ঢাকা | সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪ - ১০:৪০ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

মালদ্বীপের নতুন পররাষ্ট্রনীতিতে ভারতের দুশ্চিন্তা বেড়েছে

  • আপডেট: Wednesday, March 6, 2024 - 7:16 am

মো:খায়রুল আলম খান : ইউক্রেন যুদ্ধ ও গাজা যুদ্ধ যখন বিশ্ব সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম দখল করে নিয়েছে, ঠিক সেই মুহূর্তে আরব সাগরের এক প্রান্তে ভারত ও মালদ্বীপের মধ্যে অদ্ভুত ধরনের কূটনৈতিক যুদ্ধ চলছে। এই দ্বন্দ্ব স্পষ্টতই ভারতের কৌশলগত স্বার্থের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারত ও মালদ্বীপ এমনিতে কোনো দিন প্রতিপক্ষ ছিল না। ১২ লাখ বর্গমাইলের বিশাল ভারত ১১৫ বর্গমাইলের মালদ্বীপের চেয়ে ১১ হাজার গুণ বড়। একদিকে ভারতের জনসংখ্যা ১৪০ কোটির বেশি। অন্যদিকে মালদ্বীপের জনসংখ্যা পাঁচ লাখের মতো।

উপরন্তু মালদ্বীপ সব ধরনের সংকটে সহায়তার জন্য নিকটতম প্রতিবেশী ভারতের ওপর বরাবরই নির্ভরশীল ছিল। ১৯৮৮ সালে শ্রীলঙ্কার ভাড়াটে সেনারা মালদ্বীপে যখন অভ্যুত্থানের চেষ্টা করেছিলেন, তখন সেই অভ্যুত্থান রুখে দিতে ভারতীয় সেনারা প্যারাসুট নিয়ে মালদ্বীপে নেমেছিলেন। ২০০৪ সালে এই দ্বীপপুঞ্জে সুনামি আঘাত হানার পর সেখানে ভারতীয় জাহাজ নিয়ে উদ্ধারকর্মীরা মালদ্বীপের জনগণকে উদ্ধার করার জন্য এগিয়ে এসেছিলেন। মালদ্বীপকে ভারতের ধারাবাহিক সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গভীরতাকেই প্রতিফলিত করে।

মালদ্বীপ ১৯৬৫ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনতা লাভ করার পর তাকে সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রথম যে দেশগুলো স্বীকৃতি দিয়েছিল, ভারত তাদের অন্যতম। এর পর থেকেই ভারত ও মালদ্বীপ একটি বহুমুখী সম্পর্ক গড়ে তুলেছে, যা কৌশলগত অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবে পরস্পরের সঙ্গে সম্পৃক্ত। দুই দেশের মধ্যে ভাগাভাগি করা সামুদ্রিক সীমান্ত থাকায় ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিরাপত্তা ধরে রাখতে মালদ্বীপের কাছে বরাবরই ভারতের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই দুটি দেশই দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং সাউথ এশিয়া ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্টে স্বাক্ষরকারী দেশ।

একই সঙ্গে মালদ্বীপের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অংশীদার হিসেবে ভারত দেশটিকে ব্যাপক সাহায্য দিয়ে আসছে; উন্নয়ন সহযোগিতা দিচ্ছে এবং বাণিজ্য চুক্তি অনুসরণ করে আসছে। এ ছাড়া দুই দেশের মানুষের জাতিগত, ভাষাগত, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় যোগসূত্র রয়েছে। সেই বিবেচনা থেকে যে কেউ আশা করতে পারে, ভারত ও মালদ্বীপের মধ্যে বন্ধুত্ব ও বোঝাপড়ার একটা গভীর সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, যখন রাজনীতির প্রসঙ্গ আসে, তখন পারস্পরিক কৃতজ্ঞতার বিষয়টির চেয়ে পারস্পরিক অসন্তোষের বিষয়টিই বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।