ঢাকা | সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৫ - ৪:৫৭ অপরাহ্ন

শিরোনাম

লামা পৌরসভায় ডেঙ্গু মশা লার্ভা ধ্বংসে অভিযান, স্বস্তিবোধ করছেন নাগরিকরা

  • আপডেট: Thursday, September 18, 2025 - 9:20 am

মুহাম্মদ কামরুজ্জামান, লামা (বান্দরবান)।। সাম্প্রতিক সময়ে লামায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হচ্ছে। দিন দিন যেন এর ব্যাপকতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। উত্তরণে মশক নিধন ও ডেঙ্গু লার্ভা ধ্বংসে লামা পৌরসভার সব ক’টি ওয়ার্ডে আনাচে কানাচে ফগিং করানো হচ্ছে। অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন, ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার না করে শুধু মশা বা ডেঙ্গু লার্ভা ধ্বংস করে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে লার্ভা ধ্বংসের পাশাপাশি প্রয়োজন আবর্জনা পরিষ্কার। এই কাজটি পৌরসভাকেই করতে হবে বলে দাবি জানিয়েছেন নাগরিকরা। এদিকে পৌরসভা ডেঙ্গু লার্ভা ও মশা নিধনযজ্ঞে ৯ ওয়ার্ডে ৯ দিন ও পৌর শহরে ১ দিনসহ ১০ দিনের কর্মসূচি হাতে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ফগিং করছেন। উড়ন্ত বা অ্যাডাল্ট মশা মারতে ফগিং করতে মশক নিধনে চলছে রীতিমতো যুদ্ধ। এদিকে রাস্তা-ঘাট ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে ফগিং করার ফলে বাসা-বাড়িতে মশার উপদ্রব বেড়েছে বলে নাগরিকরা দাবি করেন।

লামা সরকারি হাসপাতালে সেপ্টেম্বর মাসে ৩৬ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া ডেঙ্গু আক্রান্ত অনেক রোগী বাড়ি-ঘরে থেকেও চিকিৎসা নিচ্ছেন। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান আক্তার উদ্দিন তপন নামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন প্রধান শিক্ষক ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে তথ্য রয়েছে। তবে ডেঙ্গু আক্রান্তে মৃত্যুর ঘটনা শোনা যায়নি।

এ ব্যাপারে ১৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা নাদিম জানান, আগস্ট মাসে ১৫ জন এবং চলতি মাসে ৩২ জন চিকিৎসা নিয়েছেন, ভর্তি আছে আরো ৪ জন। ডা. নাদিম জানান, “নাগরিকদের সচেতনতা ও বাসা-বাড়িতে ডেঙ্গু লার্ভার উৎস না থাকলে আতঙ্কের কিছু নেই। প্রতি সপ্তাহে হাসপাতালে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চলছে। সবাই সচেতন হলে ডেঙ্গু থাকবে না।”

সচেতন সমাজ মনে করেন, এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কীটনাশক হিসেবে লার্ভিসাইড ও অ্যাডাল্টিসাইডের প্রয়োগ একই সাথে জনগণকে এই কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে। লার্ভার চেয়ে উড়ন্ত মশা মারা একটু কঠিন।

পৌর বাসিন্দারা জানান, লামা পৌর শহর অভ্যন্তরে ঘনবসতিপূর্ণ স্থানে বিদ্যমান একটি প্রাচীনতম পুকুরে প্রচুর পরিমাণে আবর্জনা জমে আছে। সেখান থেকে মশা বেড়ে চলছে। পুকুরটি পরিষ্কার না করে সেখানে মশার ওষুধ ছিটিয়ে লাভ হবে না। এ বিষয়ে বারবার বলা হলেও প্রশাসন সেটি পরিষ্কারের চেয়ে সংস্কারের কথাই ভাবছেন। নাগরিকদের দাবি হচ্ছে, আগে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার, পরে সংস্কার। এ বিষয়ে লামা পৌর প্রশাসক উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মঈন উদ্দিন বলেন, “এ মুহূর্তে আমরা লার্ভা ধ্বংসের দিকে বেশি নজর দিচ্ছি, যেন লার্ভা থেকে অ্যাডাল্ট মশায় রূপান্তরিত হতে না পারে। সে জন্য লার্ভা ধ্বংসের জন্য ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। একই সাথে এডাল্ট মশাও মারা হচ্ছে।” প্রশাসক মো. মঈন উদ্দিন আরো বলেন, “পৌরসভার পক্ষ থেকে মশক ও ডেঙ্গু লার্ভা ধ্বংসে অভিযান অব্যাহত আছে। এডিস মশার প্রজনন স্থল ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করতে ইতিমধ্যে ব্র্যাক এনজিও সংস্থা পরিচ্ছন্নতা কাজে সম্পৃক্ত হয়েছেন। ময়লা পুকুরটিও দু’এক দিনের মধ্যে পরিষ্কার করা হবে। প্রতিদিন সকালে লার্ভিসাইড ও বিকেলে অ্যাডাল্টিসাইড প্রয়োগ হচ্ছে।”

লামা পৌর প্রশাসকের এমন স্বাস্থ্যবান্ধব কর্মকাণ্ডে আতঙ্কের জায়গা থেকে নাগরিকরা স্বস্তিবোধ করছেন।