ঢাকা | আগস্ট ৫, ২০২৫ - ৪:০১ অপরাহ্ন

শিরোনাম

মানুষের বুকে গুলি চালিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল ফ্যাসিবাদী সরকার: প্রধান উপদেষ্টা

  • আপডেট: Tuesday, August 5, 2025 - 7:09 am

জগো জনতা অনলাইন।। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দেশের মানুষের বুকে গুলি চালিয়ে শেষ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল ফ্যাসিবাদী সরকার। বিগত ১৬ বছরে মাফিয়াতন্ত্র কায়েম করা হয়েছিল। কোটা পদ্ধতি ছিল দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির হাতিয়ার।

মঙ্গলবার সকালে ঢাকা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি দেওয়া বক্তব্যে এই মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টে গুলিবিদ্ধ আহতদের চিকিৎসা নিতে দেওয়া হয়নি এবং তৎকালীন সরকার হাসপাতালগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে, যাতে আহদের চিকিৎসা দেওয়া না হয়।

জুলাই আগস্ট আন্দোলনে আহত নিহতদের স্মরণ করে ড. ইউনূস বলেন, শহীদ পরিবার এবং আহতদের আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে। গুরুতর আহতদের বিদেশে চিকিৎসা করানো হয়েছে।

তিনি বলেন, ৫ আগস্ট শুধু একটা বিশেষ দিবস নয়, এটি একটি প্রতিজ্ঞা, গণজাগরণের উপাখ্যান এবং ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে জাতির পুনর্জন্মের দিন। আজ আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের। যাদের কারণে আত্মত্যাগের কারণে আমরা আমরা পেয়েছি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ১৯৭১ সালে সাম্য সামাজিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এদেশের জনগণ সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলো। লাখো প্রাণের বিনিময়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। কিন্তু স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দি পরেও এদেশের মানুষ সুবিচার ও গণতন্ত্র থেকে বঞ্চিত হয়েছে, বৈষম্যের শিকার হয়েছে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ২০২৪ সালের উত্তাল জুলাই ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসের এক সংকটময় অধ্যায়। ১৬ বছরের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। এদেশের এই বিপুল সংখ্যক তরুণরা ১৬ বছর ধরে ক্রমাগত হতাশায় নিমজ্জিত ছিল। ভালো ফলাফল করেও চাকরির জন্য ক্ষমতাসীনদের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেছে। চাকরিকে ঘিরে তৈরি হয়েছিল দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি আর তদবির বাণিজ্য। যে তরুণ ঘুষ দিতে পারেনি এলাকার মাফিয়াদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলতে পারেনি, তার চাকরি হয়নি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি, যেটা মূলত ছিল দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির আরেকটা হাতিয়ার। এর বিরুদ্ধে তরুণ সমাজ দীর্ঘদিন প্রতিবাদ বিক্ষোভ করলেও ফ্যাসিবাদী শাসকের টনক নড়েনি। দীর্ঘদিন এই সেক্টরে মাফিয়াতন্ত্র কায়েম করে একটি সুবিধাভোগী শ্রেণি তৈরি করা হয়েছিল। যারা আর্থিক বা অন্য সুবিধার বিনিময়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলবে-কাজ করবে। স্বৈরাচারের পক্ষের সঙ্গী হলেই তার চাকরি হবে।

এসময় প্রধান উপদেষ্টা একটি গণতান্ত্রিক, মানবিক ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান।