ঢাকা | জানুয়ারী ৪, ২০২৫ - ৮:৩০ অপরাহ্ন

শিরোনাম

রিজার্ভ ‘ডাকাতি’: ২৪৪ দিন ঘটনা গোপন করেন তৎকালীন গভর্নর আতিউর

  • আপডেট: Friday, January 3, 2025 - 3:09 pm

জাগোজনতা ডেস্ক : ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার দিন বাংলাদেশের গভর্নর ছিলেন বর্তমান অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তার মেয়াদ শেষ হয় ৩০ এপ্রিল ২০০৯, এর পর নতুন গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন আতিউর রহমান। ২০১৬ সালের মার্চে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় তিনি পদত্যাগ করেন।
২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি রাতের আঁধারে আন্তর্জাতিক হ্যাকারদের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফেডারেল রিজার্ভ অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে ৮ কোটি ১০ লাখ ১ হাজার ৬২৩ মার্কিন ডলার চুরি করা হয়। এই হ্যাকিংয়ের ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের কর্মকর্তাদের সহায়তা ছিল। হ্যাকাররা ‘আরটিজিএস’ নামে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে সুইফট প্রক্রিয়ায় সংযোগ স্থাপন করে রিজার্ভ চুরির নীলনকশা বাস্তবায়ন করে। তবে তৎকালীন গভর্নর ড. আতিউর রহমান চরম উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ২৪৪ দিন পর্যন্ত এই চুরির বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন।

এ ঘটনায় রিজার্ভ চুরির বিষয়টি তদন্তের জন্য থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার ব্যাপারে গভর্নর তৎকালীন সময়ে নিষেধ করেছিলেন। সন্দেহজনক ব্যক্তি দ্বারা ৩৫টি পেমেন্ট হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক (এফআরবিএনওয়াই) ফান্ড ট্রান্সফার বন্ধ করে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাখ্যা চেয়েছিল। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ বিষয়ে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ২৫ দিন পর ম্যানিলার দ্য ইনকোয়ারার পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির তথ্য জানানো হয়।

এরপর যুক্তরাষ্ট্রের তদন্ত সংস্থা এফবিআই এই ঘটনার তদন্ত শুরু করে। তাদের এক কর্মকর্তার মতে, রাষ্ট্রীয় সহায়তায় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা ঘটেছিল। গত ৩১ ডিসেম্বর বাংলাদেশে নবনিযুক্ত ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে তার পরিচয়পত্র পেশকালে রিজার্ভ চুরির পূর্ণ অর্থ ফিরিয়ে আনতে ফিলিপাইন সরকারের সহায়তা চাওয়া হয়।

এ ঘটনায় ৩৯ দিন পর বাংলাদেশ ব্যাংক একটি মামলা দায়ের করে, কিন্তু আট বছর ধরে সিআইডি তদন্ত চালিয়ে গেলেও এখনও ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়নি। ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে এবং তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি দায় আনার পরামর্শ দেয়। এই তদন্ত কমিটি ভবিষ্যতে এমন ঘটনার প্রতিরোধে কিছু সুপারিশও করেছে।