লামায় উচ্ছেদ আতঙ্কে ৪০ পরিবারের মানববন্ধন
লামা, (বান্দরবান) প্রতিনিধি।
লামা উপজেলা পরিষদের জায়গা উদ্ধারে জেলা প্রশাসনের উচ্ছেদ বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বসবাসকারী পরিবারের সদস্যরা। সোমবার (৩ নভেম্বর) সকাল ১১টায় লামায় উচ্ছেদ আতঙ্কে থাকা পরিবারের সদস্যরা পরিষদ সম্মুখ সড়কে দাঁড়িয়ে বান্দরবান জেলা প্রশাসন কর্তৃক উচ্ছেদ অভিযানের বিরোধিতা করেন।
জানা যায়, ৬ নভেম্বর লামা উপজেলা পরিষদের নিজস্ব ভূমিতে (টিএন্ডটি পাড়া) অবৈধভাবে বসবাসকারীদের অপসারণ বা জবরদখলমুক্তকরণ ও অবৈধ স্থাপনা অপসারণের জন্য একজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়। এই খবরে নোটিশ পেয়ে সেখানে ৪৫ বছর ধরে বসবাসকারীদের মধ্যে উচ্ছেদ আতঙ্ক ও হতাশা দেখা দেয়।
স্থানীয়রা এর আগে গত ১০ আগস্ট ২০২৫ তারিখে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক বরাবর ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সময় চেয়ে আবেদন করেছেন বসবাসকারীরা। তারা দাবি করেন, বিগত শতকের ৮০-এর দশকে প্রশাসন অধিগ্রহণ করার আগেই তৎকালীন নেতৃবৃন্দের নির্দেশনায় তারা এই জায়গায় বসতি শুরু করেন।
এদের কয়েকটি পরিবার ভূমিহীন, আবার কারও নিজস্ব ভূমি রয়েছে দুর্গম এলাকায়। সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক জায়গাটি ছেড়ে দেওয়ার জন্য তাগাদা দেওয়া হলে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চাওয়া হয়। প্রশাসন যৌক্তিক সময় না দিয়ে ৬ নভেম্বর উচ্ছেদ বাস্তবায়নের জন্য ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করেন। সামনে তাদের শিশু সন্তানদের বার্ষিক পরীক্ষা। এ সময়ের মধ্যে উচ্ছেদ করা হলে, গরিব শিশু শিক্ষার্থীদের জীবন অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া হবে বলে ৪০ পরিবারের সদস্যরা রাজপথে দাঁড়িয়ে আশঙ্কা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
মানববন্ধনে আইনজীবী মিজানুর রহমান বলেন, যে দেশে ১০–১২ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিক আশ্রয়ে থাকার সুযোগ নিয়ে পরিবেশ ও পরিবেশ ধ্বংস করছেন, সে দেশের গরিব ও ভূমিহীন কয়েকটি পরিবারের ওপর প্রশাসনের ‘খড়গহস্ত’ অত্যন্ত অমানবিক। বিকল্প ব্যবস্থা না করে উচ্ছেদ কার্যক্রম স্থগিত করার দাবি জানান বক্তারা। বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা মো. তুহিন, আরাফাত বুলবুলসহ আরও অনেকে।
এ বিষয়ে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মঈন উদ্দিনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “উপজেলা পরিষদের অধিগ্রহণকৃত ভূমিতে এসব পরিবার অবৈধভাবে দখল করে বসবাস করছেন। এ কারণে পরিষদের অবকাঠামোগত সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন সম্ভব হচ্ছে না। বসবাসকারীদের বহু আগে থেকেই পরিষদের জায়গা ছেড়ে যাওয়ার জন্য বলা হলেও তারা তা করেননি। বর্তমানে জেলা প্রশাসন থেকে উচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমার বলার কিছু নেই।”
স্থানীয় অভিজ্ঞ মহলের মতে, জাতীয় নির্বাচনের আগমুহূর্তে মানুষকে উত্তেজিত না করে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখা প্রশাসনের মূল কাজ হওয়া উচিত।











