ঢাকা | আগস্ট ২৩, ২০২৫ - ২:১২ অপরাহ্ন

শিরোনাম

মারমা স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণ : সালিশি করে ধামাচাপা, পিসিসিপির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ

  • আপডেট: Wednesday, August 20, 2025 - 10:28 am
আহমদ বিলাল খান।। বান্দরবানের রুমা উপজেলায় পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। তার স্বজাতির (মারমা) পাঁচ যুবক মিলে এ অপকর্ম করেছে। এ ঘটনায় তাদেরকে বিচারের আওতায় না এনে নামমাত্র জরিমানা করে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়া হয়েছেন। ফলে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি)।
আজ বুধবার সংগঠনের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন কায়েস ও সাধারণ সম্পাদক মো. হাবীব আজমের পাঠানো এক বিবৃতিতে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।
বিবৃতিতে বৱা হয়, বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলার পাইন্দু হেডম্যান পাড়ায় মারমা শিক্ষার্থীকে নির্মম ভাবে ধর্ষণ করে তারই স্বজাতিরা, ধর্ষণকারীরা হলো- রুমা উপজেলার পাইন্দু হেডম্যান পাড়ার বাসিন্দা ক্যাহা ওয়াইং মারমা, ক্যওয়ং সাই মারমা, চহাই মারমা, উহাই সিং মারমা এবং ক্য সাই ওয়ং মারমা।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিবারের বরাত দিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, চলতি মাসের শুরুতে পাইন্দু ইউনিয়নের হেডম্যান পাড়ার বাসিন্দা রাংমেশে মারমা’র ছেলে শৈহাইনু মার্মা প্রথমে ছাত্রীটিকে একা পেয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করে। পরে তার সহপাঠী ও বন্ধুদের মাধ্যমে ঘটনাটি জানাজানি হলে শৈহাইনু’র চার বন্ধু বন্ধু ক্যায়া ওয়াইং, ক্য ওয়ং সাই, চহাই, উহাই সিং ও ক্য সাই ওয়ং ভয়ভীতি দেখিয়ে পর্যায়ক্রমে একই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে। নির্যাতন সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেলে শেষ পর্যন্ত অসহায় কিশোরী ঘটনাটি পরিবারকে জানায়।
এদিকে ১৯ আগস্ট পাইন্দু হেডম্যান পাড়ায় কারবারী থোয়াইসা মার্মার সভাপতিত্বে এক সালিশ বসে। সেখানে পাইন্দু ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গংবাসে মার্মা এবং পাইন্দু মৌজার হেডম্যান মংচউ মার্মাগং-এর নেতৃত্বে অভিযুক্তদের মোটে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। যদিও জরিমানার টাকা হাতে পায়নি ভুক্তভোগী পরিবার।
অন্যদিকে ভুক্তভোগী পরিবারকে আইনি পদক্ষেপ নিতে পারে সেজন্য পাড়ায় আটকে রাখা হয়েছে। পরে বিষয়টি বিভিন্ন অনলাইন সোস্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচার হলে বান্দরবানের পুলিশ সুপারে নজর আসে। তিনি রুমা উপজেলায় অভিযান পরিচালনা করে  তিনজনকে আটক করেন।
এদিকে পুলিশ সুপার ও রুমা থানার পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন পিসিসিপি নেতা-কর্মীরা। এছাড়া আরো দুই জন আসামীকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবী জানান তারা।
পিসিসিপি কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সাধারণ সম্পাদক মো. হাবীব আজম জানান, বৈষম্য সব যায়গায় বিরাজমান।  না হলে এতো বড় একটি ঘটনা এইভাবে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করার সাহস হতো না। নিজেদের বিষয় বলে কি ন্যায়-অন্যায়ের বিচার হবে না? বাঙালির বিষয় হলে তো সবাই লেখালেখি- মিছিল- বিক্ষোভ সমাবেশ করতেন। আসলে কোন বাঙালি বা পাহাড়ি বিচার করা উচিত না। যেটা অন্যায়, সেটার জন্য দোষীকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ধর্ষণ একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ধরনের অপরাধ কখনো সামাজিক সালিশে টাকা দিয়ে নিষ্পত্তি হতে পারে না। এতে অপরাধীরা আরো সাহস পায়। যা ভবিষ্যতের জন্য ভয়ানক। তাই বাকি দুজনকে গ্রেফতার করে সব আসামিকে আইনের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হোক।