ঢাকা | সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪ - ৬:১৬ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

মিরসরাইয়ে পবিত্র মাহে রমজান ঘিরে বেড়েছে ফলের দাম

  • আপডেট: Monday, March 11, 2024 - 6:38 pm
মিরসরাই প্রতিনিধি: এ.এইচ.সেলিম।।  রমজান আসার আগেই চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার বিভিন্ন বাজারে ফলের দাম বেড়েছে। দাম বেশি হওয়ায় অনেকের সাধ থাকলেও সাধ্য হচ্ছে না ফল কেনার। রমজানে বিদেশি ফলের মধ্যে সর্বোচ্চ চাহিদা থাকে কমলা ও মাল্টার। এর পরে থাকে আপেল ও নাশপাতির। কিন্তু রমজানের আগ মুহূর্তে কদিন আগে থেকেই সব ফলের দাম বেড়েছে। উপজেলার বিভিন্ন বাজারে গিয়ে এ চিত্র দেখা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ ধরে এক কেজি আপেল বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকায়। এক কেজি মাল্টা বিক্রি হয়েছে ৩০০ টাকায়। আঙুর বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪০০-৪২০ টাকায়। প্রকারভেদে কেজিতে দাম বেড়েছে ৩০-৫০ টাকা। এতে করে নিম্নবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারগুলো ফল কিনতে হিমশিম খাচ্ছে।
খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি, আড়তদারদের কাছ থেকে দ্বিগুণ দামে কিনতে হচ্ছে তাদের। আর আড়তদারদের দাবি আমদানিকারকরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।
বারইয়ারহাট পৌর বাজারের পাইকারি ফল বিক্রেতা মো. সাহাব উদ্দিন বলেন, চাহিদা থাকলেও দাম বেশি হওয়ায় অধিকাংশ মানুষ পর্যাপ্ত ফল কিনতে পারে না। ফলে বাজারে অবিক্রিত ফলের পরিমাণ যেমন বাড়ছে, তেমনি অনেক ফল নষ্টও হয়ে যাচ্ছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ফল ব্যবসায়ীদের টিকে থাকাই এখন কঠিন হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, ফল ক্রয়ে সর্বোচ্চ চাহিদা কমেছে স্বল্প আয়ের মানুষদের। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, অল্প আয়ের মানুষরা সাধারণত ভ্যান থেকে ফল কেনেন। আগে যেখানে একজন ভ্যানওয়ালা ৬-৮ ক্যারেট ফল বিক্রি করতো, তারা এখন ২ ক্যারেটও বিক্রি করতে পারছে না।
এদিকে ভোক্তাদের অভিযোগ, সরকার বিদেশি ফলকে বিলাসপণ্য বানিয়ে উচ্চ শুল্ক আহরণের হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে। ফলে মানুষ পরিবারের সদস্যদের প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান দিতে পারছে না।
আমজাদ  হোসেন হিরু  নামের এক ক্রেতা বলেন, আপেল আগে সর্বোচ্চ দেড়শ টাকা কেজি কিনতাম, এখন সেটা ২৮০ টাকার নিচে দেয় না। আবার তিনশ টাকাও চায়। মাল্টা ছিল একশ-দেড়শ টাকার মতো, সেটা এখন ৩০০ টাকা টাকা। কমলা আগে ডজন হিসেবে কিনতাম, এখন সেটা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে আড়াইশ টাকায়। এত দাম দিয়ে মানুষ কীভাবে ফল খাবে। তাই আগে যা কিনতাম ওই টাকায় এখন অর্ধেক পাই।
বারইয়ারহাট পৌর বাজারের ফল ব্যবসায়ী মো. মোবারক হোসেন বলেন, আগে এক কার্টুন (১৮ কেজি) আপেল কিনেছি ২৪০০-২৫০০ টাকায়। এখন তা কিনতে হচ্ছে ৪০০০-৪২০০ টাকায়। একইভাবে কমলা, আঙুর, নাশপতি, আমসহ সকল ফলের দাম বেড়েছে। তারমধ্যে কার্টুনে অনেক সময় ফল নষ্ট থাকে। গত কয়েকদিন ধরে ফল ব্যবসা করে আমরাও লোকসানে আছি। বিশেষ করে মাল্টার দাম অনেক বেড়ে গেছে।
বাজারে ফল কিনতে আসা  মিঠাছরা  এলাকার মো. কবির হোসেন  বলেন, ফলের দাম বেড়ে গেছে দ্বিগুণ। এক কেজি আপেল, এক কেজি মাল্টা নিয়েছি ৫৮০ টাকা দিয়ে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর অনেক কষ্ট হয়ে যায়।
বড়তাকিয়া বাজারের ফলের আড়তদার হেলাল এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, গত ১৫ দিন ধরে ফল ব্যবসায় আমার লোকসান হচ্ছে। আমদানিকারকরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা আনছি চট্টগ্রামের ফল মন্ডির দ্বিতীয় ও তৃতীয় পার্টি থেকে। মূলত লাভবান হচ্ছেন তারা।
বারইয়ারহাট পৌর বাজারের ফলের আড়ত বিছমিল্লাহ ট্রেডার্সের স্বত্তাধিকারি মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, আমরা চট্টগ্রাম ও ফেনী থেকে মাল নিয়ে আসি। সেখান থেকে বেশি টাকা দিয়ে আনছি, তাই খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে আগের চেয়ে বেশি টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে হটাৎ করে মাল্টার দাম অনেক বেড়ে গেছে।