ঢাকা | নভেম্বর ২৪, ২০২৪ - ৩:০৮ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

লামা উপজেলার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনকে বানচালের পায়তারা

  • আপডেট: Sunday, May 19, 2024 - 7:01 am

নিজস্ব প্রতিবেদক:

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৫ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে লামা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বহিরাগত প্রভাবশালী আওয়ামী লীগের নেতারা সাধারণ ভোটারদে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ভোট আদায়ের অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

আগামী মঙ্গলবার ২১মে লামায় ৬ষ্ট উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন-প্রশাসন সাধারণ ভোটারদেরকে নিরাপদ পরিবেশে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট প্রদানে নিরাপত্তার জন্য সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। যার ফল শ্রুতিতে ভোটারেরা আস্থা বিশ্বাসের জায়গা থেকে অনেকটা স্বস্তিবোধ করছেন। প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণায় সাধারন মানুষ ভোটের কাঙ্খিত জৌলুশ দেখতে পাচ্ছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কিছু প্রভাবশালী নেতার ক্ষমতার দাপোটে ম্লান হয়ে যাচ্ছে জনগণের আশার আলো ও প্রশাসনের সমস্ত অর্জন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বহু মানুষের অভিযোগ, লামায় ভোটের স্বাভাবিক পথপরিক্রমাকে ব্যহত করার উদ্দেশ্যে বহিরাগত (বান্দরবান থেকে) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লক্ষিপদ দাশের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী কায়দায় নিরীহ সাধারণ জনগণের উপর প্রভাব বিস্তার করে নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘণ করে চলছে। তারা লামায় নির্বাচনের হেরে যাবে সেই দুশ্চিন্তা থেকে নিজেদের নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর, নিজ প্রার্থীর পোস্টার ছিঁড়ে মোটর সাইকেল মার্কার প্রার্থীসহ তার কর্মী সমর্থকদের ফাসানোর হীন প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এই নেতা লামা ফাঁসিয়াখালীতে অবস্থান করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির মাধ্যমে অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করছে। জেলা আওয়ামী লীগের এই নেতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কর্তৃক ঘোষিত অংশগ্রহণমূলক সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পাঁচটি দিক নির্দেশনা অমান্য করে চলেছে।আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা সমূহ এরূপ যে,
১. কোনও এমপি কোনও প্রার্থীকে মনোনয়ন দিতে পারবেন না বা প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করতে পারবেন না।
২. আওয়ামী লীগের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক কোনও প্রার্থীকে সমর্থন দিতে পারবেন না বা প্রার্থীর পক্ষে কোনো প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
৩. কোনও প্রার্থী আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বা এমপির মনোনীত প্রার্থী ইত্যাদি বলে প্রচারণা করতে পারবেন না।
৪. একজন প্রার্থী অন্য জন প্রার্থীকে অরাজনৈতিক ভাষায় গালাগালি করা বা যাতে দলের বদনাম হয় এমন কোন কর্মকাণ্ড করতে পারবেন না।
৫. কোনও প্রার্থী দলীয় পরিচয় ব্যবহার করতে পারবেন না। অর্থাৎ তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি বা সহ সভাপতি ইত্যাদি পরিচয় ব্যবহার ছাড়াই তাকে উপজেলা নির্বাচন করতে হবে এবং উপজেলা নির্বাচনে কেউ যদি সহিংসতা করে তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের এই ৫ নিষেধাজ্ঞা বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা মানছেন না। সাধারণ ভোটারদের অভিযোগ রয়েছে যে, আনারস মার্কার প্রার্থী মোস্তফা জামাল নিজেকে লামা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি পরিচয় দিয়ে ও বান্দরবানের সাংসদের মনোনীত বলে সবখানে প্রভাব বিস্তার করছে।

লামা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও লামা পৌরসভার মেয়র জহিরুল ইসলাম আওয়ামী লীগের প্রভাব বিস্তার করে প্রচারণা করছেন। সে মটর সাইকেল মার্কার এজেন্টসহ বিভিন্ন পেশার মানুষকে হুমকি ও ভয়-ভীতি দেখাচ্ছেন এবং বলে বেড়াচ্ছেন আনারস সমর্থন না করলে কর্মস্থল থেকে ছাঁটাই করে এলাকাছাড়া করার হুমকি দিচ্ছেন। লামা উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানগন আওয়ামী লীগের প্রভাব দেখিয়ে তাদের এলাকার নিরীহ ভোটারদের ও জনগনকে বলে বেড়াচ্ছেন,’আওয়ামী লীগের উপজেলা চেয়ারম্যান হতে হবে’ মর্মে বক্তব্য ছড়িয়ে দিচ্ছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামালকে বিজয়ের আগাম ঘোষণা দিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় পদপদবী বহনকারী সকল চেয়ারম্যানগন এক সাথে প্রচারণায় নেমেছেন। মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও বান্দরবান জেলা পরিষদ সদস্য ফাতেমা পারুল সহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতারা সাধারণ ভোটারদেরকে ভয়, চাপ ও মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে মোস্তফা জামালের পক্ষে জোর প্রচারনা চালাচ্ছেন, যাহা দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি। এই বাস্তবতায় নির্বাচন আচরণ বিধি বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ ও দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর দৃষ্টি আকর্ষণ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি করছেন স্থানীয়রা।

আওয়ামী লীগের নেতারা ভোট আদায়ে নির্লজ্জ এক অপকৌশল ও গুজব ছড়িয়ে মানুষকে চাপ প্রয়োগ করছে। আনারস মার্কায় ভোট না দিলে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, পঙ্গুভাতা, গৃহহীনদের গৃহ ও জমি প্রদান, টিসিবি পন্য, ১০ টাকা কেজি চাল, ভিজিডি, বিজিএফ, মাতৃত্বকালীন ভাতা, শিশু ভাতা ইত্যাদি উপকার ভোগী সাধারন মানুষকে এসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার হুমকি দিচ্ছেন। এর ফলে তারা আওয়ামী লীগ সরকারের মহৎ কর্মকান্ডকে বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

যেই মূহুর্তে সরকার ও নির্বাচন কমিশন আইনদ্বারা ঘোষণা দিয়েছেন যে, “লোভ, ভয় ও জোর প্রয়োগ করে ভোট আদায়ের চেষ্টা করা বেআইনি কাজ। এসব কর্মকান্ডঃ প্রমানিত হলে কঠোরভাবে দলীয় ও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।” ঠিক সেই মুহুর্তে আওয়ামী লীগের জেলা সেক্রেটারী আনারস মার্কাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বান্দরবানের সাংসদ বীর বাহাদুর উশৈসিং এঁর মার্কা ও পছন্দের লোক দাবি করে বিস্তর প্রভাব ফেলছে। এর ফলে সেখানকার বিদ্যমান রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সরকার ও প্রশাসনের কর্মকান্ডকে চরমভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন।