সাংবাদিক শওকত মাহমুদ পাঁচ দিনের রিমান্ডে
নিজস্ব প্রতিবেদক।। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও বিএফইউজের সাবেক সভাপতি এবং জনতা পার্টি বাংলাদেশের মহাসচিব শওকত মাহমুদকে পাঁচ দিনের রিমান্ড দিয়েছে আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন ঢাকার মহানগর হাকিম ফাহমিনা খন্দকার আন্না।
প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই জিন্নাত আলী জানান, শওকত মাহমুদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে গত সোমবার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা আখতার মোর্শেদ। আদালত সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে।
এদিন শুনানিকালে শওকত মাহমুদকে আদালতে হাজির করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জামাল উদ্দিন মার্জিন, হারুনুর রশীদ, কাইয়ুম হোসেন নয়ন রিমান্ড আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন। শওকত মাহমুদের পক্ষে তার আইনজীবী শফিউজ্জামান রিমান্ড আবেদন বাতিল চেয়ে জামিন চান।
সরকার ‘উৎখাতের ষড়যন্ত্রে’ জড়িত থাকার অভিযোগে যে মামলায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরী গ্রেপ্তার হয়েছেন, সন্ত্রাসবিরোধী আইনের রমনা থানার সেই মামলায় শওকত মাহমুদকে গত রোববার গ্রেপ্তার করা হয়।
পরদিন তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন ডিবি পুলিশের রমনা জোনাল টিমের পরিদর্শক আখতার মোর্শেদ।
মামলার মূলনথি না থাকায় সেদিন রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি হয়নি। রিমান্ড আবেদনের শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন ঠিক করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
চারটি কারণ দেখিয়ে শওকত মাহমুদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছিলেন আখতার মোর্শেদ।
আবেদনে বলা হয়, শওকত মাহমুদসহ আরো অজ্ঞাত আসামিরা এনায়েত করিম চৌধুরীর সঙ্গে যোগসাজশে বিভিন্ন সময়ে দেশের অখণ্ডতা, সংহতি, জন-নিরাপত্তা বা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার জন্য জনসাধারণের মধ্যে আতংক সৃষ্টি করছে। বর্তমান সরকারকে উচ্ছেদ করার লক্ষ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে এবং উচ্চ পদস্থ লোকজন ও ব্যবসায়ী মহলের সঙ্গে গোপনে সভা-সমাবেশ, পরামর্শ করেছে।
আবেদনে আরো বলা হয়, অন্যান্য আসামির সঙ্গে যোগসাজশ করে শওকত মাহমুদ একটি প্রভাবশালী রাষ্ট্রের পক্ষে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে চান। এজন্য তিনি কোন কোন দল বা সংগঠনের সঙ্গে গোপনে ‘শলাপরামর্শ করছেন’, সেসব তথ্য উদঘাটনে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন।
গত ২০ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে ১০টার দিকে মিন্টো রোড এলাকা থেকে এনায়েতকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। প্রাডো গাড়িতে করে ‘সন্দেহজনকভাবে’ ঘুরছিলেন তিনি। পুলিশের সন্দেহ হলে তাকে থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। ঘোরাঘুরির কারণ জানতে চাইলে এনায়েত কোনো উত্তর দিতে পারেননি। তখন পুলিশ তাকে হেফাজতে নিয়ে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে রমনা মডেল থানায় মামলা করে।
এনায়েত করিম চৌধুরী ১৯৮৮ সালে আমেরিকায় যান এবং ২০০৪ সালে আমেরিকান পাসপোর্ট পান। বর্তমানে বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকারকে উৎখাত করার জন্য অন্য দেশের গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট হিসেবে ৬ সেপ্টেম্বর তিনি নিউ ইয়র্ক থেকে বাংলাদেশে আসেন বলে পুলিশের ভাষ্য।
এনায়েতকে গ্রেপ্তারের পর এ মামলায় জাতীয় পার্টির রওশনপন্থি অংশের মহাসচিব কাজী মো. মামুনূর রশীদসহ আরও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গত ২৫ এপ্রিল ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’র আত্মপ্রকাশ ঘটে, যার চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন।
এর আগে ২০২৩ সালের ২১ মার্চ শওকত মাহমুদকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যানসহ দলের সব পদ থেকে ‘বহিষ্কার’ করা হয়েছিল।











