২টাকা থেকে ৫টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছেন। যা গত বুধবারেও ৮ থেকে ১২টাকা দরে বিক্রি করেছিলেন।’
তবে পাইকারি বাজারের মধ্যেই খুচরা বিক্রি কেন্দ্রে এবং শহরের খুচরা বাজারে একই ফুলকপি কেজি ২০ থেকে ২৫ টাকা, বাধাকপি ২০ থেকে ২২, সিম ২৫ থেকে ৩০, বেগুন ৩০ থেকে ৪০, মিস্টি কুমড়া ৩০ থেকে ৪০, গোলআলু ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে পাইকারিতে এই মূল্য কমে যাওয়ার প্রভাব খুচরা বাজারে তেমন একটা পড়বে না বলে জানিয়েছেন পাইকারি ব্যবসায়ি (আড়ৎদার) মুকুল হোসেন।
তিনি বলেন, ‘খুচরা বিক্রেতারা যে পরিমান সবজি ক্রয় করেন তার সম্পূর্ণটা বিক্রি হয় না। তাছাড়া খাজনা, জায়গার ভাড়া, ব্যবসায়ীর মুজুরি ও ইনভেস্ট অনুযায়ী লাভ সব হিসেব মিলিয়ে তাদের বিক্রি করতে হয়। ’
এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে সবজির দাম এত কমে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘চট্রগ্রাম, নোয়াখালি, কুমিল্লাসহ দেশের যেসব অঞ্চলে চৌগাছার সবজি বিক্রি হয় সেসব এলকায় স্থানীয় খেতের সবজি বাজারে চলে এসেছে। এ কারণে ব্যাপারিদের কাছে সবজির চাহিদা কমে যাওয়ায় বাজারে সরবরাহ আগের চেয়ে বেশি না হলেও দাম কমে গেছে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মুসাব্বির হোসেন বলেন, ‘দেশের আবহাওয়া অনুকুল থাকায় সব এলাকায় স্থানীয় সবজি বাজারে এসে গেছে। ফলে আমাদের বাজারে সরবরাহ একই থাকলেও ব্যাপারিদের কাছে চাহিদা কমে গেছে। এ জন্য দাম কিছুটা কম। আমরা নিয়মিত বাজার পরিদর্শন করছি ও খোঁজ খবর রাখছি।’