ঢাকা | নভেম্বর ২৪, ২০২৪ - ৭:২৬ অপরাহ্ন

শিরোনাম

সীতাকুণ্ডে রেলের জমি নির্বিচারে দখলে মহোৎসব, নির্বিকার কর্তৃপক্ষ

  • আপডেট: Thursday, February 1, 2024 - 2:40 pm
এম আর আমিন, চট্টগ্রাম।। 
চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের কুমিরা রেল স্টেশন লাগোয়া প্রায় ৮ একর রেলের জমি নির্বিচারে দখলের মহা কর্মযজ্ঞ চালাচ্ছে একটি চক্র।এসব জমির ওপর রেলওয়ের একাধিক বাসা ভাঙচুর ও মাটি ভরাট করে উচু করার ফলে পানি প্রবাহে মারাত্মক বাঁধার সৃষ্টি হয়ে ঢাকা চট্টগ্রাম রেল লাইনের ব্যাপক ক্ষতির আশংকা করছে রেল সংশ্লিষ্টরা।এমনকি রেল চলাচলে হুমকির মুখে পড়বে বলেও জানা গেছে। এসব অনৈতিক কাজে বাধা দিলের রেলের স্টাফদের মারধর করার অভিযোগও ওঠেছে। এই নিয়ে উর্ধতন কর্মকর্তার বরাবরে একাধিক চিঠি চালাচালি হলেও শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
রেলওয়ে সুত্র জানায়, অনেক বছর আগে রেলের স্টাফরা তাদের বাসার আশেপাশে সবজি চাষ করার জন্য কিছু কিছু জায়গা ইজারা নিয়েছিল,কিন্তু তা না করে তিনি অন্যায়ভাবে রেলের বিশাল পরিমান জমি জবর দখল করে বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করার চেষ্টা করছেন। স্টাফদের বাসা, রেলের একাধিক গোডাউন ভাঙার চেষ্টা করছেন। নিচু জমিগুলোতে মাটি ভরাট করে পানি চলাচলে বিঘ্ন ঘটাচ্ছেন। এর ফলে একদিকে যেমন ইজারার শর্ত ভঙ্গ করেছেন অপরদিকে ঝুকির মুখে ফেলছেন ঢাকা চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ রেললাইন।
এসব অনৈতিক কাজে বাধা দেয়ায় রেলের কর্মচারি জাকির হোসেনকে মারধর করে। গত ২২ জানুয়ারি কুমিরা স্টেশন ইয়ার্ড কিমিঃ নং ২৩/০-৫ তে ড্রেনেজ ব্যবস্থা সক্রিয় করণ ও গোডাউন রক্ষণাবেক্ষন প্রসঙ্গে গ্যাং নং চট্টগ্রাম ৮ এর মেট মো. সাইফুল ইসলাম ও ৯ এর মেট যাদব চন্দ্র দাশ এর যৌথ স্বাক্ষরে এসএসএই/পথকে কে একটি লিখিত চিঠি দাখিল করেন। একই চিঠির অনুলিপি দেয়া হয়েছে বিভাগীয় প্রকৌশলী ১ কেও।
চিঠিতে বলা হয়েছে, গ্যাং এলাকার সঠিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বর্ষাকালে পানি জমে লুপ লাইনসহ মেইন লাইনে পানি উঠে ডুবে গিয়ে ট্রেন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। উল্লেখ্য যে, বর্তমানে গ্যাং হাট এলাকায় স্থানীয় প্রভাবশালী দ্বারা মাটি ভরাট করে সম্পূর্ণরূপে পানি চলাচল বন্ধ করে দেয়। এই বর্বর আচরণ প্রতিহত করা না গেলে আসন্ন বর্ষাকালীন সময় পানি আটকে গিয়ে মারাত্মক পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।ফলে সুষ্ঠু ট্রেন চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। চিঠিতে বলা হয়েছে, উক্ত রেলওয়ে কলোনীতে গ্যাং নং-চট্টঃ/০৮ ও চট্টঃ/০৯ এর গুরুত্বপূর্ণ মালামালের দুটি গোডাউন রয়েছে। যাতে রেলওয়ের বিভিন্ন মালামাল রক্ষিত রয়েছে।
 কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী মহল দ্বারা আমাদের সহ রেলওয়ের সকল বাসা উচ্ছেদের প্রক্রিয়া বিরাজমান। রাতে উক্ত কলোনীতে অবস্থানরত রেলওয়ে কর্মচারীগণকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছে।স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তির হুমকি ধমকিতে আমরা সকলেই খুবই বিচলিত ও আতকিংত। গত বছরের ৮ জুলাই স্টেশন মাস্টার ও ট্রেন কন্ট্রোলার একটি কন্ট্রোল মেসেজের মাধ্যমে রেলের উর্ধতন কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছিল।  যেখানে বলা হয়েছে, কুমিরা স্টেশনের প্লাটফর্মের পশ্চিম পাশে কি: মি:-২৩/২-০ এর মধ্যে স্থানীয় রাজাপুরের ওবায়দুল হকের পুত্র মো. মহসিন টিনের বেড়া দিয়া পুরো এলাকা ঘেরাও দিয়ে এবং মাটি কেটে বড় কর গর্ত করিতেছে।দখল কাজে বাধা দিলে তা কর্ণপাত না করে কাজ অব্যাহত রেখেছে। এই ব্যাপারে অতিসত্তর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ পুর্বক রেলওয়ের জমি অবৈধ দখলমুক্ত করার অনুরোধ  করেন।
এব্যপারে জানতে চাইলে দখলকারি এমএএস এগ্রিকালচারের স্বত্ত্বাধিকারি মো. মহসিন রেজা বলেন, এখানে আমার ৭ একর জমি কৃষি লিজ নেয়া আছে। তার মধ্যে ২ একর আমার নামে আর ৫ একর অন্যদের কাছ থেকে নিয়েছি।আমি এটাকে বাণিজ্যিক লাইসেন্সে পরিবর্তণ করার চেষ্টা করছি।
রেলের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বলেন,এবিষয়টি আমরা জানতাম না।স্টেশনের এলাকা দখল করার চেষ্টা করেও লাভ নেই কারন সকল স্টেশনে বর্ধিত করা হবে। আমরা তদন্ত সাপেক্ষে অবশ্যই দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা (সিইও) সুজন চৌধুরী বলেন, রেলের জমি জবরদখলের কোন সুযোগ নাই। জবর দখলকারি যত প্রভাশালীই হোক আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।  অলরেডি আমাদের লোকজনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
রেলওয়ে পুর্বাঞ্চলের চট্টগ্রামের বিভাগীয় প্রকৌশলী (ডিইএন)-১ মো. আব্দুল হানিফ বলেন, বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় থানায় এফআইআর দায়ের করতে আইডাব্লিউকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।