মিরসরাই প্রদিনিধি : এ. এইচ. সেলিম।।
মিরসরাইয়ে ব্রোকলি চাষে সফল শিক্ষক লোকমান
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ব্রোকলি চাষে সফল হয়েছেন কলেজশিক্ষক মো. লোকমান হোসেন। ১৪ বছর ধরে তিনি এ সবজি আবাদ করে আসছেন। সবুজ রঙের সবজি হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা আছে। শিক্ষকতার পাশাপাশি সারাবছরই বিভিন্ন সবজি চাষ করেন। অবসরে তিনি জমিতে ব্যস্ত থাকেন।
লোকমান হোসেন মিরসরাইয়ের নিজামপুর সরকারি কলেজে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগে অধ্যাপক পদে নিয়োজিত। তিনি উপজেলার খৈয়াছড়া ইউনিয়নের পূর্ব খৈয়াছড়া গ্রামের মো. শামসুদ্দীনের ছেলে। লোকমান এলাকার অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণা। তার দেখাদেখি অনেকে কৃষিতে মনোনিবেশ করেছেন।
জানা গেছে, শিক্ষকতার পাশাপাশি প্রায় ৩০ বছরে ধরে কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত লোকমান হোসেন। বিভিন্ন মৌসুমে ধান চাষসহ সারাবছর সব ধরনের সবজি চাষ করেন। মৌসুমে ৬-১২ জন শ্রমিক তার জমিতে কাজ করেন। এছাড়া সারাবছর ২ জন শ্রমিক নিয়োজিত আছেন। উৎপাদিত পণ্য স্থানীয় বাজার, চট্টগ্রাম শহরসহ বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়।
পূর্ব খৈয়াছড়া এলাকায় দেখা গেছে, কলেজ ছুটির পরই তিনি বাড়ি হয়ে জমিতে যান। ব্রোকলি ক্ষেতে পরিচর্যা করেন। কয়েকজন শ্রমিক ব্রোকলি উত্তোলন করে বাজারজাত করার জন্য কাজ করছেন। এবার তিনি ২৪ শতক জমিতে ব্রোকলি আবাদ করেছেন। এছাড়া টমেটো, শিম, লাউ, কুমড়া, কপি, বেগুন, বরবটিসহ প্রায় ৩ একর জমিতে সবজি চাষ করেছেন।
শিক্ষক লোকমান হোসেন বলেন, ‘আমি এবার ২৪ শতক জমিতে চাষ করেছি। প্রতি পিস ব্রোকলি ৫০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি হলে বিক্রির উপযোগী হয়। এর আগে আবাদ করেছিলাম আরেকটি জাত, সেটি ৪ কেজি পর্যন্ত হয়েছে। ২৪ শতক জমিতে প্রায় ৩০-৩২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। ২ লাখ টাকার বিক্রির আশা করছি। প্রতি পিস ব্রোকলি ২৫-৩৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।’
তিনি বলেন, ‘শুষ্ক মৌসুমে পানির জন্য কষ্ট হয়। পানির ভালো ব্যবস্থা থাকলে আরও বেশি জমিতে সবজি চাষ করা যেত। কলেজে যাওয়ার আগে ও কলেজ ছুটির পর সারাক্ষণ জমিতে থাকি। এছাড়া কলেজে থাকাকালীন নিয়োজিত শ্রমিকদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয়। উৎপাদিত সবজি স্থানীয় বাজার ও চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন আড়তে নিয়ে যাই। এখানকার বাজারের চেয়ে শহরে চাহিদা বেশি।’
মিরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, ‘লোকমান হোসেন অনেক বছর ধরে এ সবজি চাষ করছেন। এবার আরও কয়েকজনকে প্রদর্শনী দিয়েছি। ব্রোকলিতে অনেক পুষ্টিগুণ আছে। ব্রোকলি সিদ্ধ করেও খাওয়া যায়। খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন দরকার। ধীরে ধীরে এ সবজির চাষ বাড়বে।’