রাজাপুর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কিরনের উপর পরিকল্পিত হামলা
এম কে কামরুল ইসলাম স্টাফ রিপোর্টার।।
ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আল-ইমরান কিরন এর উপর পরিকল্পিত ভাবে হামলার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব রফিক মৃধার বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (২৯আগষ্ট) রাত সাড়ে ৭টার দিকে রাজাপুর উপজেলা বিএনপির প্রধান কার্যালয়ের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। পরে নেতাকর্মীরা আহত অবস্থায় কিরোনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
জানাগেছে, বড়ইয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের কমিটি গঠন করার সময় সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদবী নিয়ে দুজনের মধ্যে বাকবিতন্ড হয় তখন সিনিয়র নেতাকে উপস্থিত থাকায় তারা সমাধান করেন। এরপর আহ্বায়ক আল-ইমরান কিরন বাইক চালিয়ে রাত সাড়ে ৭টার দিকে রাজাপুর বিএনপির প্রধান কার্যালয়ের সামনে আসলে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে ওত পেতে থাকা সদস্য সচিব রফিক মৃধা সহ তার ৮-৯জন কেডার বাহিনীরা হামলা চালায় একপর্যায়ে ক্ষুর দিয়ে পাঁজরে পোচ দেয়। তখন উপস্থিত থাকা সিনিয়র নেতারা এগিয়ে আসলে তারাও হামলার শিকার হয়। আহত অবস্থায় কিরোনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রাখেন। আগামী ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির ৪৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন ইউনিয়ন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা রফিক মৃধাকে বাদ রেখে উপজেলার ছাত্রদলের আহ্বায়ক আল-ইমরান কিরনের ছবি সম্বলিত ফেস্টুন ব্যানার বানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় সদস্য সচিব রফিক ক্ষোভে ও হিংসায় পরে আল-ইমরান কিরনের উপর অতর্কিত হামলা চালায়।
রাজাপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি তৌহিদুর রহমান খান (তামান) বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে বড়ইয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের কমিটি গঠন নিয়ে দুজনের মধ্যে বাকবিতন্ড হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব রফিক মৃধা দীর্ঘদিন যাবত তার নিজস্ব কিছু পোলাপান নিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম চালাচ্ছে। দলীয় ছাত্রদলের ত্যাগি নেতাকর্মীদের কোনো খোঁজ খবর রাখে না। এর কারণে বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সাথে রফিক মৃধার সম্পর্ক দূরত্ব চলছে। নেতাকর্মীরা আহ্বায়ক আল-ইমরান কিরনকে ভালোবাসে তার কাছে সবাই আসে, কথা বলে, এবং ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করে। কিন্তু সদস্য সচিব রফিক মৃধার কাছে তেমন কেউ যায় না, কথা বলে না, তার সাথে ছবি তুলে না, এইসব বিভিন্ন কারণে দীর্ঘদিনের ক্ষোভে ও হিংসায় এই হামলা করেছে।
বড়ইয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা ইউনিয়ন কমিটির সবাই সমন্বয়ে ২নং ওয়ার্ডের কমিটির জন্য ৭ সদস্যর একটা খসড়া তৈরি করে উপজেলা কমিটির কাছে জমা দিয়েছিলাম সেই কমিটি মঙ্গলবার বিকেলে আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করার জন্য উপজেলার ছাত্রদলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব সহ বিভিন্ন সিনিয়র নেতারা আসেন। সদস্য সচিব রফিক মৃধা কাউকে কিছু না জানিয়ে নিজের মনগড়া আমাদের দেওয়া সাধারণ সম্পাদককে সাংগঠনিক সম্পাদক এবং আমাদের দেওয়া সাংগঠনিক সম্পাদককে সাধারণ সম্পাদক পদবী দিয়ে কমিটি ঘোষণা করেন। এরপরে আহ্বায়ক আল-ইমরান কিরন আমাদের খসড়া অনুযায়ী কমিটি ঘোষণা করেন। তখন তাদের মধ্যে কোন ঝামেলা হয়নি এরপর কি হইছে তা তিনি জানেন না৷
উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আল-ইমরান কিরন অভিযোগ করে বলেন, বিকেলে বড়ইয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা হয়।কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে রাত সাড়ে ৭টার দিকে বাইক চালিয়ে উপজেলা বিএনপির প্রধান কার্যালয়ের সামনে এসে বাইক থামিয়ে নামবো এমন সময় হঠাৎ কোন কিছু বোঝার আগেই সদস্য সচিব রফিক মৃধা সহ তার ৮-৯জনের কেডার বাহিনীর একটি দল অতর্কিত হামলা চালায়। এবং ক্ষুর দিয়ে পাঁজরে পোচ দেয় এতে ৩টা সেলাই লাগছে।
এ বিষয়ে ঘটনা স্থানে উপস্থিত থাকা বিএনপির সিনিয়র নেতাদের কাছে জানতে চাইলে তারা জানান, ঘটনাটি আমাদের দলের সিনিয়র নেতাদের সামনে বসেই ঘটেছে আমরা সিনিয়র অনেক জন নেতাও হামলার শিকার হয়েছি। খুব শীঘ্রই দোষীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবো।
অভিযোগের বিষয়ে অস্বীকার করে উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব রফিক মৃধা বলেন, বড়ইয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে অযোগ্য মাদকসেবী লোক দিয়ে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষনা দেয়ার কারণ জানতে চাইলে উপজেলা ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরন করায় ছাত্রদল নেতাকর্মীরা কিরোনকে মারধর করে। তখন আমি কিরোনকে দরে পার্টি অফিসের ভিতরে নিয়ে যাই নয় তো ওরে আরো মারধর করবে তখন গেটের সাথে ঘষা খেয়ে শরীরের চামড়া ছিলে গেছে। ঘটনা ঘটার পর সে বাসায় যায় এরপর রাত ১০টায় হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেয়। তাকে যদি ক্ষুর দিয়ে পোচ দেওয়া হতো সে তখন হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিলো না কেনো। আমার নামে দেওয়া সকল অভিযোগ মিথ্যা। এ বিষয় সিনিয়র নেতৃবৃন্দরা মিমাংসা করে দিবেন।
এ বিষয় রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পুলক চন্দ্র রায় বলেন, ঘটনা শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ থানায় দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।