ঢাকা | নভেম্বর ২, ২০২৫ - ৫:২৩ অপরাহ্ন

শিরোনাম

যুদ্ধবিরতির মধ্যেও গাজায় হামলা, ৭৫ শতাংশ ত্রাণ প্রবেশে বাধা

  • আপডেট: Sunday, November 2, 2025 - 10:51 am

আন্তর্জাতিক ডেস্ক।। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরও ফিলিস্তিনের গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। সর্বশেষ হামলায় অন্তত ৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া প্রতিশ্রুত ত্রাণের মাত্র এক-চতুর্থাংশ গাজায় প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে ইসরায়েল। অর্থাৎ মোট ত্রাণসামগ্রীর প্রায় ৭৫ শতাংশই এখনো আটকে রেখেছে দেশটি।

গাজা কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আলজাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার (১ নভেম্বর) টানা পঞ্চমদিনের মতো গাজায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে ৫ জন নিহত হয়েছেন। যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও খান ইউনিসের আশপাশের এলাকায় হামলা ও ধ্বংসযজ্ঞ অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল।

এদিকে ত্রাণ প্রবেশেও বাধা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। গাজা সরকার জানিয়েছে, ১০ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ৩ হাজার ২০৩টি বাণিজ্যিক ও ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে, অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে মাত্র ১৪৫টি ট্রাক প্রবেশের অনুমতি পেয়েছে, যা যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে নির্ধারিত দৈনিক ৬০০ ট্রাকের মাত্র ২৪ শতাংশ।

শনিবার এক বিবৃতিতে গাজার সরকারি গণমাধ্যম দপ্তর জানায়, ‘ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবে ত্রাণ ও বাণিজ্যিক পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে বাধা দিচ্ছে। এর ফলে ২৪ লাখেরও বেশি মানুষের মানবিক সংকট ভয়াবহভাবে বেড়েছে। আর এর দায় সম্পূর্ণ ইসরায়েলের।’

এই অবস্থায় গাজার পক্ষ থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে- যাতে তারা ‘কোনও শর্ত বা বিধিনিষেধ ছাড়াই’ ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার জন্য ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগ করে।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র ফারহান হক বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ত্রাণ রুট পরিবর্তনের কারণে কার্যক্রম মারাত্মকভাবে সীমিত হয়ে পড়েছে।

তিনি বলেন, “এখন কনভয়গুলোকে মিসরের সীমান্তঘেঁষা ফিলাডেলফি করিডর হয়ে উপকূলীয় সংকীর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা দিয়ে যেতে হচ্ছে, যা যানজট ও নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে ত্রাণ কার্যক্রমকে অত্যন্ত ধীর করে দিয়েছে।” তিনি আরও জানান, ত্রাণ কার্যক্রম কার্যকরভাবে চালু রাখতে অতিরিক্ত সীমান্তপথ ও অভ্যন্তরীণ রুট খোলা অত্যন্ত জরুরি।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২২২ ফিলিস্তিনি নিহত ও ৫৯৪ জন আহত হয়েছেন। অনেক আহত ব্যক্তি পর্যাপ্ত ওষুধ ও চিকিৎসা না পাওয়ায় পরিস্থিতি আরো অবনতি হচ্ছে। হাসপাতালগুলো বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও সার্জিক্যাল সরঞ্জামের ঘাটতিতে কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

গাজা কর্তৃপক্ষ বলছে, যুদ্ধবিরতির শর্ত ভেঙে ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় হতাহতের সংখ্যা ও ত্রাণ প্রবেশে বাধা দেওয়ায় মানবিক সংকট ভয়াবহভাবে বাড়ছে।