ঢাকা | সেপ্টেম্বর ১, ২০২৫ - ১০:৫৭ অপরাহ্ন

শিরোনাম

সিরাজগঞ্জে গ্রাম আদালত কার্যক্রমের বার্ষিক অগ্রগতি পর্যালোচনা অনুষ্ঠিত 

  • আপডেট: Monday, September 1, 2025 - 11:19 am
মো. কামরুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ।। সিরাজগঞ্জে গ্রাম আদালত কার্যক্রমের বার্ষিক অগ্রগতি পর্যালোচনা ও  করণীয় শীর্ষক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ সোমবার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের শহিদ এ কে শামসুদ্দিন সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভার আয়োজন করেন জেলা প্রশাসন। সহযোগিতায় ছিলেন
ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বাংলাদেশ সরকার এবং ইউ এনডিপির অর্থায়নে ( ই এস ডি ও)।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে গ্ৰাম আদালত বিষয়ক দিকনির্দেশনা মূলক গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মুহাম্মাদ নজরুল  ইসলাম।
তিনি বলেন, গ্রাম আদালত সেবা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎসাহ তৈরি করতে হবে। মানুষ যাতে গ্রাম আদালত সম্পর্কে জানতে পারে সেজন্য ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালাতে হবে। ২০০৬ সাল থেকে গ্রাম আদালত কার্যক্রম শুরু করা হয়।  যে সকল ইউনিয়ন পরিষদে এজলাস নেই তাদেরকে স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা উপজেলা নির্বাহী অফিসাররকে অবহিত করণের মাধ্যমে এজলাস তৈরি করতে হবে।
তিনি সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
তিনি আরো বলেন,  গ্রাম আদালতের ক্ষমতায়ন সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপকভাবে প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। সাধারণ মানুষ যাতে গ্রাম আদালতে সঠিক বিচার পায়, সেদিক খেয়াল রাখতে হবে।গ্রাম আদালতের মাধ্যমে বিচার কার্যক্রম অতি দ্রুত হয় সেক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের ব্যাপক ভূমিকা রাখতে হবে। গ্রাম আদালতে সাধারণ মানুষ বিচার না পাওয়াতে আদালতের দারস্থ হয়। এতে মামলার পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে যা বিচার কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে। এর থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় ব্যাপকভাবে প্রচার-প্রচারণা ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করা।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের ( ভারপ্রাপ্ত)
উপ-পরিচালক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( সার্বিক) গন পতি রায়।
এসময়ে উপস্থিত আরো ছিলেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোছা. নুর নাহার বেগম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান, ইউএনডিপি প্রজেক্টএ্যানালিস্ট সুমন চাকমা, মহিলা অধিদপ্তর সিরাজগঞ্জের উপ-পরিচালক কানিজ ফাতেমা।
পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ ৩য় পর্যায় প্রকল্পের সিরাজগঞ্জের জেলা ডিষ্টিক ম্যানেজার মোঃ আব্দুল হান্নান।
সমাজে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় গ্রাম্য আদালত বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ ৩য় পর্যায় প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ও গ্রাম
আদালতের সুবিধা- গ্রাম আদালত সর্ব্বোচ্চ ৩ লক্ষ টাকা মুল্যমানের ফৌজদারি ও দেওয়ানী মামলা নিষ্পত্তি করতে পারে, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সহ উভয় পক্ষের ২ জন করে মনোনীত প্রতিনিধি নিয়ে গ্রাম আদালত গঠিত হয়, নিজ ইউনিয়ন পরিষদেই গ্রাম আদালত বসে, বিচারিক প্যানেলে নিজেই প্রতিনিধি নিজেই মনোনয়ন দেয়া যায়, বাদী এবং প্রতিবাদী নিজেরাই নিজেদের কথা বলেতে পারে, আইনজীবী নিয়োগের বিধান নেই।গ্রাম্য আদালত যেসব বিরোধ নিস্পত্তি করতে পারে- চুরি, ঝগড়া-বিবাদ,কলহ বা মারামারি, দাঙ্গা, প্রতারনা, ভয়ভীতি দেখানো বা হুমকি দেয়া, কোন নারীর শালীনতাকে অমর্যদা বা অপমানের উদ্দেশ্যে কথা বলা,উত্যক্ত করা। গচ্ছিত কোন মুল্যবান সম্পত্তি আত্মসাত করা, পাওনা টাকা আদায়,স্থাবর সম্পত্তির দখল ও পূর্ণ উদ্ধার বা তার মুল্য উদ্ধার, কোন অস্থবর সম্পতি জবর দখল বা ক্ষতি করার জন্য ক্ষতিপুরণ আদায়।গবাদিপশুর অনাধিকার প্রবেশের কারণে ক্ষতিপুরণ,গবাদিপশু মেরে ফেলা বা গবাদিপশুর ক্ষতি করা,কৃষি শ্রমীকের পরিশোধযোগ্য মজুরি ও ক্ষতিপুরণ আদায় ইত্যাদি।বাংলাদেশের সুবিধা বঞ্চিত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বিচার ব্যবস্থায় প্রবেশাধিকার নিশ্চিতকরণ অবদান রাখা, সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য – স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে সুসংগঠিত গ্রাম আদালতের মাধ্যমে স্থানীয় বিচারিক চাহিদা এবং যথাযথ আইনি সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে অধিকেতর সংবেদনাশীল করা, স্থানীয় জনগণ বিশেষ করে নারী, দরিদ্র ও বিপদাপন্ন জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন করা: যাতে তারা তাদের প্রতি সংঘটিত অন্যায়সমূহের প্রতিকার চাইতে পারে এবং স্থানীয় পর্যায়ে দ্রুততম সময়ে, স্বল্প খরচে ও স্বচ্ছতার সাথে বিরোধ নিষ্পত্তি করতে পারে।
উল্লেখ্য- গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্পের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে সাধারণ জনগণের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির সুযোগ বৃদ্ধি করতে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে।