মুহাম্মদ কামরুজ্জামান, লামা (বান্দরবান)।

লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নে পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রশাসনের পরিচালিত ইটভাটা বন্ধের অভিযানে বাধা দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে লামা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তর বান্দরবানের উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ নুর উদ্দিন বাদী হয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী এরফানুল হক (২৫) সহ ১১ জনকে নাম উল্লেখ এবং চার শতাধিক অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন।

১৭ নভেম্বর (সোমবার) দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ১৪৩, ৩৪১, ১৮৬ এবং ৫০৬ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলার অন্য আসামিরা হলেন—এবি ওয়াহিদ (৫০), মিজবাহ উদ্দিন মিন্টু (48), মো. মহিউদ্দিন (৪০), শওকত ওসমান (৪০), খায়ের উদ্দিন মাস্টার (৫০), মুজিবুল হক চৌধুরী (৫০), মিজান, জলিল, আলম মেম্বার ও জহির।

অভিযানে বাধা ও মানববন্ধন

অবৈধ ইটভাটা নির্মাণ ও পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রশাসনের একটি বিশেষ টিম শনিবার (১৬ নভেম্বর) ফাইতং ইউনিয়নে অভিযান পরিচালনা করে। এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রেজুয়ান উল ইসলামের নেতৃত্বে পরিচালিত এই অভিযানে ইটভাটা মালিকপক্ষের লোকজন রাস্তা অবরোধ করে মানববন্ধন করেন। শ্রমিকদের একাংশ কাফনের কাপড় পরে অভিযানের গাড়িবহরের সামনে শুয়ে পড়ে প্রতিবাদ জানান।

পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ফাইতং ইউনিয়নে লাইসেন্সবিহীন প্রায় ৩০টি ইটভাটা চলছে। চলতি মৌসুমে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এসব ভাটার কয়েকটিতে উৎপাদন চলছে। স্থানীয় পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের মারাত্মক ক্ষতি করে পাহাড় কাটার অভিযোগও রয়েছে মালিকদের বিরুদ্ধে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, “পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রশাসনের বিশেষ টিমকে বাধা দানকারীরা কেউ স্থানীয় নয়। তারা ইটভাটার শ্রমিক। আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি।”

১৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় ইটভাটা শ্রমিকদের প্রতি সংহতি জানিয়ে এনসিপি চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী এরফানুল হকের নেতৃত্বে একটি উঠোন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজার–১ আসনের এনসিপি প্রার্থী এবি ওয়াহিদ। বক্তারা বলেন, “হাজারো শ্রমিকের বিকল্প কর্মসংস্থান না করে ব্রিকফিল্ড বন্ধ করা শ্রমিকদের স্বার্থপরিপন্থি।” তারা সরকারকে “প্রাথমিকভাবে এক হাজার শ্রমিকের বিকল্প কর্মসংস্থান করার আহ্বান জানান।”

মঙ্গলবার বিশেষ টিমের চলমান অভিযানের প্রতিবাদে ফাইতং ইউনিয়নে পাহাড়ি-বাঙালি মিলিয়ে এক হাজারের বেশি ইটভাটা শ্রমিক অবস্থান নেন। বিকল্প কর্মসংস্থান নিশ্চিত না করে বর্তমান কর্মউৎস বন্ধের বিরুদ্ধে তারা স্লোগান দেন।