প্রচ্ছদ » » লড়াইয়ে সামনে যে বাঁধা থাকবে তা ভেঙ্গে চুরমার করে দিতে হবে- আবদুল্লাহ আল নোমান
লড়াইয়ে সামনে যে বাঁধা থাকবে তা ভেঙ্গে চুরমার করে দিতে হবে- আবদুল্লাহ আল নোমান
- আপডেট: Saturday, September 2, 2023 - 2:32 pm
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেছেন, বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় রাষ্ট্রের জন্য লড়াই করছে। এই লড়াইয়ের সামনে যে বাঁধা থাকবে তা ভেঙ্গে চুরমার করে দিতে হবে। শহীদ জিয়া বিপ্লবের স্লোগান দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতেন। আমাদেরকেও একদফার লড়াইয়ে জিততে হবে। সামনের যে লম্বা রাস্তা আমাদেরকে তা পার হতে হবে। শহীদ জিয়ার জাতীয় রাষ্ট্রের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত জাতীয় রাষ্ট্র বাংলাদেশের পরিপূর্ণতা আসবে না ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন শেষ হবে না। তাই আসুন জাতীয় রাষ্ট্র গঠনে সবাই ঐক্যবদ্ধ হই।
তিনি শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকালে কাজীর দেউরীস্থ সমাদর কমিউনিটি সেন্টারে বিএনপির ৪৫ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির
বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, চবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. নসরুল কদির, সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদের আহবায়ক সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি, চট্টগ্রাম জেলা ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. তমিজ উদ্দিন আহমেদ মানিক, এ্যাবের সভাপতি ইঞ্জি. সেলিম মো. জানে আলম, মহানগর বিএনপির সি. যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব এম এ আজিজ, যুগ্ম আহবায়ক মো. মিয়া ভোলা, এড. আবদুস সাত্তার।
আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মূল লক্ষ্য হলো জাতীয় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। লড়াই সংগ্রামের মাধ্যমে মানুষের অন্ন,বস্ত্র বাসস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। জাতীয় রাষ্ট্র যদি তৈরি করতে না পারি, তাহলে আমাদের যে লড়াই, সেটি শেষ হবে না। জাতীয় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ ব্যর্থ হয়েছে। আওয়ামী লীগ বিভিন্ন দফা দিয়ে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু জাতীয় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তারা এতটুকু অগ্রসর হয় নাই। আসুন আমরা যে কাজ পরিপূর্ণ করতে পারিনি, সেটি পূরণে আন্দোলন গড়ে তুলি। আমাদের সংগঠনকে শক্তিশালী করে, দেশের প্রয়োজনে অগ্রসর হই।
তিনি বলেন, আজকে আমরা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা করছি। কিন্তু মনে রাখতে হবে, আমাদের মূল লক্ষ্য এক দফার আন্দোলন। এক দফার আন্দোলনের মধ্য দিয়েই এই স্বৈরাচারী, বাকশালি সরকার, যারা জনগণের ওপর চেপে বসে আছে, তাদের বিদায় নিতে হবে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে ‘নির্বাচনের আগে পরে জনগণের জানমালের পাহারা দিতে আওয়ামীলীগ মাঠে থাকবে’ বলে আওয়ামী লীগের ওবায়দুল কাদেরের করা মন্তব্যের জবাবে মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন বলেন, আওয়ামীলীগ কেন মাঠে থাকবে? তারা কি পুলিশ? তাহলে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন। কারণ জনগণকে আওয়ামী লীগের পাহারা দিতে হবে না। বরং আওয়ামী লীগকে পাহারাদার দেয়ার জন্য পুলিশের দরকার হবে। পুলিশ যদি বলে আমরা তোমাদের সাথে নাই, তাহলে তারা লুঙ্গি খুলে পালাবে। আওয়ামী লীগ এখন পালাবার পথ খুঁজছে। আর ৪৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এসে আজকে বিএনপির লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মী রাজপথে আন্দোলন করছে। বিএনপি হচ্ছে জনগণের দল। বিএনপি অনেক শক্তিশালী দল। কোন বাহিনীর দল নয়।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, প্রতিষ্ঠার ৪৫ বছর পরেও বিএনপি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করছে। শহীদ জিয়া দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আওয়ামী লীগ বারবার গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের পতন আন্দোলনে শেখ হাসিনা বারবার বিলম্বিত করেছিলেন। সে সময় বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এরশাদের পতন হয়েছিল। ৮৬ সালে চট্টগ্রামের লালদীঘির ময়দান থেকে আব্দুল্লাহ আল নোমান বেগম খালেদা জিয়াকে আপোষহীন দেশনেত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন। শহীদ জিয়া উৎপাদনমুখী রাজনীতির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বিএনপির সাংগঠনিক শক্তির উপর দাঁড়িয়ে আমরা বর্তমান সরকারের পতন ঘটাবো।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. নসরুল কদির বলেন, বিএনপিকে ধ্বংস করার জন্য বহু বছর ধরে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। তবে বিএনপি ফিনিক্স পাখির মতো আবার উঠে দাঁড়িয়েছে। জিয়াউর রহমানের আদর্শে অবিচল না থাকলে অন্য অনেক দলের মতো বিএনপিও হারিয়ে যেতো। কিন্তু ১৫ বছর ধরে চরম অন্যায় অত্যাচার ও নিপীড়নের পরও বিএনপি টিকে আছে, এটাই বাস্তবতা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ এম নাজিম উদ্দীন বলেন, ৪৫ বছর আগে দেশের এক চরম ক্রান্তিকালে শহীদ জিয়াউর রহমান এদেশের মানুষকে একদলীয় দুঃশাসনের অন্ধকার যুগ থেকে রক্ষার জন্য বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন। দেশের সঙ্কটকালে জুলুম নির্যাতনকে সহ্য করে দুর্বার আন্দোলনে বেগম খালেদা জিয়া নেতৃত্ব দিয়েছেন।
আবুল হাশেম বক্কর বলেন, জনগণের নিরাপত্তা বিধানের জন্যই গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে। বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের ওপর জুলুম নির্যাতন চালিয়ে হয়রানির খড়গ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। খালেদা জিয়া প্রতিহিংসার শিকার। কারণ তিনিই গণতন্ত্রের প্রতীক এবং জনগণের পক্ষে প্রধান কণ্ঠস্বর।
এসময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এস এম সাইফুল আলম, এস কে খোদা তোতন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, ইসকান্দর মির্জা, আবদুল মান্নান, আহবায়ক কমিটির সদস্য এরশাদ উল্লাহ, হারুন জামান, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, গাজী মো. সিরাজ উল্লাহ, মন্জুর আলম চৌধুরী মন্জু, মো. কামরুল ইসলাম, মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী,স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান, বিভাগীয় শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক শেখ নুরুল্লাহ বাহার, মহানগর মহিলাদলের সভাপতি মনোয়ারা বেগম মনি, সাধারণ সম্পাদক জেলী চৌধুরী, ছাত্রদলের সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম তুহিন, তাঁতীদলের আহবায়ক মনিরুজ্জামান টিটু, মৎস্যজীবী দলের আহবায়ক নুরুল হক, সদস্য সচিব এড. আবদুল আজিজ প্রমুখ।